কিন্তু মঙ্গলবার সকালের অগ্নিকাণ্ডে যেন সব শেষ। নিমিষেই বিয়ে বাড়ি পরিণত হলো শ্মশানে। আগুনে পুড়ে মারা যান একই পরিবারের পাঁচজন। মৌলভীবাজার শহরস্থ এম সাইফুর রহমান সড়কের দ্বিতল ভবনের এ অগ্নিকাণ্ডের পর এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
আগুন লাগা এই দোতলা ভবনের নিচে ছিল দোকান এবং এর ওপরে পরিবার নিয়ে বহুদিন ধরে থাকতেন সুভাষ রায়। গত ২২ জানুয়ারি মৌলভীবাজার শহরের ব্যবসায়ী সুভাষ রায়ের মেয়ে পিংকির বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
গত সোমবার ছিল বৌভাত অনুষ্ঠান। বিয়ে উপলক্ষে স্বজনরা তাদের বাড়িতে আসেন। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্তই সুভাষ রায়ের বাসা ছিল অতিথিদের কল-কাকলিতে মুখর। কিন্তু সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গ্যাসের লাইন থেকে আগুন বদলে দিল সুভাষ রায়ের বাসার দৃশ্যপট।
অগ্নিকাণ্ডে নিহতরা হলেন- সুভাষ রায় (৬০), সুভাষ রায়ের মেয়ে পিয়া রায় (১৪), প্রণয় রায়ের স্ত্রী দিপ্তী রায় (৪৫), সজল রায়ের স্ত্রী দীপা রায় ও সজল রায়ের আড়াই বছর বয়সী কন্যাশিশু বৈশাখী রায়।
মৌলভীবাজার সদর থানা ও মৌলভীবাজার ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সূত্র জানায়, আগুন লাগার খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে শ্রীমঙ্গলের আরও তিনটি ইউনিট সেখানে যোগ দেয়। দুপুর ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শহরের সাইফুর রহমান রোডের পিংকি সু স্টোরে আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে। এ সময় দোকানের ওপরের বাসায় সবাই আটকা পড়ে।
মৌলভীবাজার ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ হারুন জানান, তিন ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্তণে আনে ফায়ার সার্ভিস।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে মৃতদেহ সৎকারের জন্য এক লাখ টাকা করে সহায়তা প্রদান করেছে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মল্লিকা দে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া সুলতানা জানান, নিহতদের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।