সিলেটের দুই কিশোরীকে কক্সবাজারে নিয়ে বিক্রির অভিযোগে স্বামী-স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) কিশোরীর মা শাহপরান থানায় মামলা করলে সোমবার কিশোরীদের প্রতিবেশী শাহনাজ ও তার স্বামী মুরাদ আহমেদ রাজুকে গ্রেপ্তার করে শাহপরান থানা পুলিশ।
এ সময় পুলিশ জানায়, ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে শাহনাজ ও তার স্বামী দুই কিশোরীকে কক্সবাজারে পাঠান। সেখানে তাদের ছেলে ইমন হোসেন ও মেয়ে পিংকি ওরফে বৃষ্টি মিলে ভিকটিমদের কক্সবাজারে দুটি হোটেলে ১৫ দিন আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে।
পরে ওই দুই কিশোরী সিলেটে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। তাদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে(ওসিসি) ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে রবিবার দিবাগত রাতে শাহপরান থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করেন। পরে সোমবার ভোরে অভিযান চালিয়ে পীরের বাজার টিকেরপাড়া এলাকা থেকে মামলার প্রধান আসামি শাহনাজ ও রাজুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সিলেট মহানগর পুলিশ অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘গ্রেপ্তার স্বামী-স্ত্রীকে সোমবার আদালতে তোলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: সাভারে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নারীসহ নিহত ৩
ওই দুই কিশোরী জানায়, তাদের পাশের বাড়ির এক মহিলা তাদের কক্সবাজারে গার্মেন্টসে কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বললে তারা রাজি হন। গত ৭ এপ্রিল তারা ওই মহিলার সঙ্গে কক্সবাজারে গেলে প্রথমে তার ছেলে ইমনের বাসায় উঠেন। পরদিন তাদের গার্মেন্টসে নেওয়ার নাম করে কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে ইমন তাদেরকে সেখানে রেখে চলে আসে। তখন তারা এখানে কেন জানতে চাইলে হোটেল স্টাফরা তাদেরকে একটি কক্ষে নিয়ে বসিয়ে রাখে। তারপর সেখানে টানা ১৪ দিন তাদের উপর চালানো হয় পাশবিক নির্যাতন। ওই ১৪ দিন আমরা আমাদের পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারিনি। আমাদেরকে ফোন হাতে দেওয়া হতোনা। দিনের পর দিন হোটেলে আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে।
এদিকে, মেয়েদের খোঁজ না পেয়ে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে গত ৯ এপ্রিল শাহপরাণ থানায় জিডি করেন অভিভাবকরা। বিষয়টি জানতে পেরে ওই মহিলা তাদেরকে সিলেটে এসে জিডি তুলে নিতে বলে ও তার ছেলেকে বলে তাদের ছেড়ে দিতে। তখন ইমন তাদের ছেড়ে দিয়ে বলে ‘আর কখনো কক্সবাজারে আসবি না’। এরপর ২৪ এপ্রিল তারা সিলেটে ফিরে আসে।
২৪ এপ্রিল বিষয়টি ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা শাহপরান থানায় জানালে ওই দুই কিশোরীকে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী হাসপাতালের ওসিসিতে পাঠানো হয়।