বছরের শেষ সূর্যাস্তকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করতে ৩১ ডিসেম্বর লাখো পর্যটকের পদচারণায় মুখরিখ হয় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।
শীতের হিমেল হাওয়ায় চারপাশ কুয়াশাচ্ছন্ন। সামনে ঢেউয়ের গর্জন। এরই মাঝে ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে যায় ২০২২ সালের শেষ সূর্য।
অনেক প্রাপ্তি, হতাশা, ক্লান্তি ও নানা ঘটনা আর অঘটনকে ছাপিয়ে শেষ হলো আরও একটি বছর।
সমুদ্রের পানিতে অস্তমিত সূর্যের অপরূপ রোমাঞ্চকর মুহূর্ত উপভোগ করেছেন পর্যটকরা।
আরও পড়ুন: টানা তিনদিনের ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল
উচ্ছ্বসিত পর্যটক সহ স্থানীয় মানুষ ২০২২ সালকে সূর্যাস্তের মাধ্যমে বিদায় জানিয়েছেন। আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব, প্রিয় মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সমুদ্র সৈকতে ভিড় করেন। পড়ন্ত বিকালে বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে সৈকতের লাবনী পয়েন্ট থেকে কলাতলী পর্যন্ত তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না।
কক্সবাজারের সূর্যাস্তের দৃশ্য ছবির ফ্রেমে আটকে রেখেছে পরিবার পরিজন প্রিয় জনকে সঙ্গে নিয়ে। এছাড়া কক্সবাজারের সৈকতে উপস্থিত পর্যটকরা হাত নেড়ে বিদায় বছরের শেষ সূর্যকে।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক দম্পতি মাসুদ চৌধুরী ও সামান্তা রহমান জানান, ২০২২ সালে জীবনের কত স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ২০২২ সালের সূর্যাস্তের সঙ্গে হতাশা, দুঃখ ও না পাওয়ার বেদনাকে বিসর্জন দিতে এবং আনন্দ উল্লাসে ২০২৩ সালকে বরণ করবো কক্সবাজারে ভ্রমনের মাধ্যমে।
নরসিংদী থেকে আগত পর্যটক নেওয়াজ আলী বলেন, তিন বন্ধু মিলে কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছেন।
প্রাকৃতির সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই কক্সবাজার। এখানকার বৈচিত্র্যময় সমুদ্রের বিশালতা ও প্রশান্তি মন টানে বার বার।
তা এই শীত মৌসুমে এখানে তেমন বেশি শীত নেই। তাই এখানে ভ্রমনের মজাটাই আলাদা।
শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়াতে পযর্টন নগরী কক্সবাজারে বেশ কয়েকদিন ধরেই পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত ছিলো।
সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে গোধূলি বেলার সূর্যাস্ত দেখে বিমোহিত পর্যটকরা।
দর্শনীয় স্থানসহ পর্যটনমুখী ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চোখে পরছে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়।
সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি শহরের বার্মিজ মার্কেট, হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়াটেক সহ অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলোতে রয়েছে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়।
হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ২ জানুয়ারি পর্যন্ত হোটেলের ৯০ ভাগ রুম বুকিং রয়েছে। এছাড়া পর্যটকদের আতিথেয়তায় ব্যস্ত সময় পার করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা, বীচ কর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, পর্যটকদের আগমনে কক্সবাজার যেন পরিণত হয়েছে উৎসবের নগরীতে।
জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ জানান, বিজয় দিবস, বড়দিন, ইংরেজি নববর্ষের ছুটির আনন্দ উপভোগ করতে দেশি-বিদেশি প্রকৃতি আর সমুদ্রপ্রেমী মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত।
প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ইংরেজি ২০২২ সালকে স্মৃতিময় করে রাখতে আর ২০২৩ সালকে স্বগত জানাতে কক্সবাজার সৈকতে জড়ো হয়েছে লাখো পর্যটক।
তাদের সেবায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান জানান, কক্সবাজারের প্রত্যেক পর্যটন জোনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
এছাড়া ভ্রাম্যমান পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে কক্সবাজারে পর্যটকদের ভিড়