ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে সুন্দরবনে প্রাণ হারিয়েছে ২৬টি হরিণ। আর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে আরও ১৩টি হরিণ। এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে কাজ শুরু করেছে বন বিভাগ।
এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ে গাছপালার যেমন ক্ষতি হয়েছে, তেমনি জলোচ্ছ্বাসে বহু বন্যপ্রাণীও ভেসে গেছে। দুইদিন ধরে জোয়ারের পানিতে সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশ ডুবে যাওয়ায় প্রাণ বাঁচাতে বন্যপ্রাণীরা এদিক থেকে সেদিকে ছুটাছুটি করতে থাকে।
মঙ্গলবার (২৮ মে) সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের কটকা জামতলা এলাকা থেকে ২৬টি মৃত হরিণ উদ্ধারের পাশাপাশি আরও ১৩টি জীবিত হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে বগুড়ায় নিয়ে যাওয়ার সময় ৪টি হরিণের মৃত্যু
এছাড়া বনের মধ্যে থাকা ৮০টি পুকুরে লবণ পানি ঢোকায় স্বাদু পানির উৎস নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতি হয়েছে বন বিভাগের বিভিন্ন কার্যালয়ের অবকাঠামো।
বনজ সম্পদ ও বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানতে বন বিভাগের সদস্যরা সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় অনুসন্ধান করছে। তবে সুন্দরবন বিভাগ এখনও পর্যন্ত জানাতে পারেনি রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রবিবার ও সোমবার দিনে ও রাতে নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারে চেয়ে ৮ থেকে ১০ ফুট পানি বৃদ্ধি পায়। জোয়ারের পানিতে সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশ প্লাবিত হয়। বনের মধ্যে দিয়ে ৬ থেকে ৭ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়।
তিনি বলেন, পানিতে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীরা ছুটাছুটি করতে থাকে। পানিতে ভেসে যাওয়ার সময় বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৩টি জীবিত হরিণ উদ্ধার করে সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
মিহির কুমার দো আরও বলেন, বন বিভাগের সদস্যরা মৃত হরিণগুলোকে মাটিচাপা দিয়েছে। বনজ সম্পদ এবং বন্যপ্রাণীর কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা জানতে বন বিভাগের সদস্যরা কাজ করছেন। তবে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে এমন আশঙ্কা ওই বন কর্মকর্তার।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, পানির কারণে বনের বিভিন্ন এলাকায় হরিণ শাবক মারা গেছে। বন বিভাগের সদস্যরা বনের বিভিন্ন এলাকায় মৃত অবস্থায় হরিণ শাবক দেখতে পাচ্ছে। হরিণ মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাগর এখনও উত্তাল থাকায় বন বিভাগের সদস্যরা ঠিকভাবে সব কাজ করতে পারছেন না বলে জানান তিনি।