খেলাধুলা
ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব: বৃহস্পতিবার নিজমাঠে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ
২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপের এশিয়ান বাছাইপর্বে বাংলাদেশের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে ঢাকায় অস্ট্রেলিয়া ফুটবল দল।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকাল পৌনে ৪টায় রাজধানীর বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় ম্যাচটি মাঠে গড়াবে।
মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুর সোয়া ১২টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় অজিরা।
বৃহস্পতিবার ম্যাচ শেষেই সন্ধ্যায় দেশে ফিরবে ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার কাছে ১-২ গোলে হেরে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নেওয়া অস্ট্রেলিয়া দলটি।
বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টায় ম্যাচ ভেন্যু বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় অনুশীলন করবে সফরকারী অজি দল।
গত বছরের নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় চলমান বাছাইপর্বে নিজেদের হোম ম্যাচে বাংলাদেশকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
এর আগে ২০১৫ সালে ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে অস্ট্রেলিয়া দুইবার বাংলাদেশের মুখোমুখি হয়েছিল এবং বাংলাদেশকে যথাক্রমে ৪-০ এবং ৫-০ গোলে হারিয়েছিল।
গ্রুপের চার ম্যাচ শেষে পুরো ১২ পয়েন্ট নিয়ে অল জয়ের রেকর্ড নিয়ে পরের রাউন্ডে কোয়ালিফাই করার পাশাপাশি গ্রুপ টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিন দুটি জয়, একটি ড্র এবং একটি পরাজয় নিয়ে সাত পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে।
দুই ড্র ও দুই পরাজয়ে দুই পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে লেবানন। আর ঢাকায় নিজেদের হোম ম্যাচে লেবাননের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে চার ম্যাচে এক পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে আছে বাংলাদেশ।
আগামী ১১ জুন কাতারের দোহার আল সাদ ক্লাব স্টেডিয়ামে 'আই' গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে লেবাননের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
ম্যাচটি শুরু হবে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় এবং বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায়।
এর আগে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাদের অ্যাওয়ে ম্যাচে ০-৭ গোলে পরাজিত হয়, হোম ম্যাচে আরব দেশ লেবাননের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে, কুয়েতে নিজেদের অ্যাওয়ে ম্যাচে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ০-৫ গোলে পরাজিত হয় এবং ঢাকায় হোম ম্যাচে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে ০-১ গোলে পরাজিত হয়।
৫৭২ দিন আগে
টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত স্কটল্যান্ডের
২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বর্তম্যান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কিছুক্ষণ পর মাঠে নামছে স্কটল্যান্ড।
বার্বাডোসের ব্রিজটাউনে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্কটিশ অধিনায়ক রিচি বেরিংটন।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এটি স্কটল্যান্ডের প্রথম আন্তর্জাতিক টে-টোয়েন্টি ম্যাচ, তাও আবার বিশ্বকাপে।
দুই দলের সর্বশেষ দেখা হয় ২০১৮ সালে একদিনের ম্যাচে। ওই ম্যাচে ৩৭১ রান করেও মাত্র ৬ রানে ইংল্যান্ডকে হারায় যুক্তরাজ্যের অপর এই দেশটি। তাই বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হারাতে শেষ ওই ম্যাচটিই প্রেরণা জোগাবে স্কটল্যান্ডকে।
আরও পড়ুন: জিততে ঘাম ঝরল দক্ষিণ আফ্রিকার
অন্যদিকে, চোট কাটিয়ে দলে ফিরেই গা গরমের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে দারুণ ফর্মে ফেরা জোফরা আর্চার ইংল্যান্ডের শক্তি বাড়িয়েছে। এছাড়া একাধিক খেলোয়াড় আইপিএল খেলে আসায় পুরো স্কোয়াডই ফর্মে থাকার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
টসের পর স্কটিশ অধিনায়ক বলেন, ‘উইকেট শুষ্ক দেখা যাচ্ছে, যা পরে বদলে যেতে পারে। তবে আমাদের দ্রুত (পরিস্থিতির সঙ্গে) মানিয়ে নিতে হবে। আগে ব্যাট করে একটি ভালো লক্ষ্য দাঁড় করাতে চাই। দল হিসেবেই আমরা চ্যালেঞ্জটি নিয়েছি।’
জশ বাটলার বলেন, ‘আর্চারকে (দলে) পেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। সম্প্রতি সে ভালো করেছে। দলে একজন অতিরিক্ত পেসার নিয়েছি। (মার্ক) উড ও (ক্রিস) জর্ডান বোলিংয়ে থাকছে।’
ইংল্যান্ড দল: জস বাটলার (অধিনায়ক), ফিলিপ সল্ট, উইল জ্যাকস, জনি বেয়ারস্টো, হ্যারি ব্রুক, মঈন আলী, লিয়াম লিভিংস্টোন, ক্রিস জর্ডান, জোফরা আর্চার, আদিল রশিদ, মার্ক উড।
স্কটল্যান্ড দল: জর্জ মুনসি, মাইকেল জোন্স, ব্রেন্ডন ম্যাকমুলেন, রিচি বেরিংটন (অধিনায়ক), ম্যাথিউ ক্রস, মাইকেল লিস্ক, ক্রিস গ্রিভস, মার্ক ওয়াট, ক্রিস্টোফার সোল, ব্র্যাড হুইল, ব্র্যাডলি কুরি।
৫৭২ দিন আগে
নিউ ইয়র্কের স্টেডিয়ামে পুলিশের স্নাইপার!
নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতরাতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ম্যাচ। এটি এই স্টেডিয়ামেও বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ ছিল। ৩৪ হাজর দর্শক ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়ামে নিরাপত্তার খাতিরে স্নাইপার নিযুক্ত করেছিল নাসাউ কাউন্টি পুলিশ।
জঙ্গি হামলার আশঙ্কা থেকেই এই স্টেডিয়ামে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানিয়েছে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা আইসিসি।
আরও পড়ুন: জিততে ঘাম ঝরল দক্ষিণ আফ্রিকার
বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগে জঙ্গিগোষ্ঠী আইসিস এই স্টেডিয়ামে হামলার হুমকি দেয়। বন্দুক নিয়ে হুডি পরা এক ব্যক্তির ছবি-সংবলিত একটি পোস্টার প্রকাশ করে গোষ্ঠীটি। পোস্টারে লেখা ছিল, ‘আপনি ম্যাচের জন্য অপেক্ষা করছেন… এবং আমরা আপনার জন্য অপেক্ষা করছি।’
মূলত আগামী ৯ জুন এই স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে পাকিস্তান। ওই ম্যাচে হামলার হুমকি দিয়ে পোস্টার প্রকাশ করে আইসিস। পোস্টারে ড্রোন ও ডিনামাইটও দেখা গেছে।
আইসিসের হুমকির পর নড়েচেড়ে বসেছে নাসাউ কাউন্টি পুলিশ বিভাগ। ৩ থেকে ৯ জুনের মধ্যে লং আইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সব ম্যাচের জন্যই ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তারা।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্টেডিয়ামগুলোতে সোয়াট (SWAT) টিম কাজ করবে। তাদের সঙ্গে থাকবে বিষেশায়িত স্নাইপাররা। এছাড়া সোদা পোশাকে পুলিশ কর্মকর্তারাও মাঠের ভেতরে অবস্থান করবেন।
আরও পড়ুন: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ‘গেম চেঞ্জার’ হতে পারেন যারা
এ বিষয়ে আইসিসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘টুর্নামেন্ট চলাকালে প্রত্যেকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এটি বাস্তবায়ন করতে আমাদের ব্যাপক ও শক্তিশালী নিরাপত্তা পরিকল্পনা রয়েছে। আয়োজক দেশের (নিরাপত্তা) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা কাজ করছি।’
ড্রোন হামলার আশঙ্কায় মাঠটির আশপাশের পার্কের জায়গা ম্যাচের দিনগুলোতে জনসাধারণের জন্য বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে নাসাউ কাউন্টি পুলিশ। এছাড়া ম্যাচের দিন স্টেডিয়ামে প্রবেশের আগে দর্শকদের ব্যাগে তল্লাশি চালানো করা হবে এবং বিমানবন্দরের মতো স্ক্যানারের ভেতর দিয়ে তাদের গ্যালারিতে প্রবেশ করতে হবে।
৫৭৩ দিন আগে
জিততে ঘাম ঝরল দক্ষিণ আফ্রিকার
লক্ষ্য মাত্র ৭৮ রান। টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এটি একেবারেই মামুলি লক্ষ্য। তবে তা টপকাতে দারুণ ভুগতে হলো দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
হ্যাঁ, ৬ উইকেটের জয় তারা পেয়েছে বটে! তবে ৭৮টি রান করতে গিয়ে তাদের ঘাম ছুটে গেছে। খেলতে হয়েছে ১৬.২ ওভার পর্যন্ত।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চতুর্থ ও নিজেদের প্রথম ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা। তবে প্রোটিয়া বোলিং তাণ্ডবে মাত্র ৭৭ রানেই অলআউট হয় তারা। জবাবে খেলতে নেমে ১৬.২ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২০ রান করেন কুইন্টন ডি কক। এছাড়া হাইনরিখ ক্লাসেন অপরাজিত ১৯ রান।
শ্রীলঙ্কার হয়ে দুই উইকেট শিকার করেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।
আরও পড়ুন: প্রোটিয়া বোলিং তাণ্ডবে লন্ডভন্ড শ্রীলঙ্কা
শ্রীলঙ্কা যেখানে প্রথম ইনিংস শেষ করে, সেখান থেকেই যেন দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ইনিংসের প্রথম চারটি বল ডট যাওয়ার পর চার মেরে ওভার শেষ করেন রিজা হেন্ড্রিকস। তবে পরের ওভারের তৃতীয় বলেই তাকে ফেরান নুয়ান তুশারা। ১০ রানে প্রথম উইকেট হারিয়ে আরও সাবধানী ক্রিকেট খেলতে থাকেন কুইন্টন ডি কক ও এইডেন মার্করাম।
কয়েক বল দেখেশুনে খেলে যেই হাত খোলা শুরু করেন মার্করাম, প্রায় তখনই আউট হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে।
পঞ্চম ওভারে পাথুম নিশাঙ্কার হাতে বল তুলে দেন হাসারাঙ্গা। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান তিনি দেন দ্বিতীয় বলেই। অন-ড্রাইভ করতে গিয়ে স্লিপে থাকা কামিন্দু মেন্ডিসের তালুবন্দি হয়ে আউট হন মার্করাম। ফেরার আগে ১৪ বলে এক ছক্কায় ১২ রান করেন প্রোটিয়া অধিনায়ক।
ওভারের পরের বলটিতেও কট বিহাইন্ডের সম্ভাবনা জাগে। তবে শ্রীলঙ্কা রিভিউ নিলে দেখা যায় ব্যাটে নয়, ট্রিস্টান স্ট্রাবসের উরুতে সামান্য স্পর্শ করেছে বল। ফলে রিভিউ হারায় শ্রীলঙ্কা। একই ওভারের শেষ বলে সত্যি সত্যিই কট বিহাইন্ডের সুযোগ তৈরি হয়। তবে ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও বল গ্লাভসে রাখতে ব্যর্থ হন কুশল মেন্ডিস। এর ফলে জীবন পান স্টাবস, আর উইকেটসহ মেইডেন ওভার নেন নিশাঙ্কা।
এরপর উইকেটের সামনে দেওয়াল তুলে দেন ডি কক ও স্টাবস। দলের জয়ের ভিত গড়ে দিয়ে ৫১ ও ৫৮ রানে এ দুই ব্যাটার আউট হলে বাকি কাজটুকু সারেন ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার। ১৬.২তম ওভারে চার মেরে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছান মিলার।
তবে পুরো ইনিংসজুড়ে অসাধারণ বোলিংয়ের পসরা সাজান লঙ্কান বোলাররা। একের পর এক তাক লাগানো ডেলিভারিতে দর্শকদের মনোযোগ ধরে রাখেন শেষ পর্যন্ত। তবে উইকেট তুলতে ব্যর্থ হওয়ায় টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের সর্বনিম্ন স্কোর করেও জয়বঞ্চিত হয়েছে তারা।
৫৭৩ দিন আগে
প্রোটিয়া বোলিং তাণ্ডবে লন্ডভন্ড শ্রীলঙ্কা
পিচ বিশ্লেষকদের দাবি ছিল স্লো উইকেট। তবে গতির বাজিতে শ্রীলঙ্কার ব্যাটারদের মাত করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা। তাদের বোলিং আক্রমণের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছেন হাসারাঙ্গা অ্যান্ড কোং।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চতুর্থ ও নিজেদের প্রথম ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা। তবে প্রোটিয়া বোলিং তাণ্ডবে মাত্র ৭৭ রানেই অলআউট হয়ে গেছে তারা। ফলে ৭৮ রানের লক্ষ্য পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার।
এদিন দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিংয়ের সামনে শ্রীলঙ্কার কোনো ব্যাটারই প্রতিরোধ গড়তে পারেননি।
ইনিংসের শুরু থেকে দেখেশুনে খেলতে থাকেন শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের দানবীয় গতি সামলে রান বের করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল তাদের। এরই মধ্যে চতুর্থ ওভারে বিশ্বকাপ দিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হওয়া অটনিয়েল বার্টম্যানের হাতে বল তুলে দেন মার্করাম। ক্যারিয়ারের প্রথম বলেই সাফ্যলের দেখা পান তিনি।
বার্টম্যানের প্রথম ডেলিভারিতে সজোরে ব্যাট চালিয়ে বল সীমানা ছাড়া করতে চেয়েছিলেন নিশাঙ্কা। তবে উপরের কানায় লেগে তা ডিপ থার্ড ম্যান অঞ্চলে চলে যায়। সেখান থেকে বলটি তালুবন্দি করেন ক্লাসেন। নিশাঙ্কা ৮ বল মোকাবিলা করে ৩ রান করে ফিরলে ১৩ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।
এরপর শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা উইকেটে কিছুক্ষণ থিতু হলেও অষ্টম ওভারের শেষ বলে নিজের প্রথম ওভারে সাফল্যের দেখা পান নর্টকিয়াও। প্যাডের দিকে আসা ডেলিভারিটি ঘুরিয়ে স্কয়ার অঞ্চল দিয়ে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে সীমানায় রিজা হেনড্রিকসের হাতে ধরা পড়েন কামিন্দু মেন্ডিস।
আরও পড়ুন: যেসব ভেন্যুতে আয়োজিত হচ্ছে ২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপ
পরের ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে হাসারাঙ্গা ও সামারাবিক্রমাকে যথাক্রমে স্ট্যাম্পড ও বোল্ড করে শ্রীলঙ্কার টপ অর্ডার প্যাভিলিয়নে পাঠান কেশব মহারাজ। মাঝখানে এক ওভার গেলে দশম ওভারের শেষ বলে কুশল মেন্ডিসের উইকেট নেন ট্রিস্টান স্টাবস। দুই বল পরে আসালঙ্কাকে ফেরান নর্টকিয়া।
মাত্র ৪৫ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে চোখে সর্ষের ফুল দেখা শুরু করেন লঙ্কান ব্যাটাররা। তবে আক্রমণের ধার কমাননি মার্করাম।
এরপর দলীয় ৬৮ রানে দাসুন শানাকা ও ৭০ রানে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস সাজঘরে ফিরলে ইনিংসের সমাপ্তি টানা ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। পরে দুই ওভারে এক রান নেওয়ার পর আউট হন থিকশানাও। শেষ ওভারের প্রথম বলে নুয়ান তুশারা রান আউট হলে ৭৭ রানে থামে শ্রীলঙ্কার ইনিংস।
দলের হয়ে কুশল মেন্ডিসের ১৯ রানের ইনিংসটিই ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। তিনি ছাড়া আর দুজন কেবল নিজেদের রান দুই অঙ্কে নিতে পেরেছেন।
অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৪ ওভারে মাত্র ৭ রান খরচ করে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট শিকার করেছেন নর্টকিয়া। কেশব মহারাজ ও কাগিসো রাবাদা নিয়েছেন দুই করে উইকেট।
একইসঙ্গে অভিষিক্ত বার্টম্যানের কথা না বললেই নয়। প্রোটিয়াদের হয়ে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচের প্রথম বলেই উইকেট নেয়া এই বোলার চার ওভারে একটি মেইডেনসহ মাত্র ৯ রান খরচ করেছেন।
আরও পড়ুন: টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত শ্রীলঙ্কার
৫৭৩ দিন আগে
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কাবাডিতে নেপালকে হারিয়ে বাংলাদেশের শিরোপা জয়
নেপালকে ৪৫-৩১ পয়েন্টে হারিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডির শিরোপা জিতেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
সোমবার (৩ জুন) মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী জাতীয় ইনডোর স্টেডিয়ামে ১২ জাতি-টুর্নামেন্টটির ফাইনালে দুটি লোনাসহ দারুণ এই জয় পায় বাংলাদেশ।
ম্যাচের প্রথমার্ধে ২৪-১০ পয়েন্টে আধিপত্য বিস্তার করে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ অধিনায়ক আরদুজ্জামান মুন্সি প্রথম রেইডেই বাংলাদেশের খাতা খোলেন। পরে তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন। এই ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক কাবাডি থেকে অবসর নিয়েছেন এই তারকা খেলোয়াড়।
এছাড়া টুর্নামেন্টের সেরা রেইডার হয়েছেন বাংলাদেশের মিজানুর রহমান, সেরা ক্যাচার হয়েছেন বাংলাদেশের মোহাম্মদ রোমান হোসেন এবং টুর্নামেন্টের সেরা হয়েছেন নেপালি রাইডার ঘনশ্যাম রোকা মাগার।
এ ম্যাচে দক্ষতা এবং উচ্চতার সুবিধা বাংলাদেশকে নেপালের ওপর কর্তৃত্ব চালাতে সুযোগ দিয়েছিল।
ম্যাচের অষ্টম মিনিটে লোনা জিতে নেপালের বিপক্ষে ১১ পয়েন্টের লিড নেয় বাংলাদেশ।
নেপালের পক্ষে পাল্টা আক্রমণ করেন তাদের টেক্কা আক্রমণকারী ঘনশ্যাম রোকা মাগার; তবে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় তাকে বাইরে পাঠাতে সফল হয় বাংলাদেশের রক্ষণভাগ।
ম্যাচজুড়ে বাংলাদেশ রেইডাররা নেপালের ওপর আধিপত্য ধরে রেখেছিল।
লাল-সবুজ জার্সিধারীরা দ্বিতীয় লোনা অর্জন করলেও স্কোরলাইন ছিল ২৯-১২। নেপাল অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়িয়ে নিজেদের ট্রেড মার্ক দেখালেও বাংলাদেশ দল ছিল অবিচল। দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি সময়ে একটি লোনা আদায় করে নেয় নেপাল।
আরও পড়ুন: ২৬ মে শুরু হচ্ছে বঙ্গবন্ধু কাপ ২০২৪ আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্ট
এর আগে সেমিফাইনালে বাংলাদেশ ৪১-১৮ পয়েন্টে থাইল্যান্ডকে তিনটি লোনা নিয়ে পরাজিত করে, অন্যদিকে নেপাল টাইব্রেকারে ৯-৫ (৫৯-৫৫) পয়েন্টে দুইবারের রানার্সআপ কেনিয়াকে পরাজিত করে।
চলতি টুর্নামেন্টে ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের টানা দ্বিতীয় জয়। এর আগে গত শুক্রবার 'এ' গ্রুপের ম্যাচে হিমালয়ের দেশটিকে ৪৬-৩১ পয়েন্টে হারায় বাংলাদেশ।
পাঁচ ম্যাচে পূর্ণ ১০ পয়েন্ট নিয়ে 'এ' গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ এবং পাঁচ ম্যাচে আট পয়েন্ট নিয়ে 'এ' গ্রুপের রানার্সআপ হিসেবে সেমিফাইনালে উঠেছে নেপাল।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ফাইনাল খেলা উপভোগ করেন এবং ট্রফি বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ এজাহার খান।
এ সময় আরও ছিলেন- বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি ও বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।
রোল অব অনার
বছর: চ্যাম্পিয়ন-রানার্স আপ২০২১: বাংলাদেশ-কেনিয়া২০২২: বাংলাদেশ-কেনিয়া২০২৩: বাংলাদেশ-চাইনিজ তাইপেই২০২৪: বাংলাদেশ-নেপাল
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে কবে কাবাডি লিগ টুর্নামেন্ট হবে!
৫৭৩ দিন আগে
টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত শ্রীলঙ্কার
অনেক জল্পনার অবসান ঘটিয়ে চলতি মাসের শুরুতে পর্দা উঠেছে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। উদ্বোধনী ম্যাচে কানাডাকে ৭ উইকেটে হারিয়ে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার (৩ জুন) টুর্নামেন্টের চতুর্থ ম্যাচে মাঠে নামছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কা।
নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
শ্রীলঙ্কা দল:
পাথুম নিসাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, কামিন্দু মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিথ আসালঙ্কা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, দাসুন শানাকা, ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গা (অধিনায়ক), মাহিশ থিকশানা, মাথিশা পাথিরানা, নুয়ান থুশারা।
দক্ষিণ আফ্রিকা দল:
কুইন্টন ডি কক, রিজা হেন্ড্রিকস, এইডেন মার্করাম (অধিনায়ক), ডেভিড মিলার, হাইনরিখ ক্লাসেন, ট্রিস্টান স্টাবস, মার্কো ইয়ানসেন, কেশব মহারাজ, কাগিসো রাবাদা, আনরিখ নর্টকিয়া, অটনাইল বার্টম্যান।
আরও পড়ুন: যেসব ভেন্যুতে আয়োজিত হচ্ছে ২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপ
৫৭৩ দিন আগে
যেসব ভেন্যুতে আয়োজিত হচ্ছে ২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপ
১ জুন থেকে শুরু হয়েছে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। সর্বমোট ৫৫টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের এই টুর্নামেন্ট চলবে আগামী ২৯ জুন পর্যন্ত। যৌথভাবে টুর্নামেন্টটি আয়োজন করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নির্ধারিত ৯টি ভেন্যুর মধ্যে ৩টি ইউএসএর- টেক্সাস, নিউইয়র্ক, এবং ফ্লোরিডায়। আর ৬টি ক্যারিবিয়ান ভেন্যু- অ্যান্টিগুয়া ও বার্বুডা, বার্বাডোস, গায়ানা, সেন্ট লুসিয়া, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো এবং সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইন্স। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ উপভোগের পাশাপাশি শহরগুলোর দর্শনীয় স্থানগুলোও আকৃষ্ট করছে ক্রিকেটপ্রেমীদের। চলুন, আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপ ২০২৪ আয়োজনকারী স্টেডিয়ামগুলোর অবস্থান ও এর আশেপাশের পর্যটন স্থানগুলোর ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক-
যে স্টেডিয়ামগুলোতে বসছে ২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপের আসর
গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়াম, টেক্সাস
২০০৮ সালে চালু হওয়া এই স্টেডিয়ামটি ২০১৯ সাল পর্যন্ত বেসবল খেলার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। এর মাঝে ২০১৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত সকার ইউনাইটেড সকার লিগ-২ এখানে তাদের ম্যাচগুলো মঞ্চস্থ করে। এরপর সংস্কারের পর ২০২৩ সালে মাঠটিতে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম ক্রিকেট ম্যাচ। টেক্সাসের ডালাস কাউন্টির গ্র্যান্ড প্রেইরি শহরের লোন স্টার পার্কওয়েতে অবস্থিত মাঠটির বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৫ হাজার।
হলিউডের ওয়েস্টার্ন ছবির মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি পাওয়া ডালাস কাউবয়ের দেখা মিলবে ডাউনটাউন থেকে ১৩ কিলোমিটারেরও কম দূরত্বের টেক্সাস হর্স পার্কে। অদ্ভূত এক ঐতিহাসিক দিগন্তের দেখা পাওয়া যাবে ডিলি প্লাজার ষষ্ঠ তলা জাদুঘর, জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরি ও মিউজিয়ামে। এছাড়া রিইউনিয়ন টাওয়ার জিও-ডেকের ১৭০-মিটার-উচ্চতার ওয়াচ টাওয়ার থেকে সমগ্র ডালাসের দৃশ্য সত্যিই শ্বাসরুদ্ধকর!
পেরোট মিউজিয়াম অব ন্যাচার অ্যান্ড সায়েন্সের অসাধারণ রত্ন সংগ্রহ এবং ডাইনোসর একচেটিয়াভাবে আকৃষ্ট করে পর্যটকদের।
নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, নিউ ইয়র্ক
৩৪ হাজার দর্শকের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন সদ্যনির্মিত এই ক্রিকেট গ্রাউন্ড মূলত সর্বাঙ্গীনভাবে একটি মডুলার স্টেডিয়াম। ৩ জুন শ্রীলঙ্কা বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট লড়াইয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে এই ভেন্যুর প্রথম ম্যাচ। মডুলার অবকাঠামোর এই অতিকায় মাঠটির অবস্থান নিউ ইয়র্কের লং আইল্যান্ডের ইস্ট মেডোতে আইজেনহাওয়ার পার্কের মাঠে।
এর আশেপাশে ভ্রমণের জন্য প্রথমেই যাত্রা শুরু করতে হবে লং বিচ থেকে। এই সৈকতে পাওয়া যাবে সার্ফিংসহ বিভিন্ন রোমাঞ্চকর কার্যকলাপের সুযোগ। ক্যাপট্রি স্টেট পার্কে নৌকা ভাড়া ফায়ার আইল্যান্ড ভ্রমণের সময় মাছ ধরা যায়। তবে রোমাঞ্চের ষোল আনা পূর্ণ হবে পায়ে হেঁটে ৩০০ বছরের পুরনো বন সানকেন পেরুনোর সময়।
সামার হোয়াইট হাউস, ওয়াশিংটন স্পাই ট্রেইল এবং গোল্ড কোস্ট ম্যানশনগুলোকে অনুসরণ করার সময় পশ্চিমের পুরো অতীতটা রীতিমতো লাফ দিয়ে চোখের সামনে এসে দাঁড়াবে। বলাবাহুল্য যে, স্ট্যাচু অব লিবার্টি এবং এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং দেখে না এলে এই ভ্রমণটা পুরো বৃথাই যাবে।
সেন্ট্রাল ব্রোওয়ার্ড পার্ক এবং ব্রোওয়ার্ড কাউন্টি স্টেডিয়াম, ফ্লোরিডা
এই লডারহিল ভেন্যু হলো সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত ইউএস ক্রিকেট ভেন্যু, যা উন্মুক্ত করা হয়েছিল ২০০৭ সালের ৯ নভেম্বর। এটি ফ্লোরিডার লডারহিলের একটি বৃহৎ কাউন্টি পার্ক এবং ইউএসএর প্রধান দুটি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মধ্যে একটি। স্টেডিয়ামটির ধারণক্ষমতা ২৫ হাজার।
গ্রেটার ফোর্ট লডারডেলের ৩৭ কিলোমিটার সোনালি তীরবর্তী অঞ্চল দিয়ে প্রবেশ করা যায় ৮টি উপকূলবর্তী শহরে। এখানকার আকর্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘ঘাসের নদী’ নামে খ্যাত জলাবদ্ধ তৃণভূমিতে কুমির দেখা, বাটারফ্লাই ওয়ার্ল্ডের বিশ্বের বৃহত্তম প্রজাপতি বাগান এবং হামিংবার্ড।
আরও পড়ুন: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ‘গেম চেঞ্জার’ হতে পারেন যারা
দক্ষিণে গেলে চোখে পড়বে প্রাণবন্ত মিয়ামি শহরের আদিম সমুদ্র সৈকত। এ পথে হাজির হবে আফ্রো-অ্যামেরিকান ইতিহাস সমৃদ্ধ ওভারটাউন, সাউথ ডেডের মিকোসুকি নেটিভ-আমেরিকান সংস্কৃতি এবং লিটল হাভানার কিউবান সম্প্রদায়।
স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়াম, অ্যান্টিগুয়া এবং বার্বুডা
ওয়েস্ট ইন্ডিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ নাম স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডসের নামানুসারে নামকরণ হয়েছে এই স্টেডিয়ামটির। এর গোড়াপত্তন হয়েছিল ২০০৭ সালে তৎকালীন ৫০ ওভারের ক্রিকেট বিশ্বকাপকে উদ্দেশ্য করে। সেন্ট জর্জের নর্থ সাউন্ডে অবস্থিত স্টেডিয়ামটিতে ১০ হাজার লোকের জায়গা দিতে পারে।
এর আশেপাশের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে পর্যটকদের প্রথম আকর্ষণ হচ্ছে সেন্ট জর্জ প্যারিস চার্চ। এই অ্যাংলিকান চার্চটি স্থাপিত হয়েছিল ১৭৮৪ সালে। এরপরেই দেখা যেতে পারে ২০ হাজারেরও বেশি প্রজাতির অর্কিডসমৃদ্ধ অর্কিড ওয়ার্ল্ড। প্রশান্তিদায়ক বাগানগুলো প্রদর্শন করতে প্রায় এক ঘণ্টা লেগে যায়। পুরনো আমলে ঘরবাড়ি দেখার জন্য সেরা জায়গা হচ্ছে ফ্রান্সিয়া প্ল্যান্টেশন হাউস। এটি প্রাচীনতম মানচিত্র সংগ্রহের জন্য বিখ্যাত।
কেন্সিংটন ওভাল, বার্বাডোস
১৮৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর কেন্সিংটন ওভালে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় ১৮৯৫ সালে। বার্বাডোসের ব্রিজটাউনের পশ্চিম অংশে অবস্থিত এই স্টেডিয়ামে ২৮ হাজার লোকের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। এই ধারণক্ষমতা ওভালকে ক্যারিবীয় অঞ্চলের সবচেয়ে বড় ভেন্যুতে পরিণত করেছে।
এই দ্বীপাঞ্চলটির পশ্চিম দিকে রয়েছে কার্লাইল বে, যেটি সূর্যাস্ত দেখার জন্য জনপ্রিয় স্থান। তুষার-শুভ্র বালি ও ঢেউ খেলানো তালগাছের এই সৈকত ইউনেস্কো মনোনীত মেরিন পার্কের অংশ।
বার্বাডোসের এই অঞ্চলটাতে পাওয়া যাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেরা সব খাবারগুলো। এগুলোর মধ্যে অধিকাংশতেই রয়েছে মাছের আধিক্য। বিশেষ করে বাজান এবং গ্রিলড মাহি মাহি এখানকার ঐতিহ্যবাহী খাবার।
বার্বাডোস মিউজিয়াম ও হিস্টোরিক্যাল সোসাইটি ভ্রমণের সময় দেখা মিলবে ৫ লক্ষেরও বেশি পুরনো স্থাপত্যের নিদর্শন।
আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৪ আসরের সমাপনী খেলাটি অনুষ্ঠিত হবে এই স্টেডিয়ামে।
প্রোভিডেন্স স্টেডিয়াম, গায়ানা
২০০৭ সালে বোর্ডা বা জর্জটাউন ক্রিকেট ক্লাব গ্রাউন্ডটি পুনর্স্থাপন করে বানানো হয় প্রোভিডেন্স স্টেডিয়াম। এটি নির্মিত হয়েছিল তৎকালীন ক্রিকেট বিশ্বকাপের সুপার এইট ম্যাচ আয়োজনের জন্য। গায়ানার ডেমিরারা-মাহাইকা অঞ্চলের প্রোভিডেন্সে অবস্থিত এই ভেন্যুতে ২০ হাজার আসনের ব্যবস্থা রয়েছে।
গায়ানার অত্যাশ্চর্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে সেন্ট জর্জ ক্যাথেড্রাল, যেটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু কাঠের বিল্ডিংগুলোর একটি। এর গথিক-শৈলী, সূক্ষ্ম নকশার কাঁচের জানালা, অদ্ভুত বেদী এবং কাঠের খিলানযুক্ত সিলিং দর্শনার্থীদের বিস্ময়ের খোরাক জোগায়।
জর্জটাউন বোটানিক্যাল গার্ডেনে স্বাগত জানাবে বিচিত্র ধরনের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় উদ্ভিদ। শাপলা পুকুর, পাম এবং অর্কিড দেখতে দেখতে হেঁটে যাওয়ার সময় চমকে দিতে পারে নাম না জানা পাখিরা।
গায়ানার স্থানীয় সঙ্গীতের সুধা নিতে যেতে হবে রয় গেডেস স্টিল প্যান মিউজিয়ামে। এখানকার স্টিলের প্যানের সংগ্রহে মিশে রয়েছে গায়ানার বিবর্তনের ইতিহাস।
ড্যারেন স্যামি ক্রিকেট গ্রাউন্ড, সেন্ট লুসিয়া
এই মাঠটির সঙ্গে মিশে রয়েছে ২০১২ এবং ২০১৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরপর ২ বার আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের ইতিহাস। প্রথমে ২০০২ সালে উদ্বোধনের সময় পার্শ্ববর্তী পাহাড়গুলোর নামানুসারে এর নাম রাখা হয়েছিল বিউসজোর ক্রিকেট গ্রাউন্ড। কিন্তু পরবর্তীতে সেই দুটি বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক অলরাউন্ডার ড্যারেন স্যামির সম্মানে ২০১৬ সালে মাঠটির নাম পরিবর্তন করা হয়।
আরও পড়ুন: ঝড়ে ক্ষতবিক্ষত টি-২০ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের স্টেডিয়াম
সেন্ট লুসিয়ার গ্রস আইলেটের কাছে অবস্থিত এই মাঠটির ধারণক্ষমতা ১৫ হাজার। স্টেডিয়ামটি রডনি বে-এর পর্যটন রিসোর্টের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত। বিলাসবহুল ইয়ট এবং পালতোলা জাহাজে সব সময়ই ব্যস্ত থাকে রডনি বে মেরিনা। এখানে রয়েছে স্থানীয় রন্ধনশিল্পের দর্শনধারী বাহারি সব রেস্তোরাঁ।
পিজিয়ন আইল্যান্ড ন্যাশনাল পার্কে ঢোকার পর থেকে সামনে পড়বে ফোর্ট রডনিসহ ঐতিহাসিক সব সামরিক ধ্বংসাবশেষ। এর সঙ্গে উপকূলের নজরকাড়া দৃশ্যে চোখ রেখে নৈসর্গিক ট্রেইল ধরে চলে যাওয়া যাবে সিগন্যাল পিক পর্যন্ত।
ব্রায়ান লারা ক্রিকেট একাডেমি, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো
২০১৭ সালে চালু হওয়া এই স্টেডিয়ামটির নামকরণ করা হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রাক্তন অধিনায়ক ব্রায়ান লারার নামে। লারা ২০০৮ সালের ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটে সর্বকালের শীর্ষস্থানীয় রান সংগ্রহকারী ছিলেন। দক্ষিণ ত্রিনিদাদের সান ফার্নান্দোর উপকণ্ঠের তারৌবাতে অবস্থিত এই স্টেডিয়ামে আসন রয়েছে মোট ১৫ হাজার।
ত্রিনিদাদের নান্দনিক সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে ওয়েস্টার্ন মেইন রোড ধরে গেলে। এখানে রাস্তার পাশের খাবারের দোকানসহ রয়েছে রঙিন বাজার। স্থানীয় খাবারের পাশাপাশি এই দোকানগুলো স্যুভেনির কেনার জন্যও বেশ উপযুক্ত।
কুইন্স পার্ক সাভানার চারপাশ জুড়ে গাছ-গাছালি এবং নানা ঐতিহাসিক নিদর্শনের বেষ্টনী। এছাড়াও রয়েছে ঔপনিবেশিক যুগের প্রাসাদ এবং রাজকীয় বোটানিক্যাল গার্ডেন।
আর্নোস ভ্যালে স্টেডিয়াম, সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইন্স
১৯৮১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম ইংল্যান্ডের একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন করা হয় স্টেডিয়ামটি। সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনের কাছেই অবস্থিত আর্নোস ভ্যালের ধারণক্ষমতা ১৮ হাজার।
এখানকার কাছাকাছি পর্যটন স্থানের মধ্যে রয়েছে কিংসটাউন বোটানিক্যাল গার্ডেন। বেশ পুরনো আমলের হলেও এখানে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় গাছপালা এবং ফুলগুলো সুবিন্যস্ত করে সাজানো। এগুলোর মাঝে শোভা পায় বিখ্যাত ব্রেডফ্রুট গাছ।
১৮ শতকের একটি সুসংরক্ষিত ঐতিহাসিক দুর্গ কিংসটাউনের ফোর্ট শার্লট। অদূরে উপকূলরেখার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য হাতছানি দিয়ে ডাকে। অন্যদিকে প্রাচীর এবং কামানগুলো মনে করিয়ে দেয় দ্বীপের ঔপনিবেশিক অতীতের কথা। সেই আবহ হৃদয়ে ধারণ করেই প্রবেশ করা যেতে পারে সামরিক যাদুঘরে।
শেষাংশ
২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজনকারী এই স্টেডিয়ামগুলোর মধ্যে সর্বাধিক প্রাচীন কেন্সিংটন ওভাল। আশির দশকে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের তীর্থস্থান হিসেবে স্থানীয় সংস্কৃতিকে বহন করে চলেছে আর্নোস ভ্যালে। সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন স্যামির ধূলোতে লেগে রয়েছে বিংশ শতকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ঐতিহাসিক অর্জনের পরশ। ২০০৭ সাল স্মরণীয় হয়ে আছে একই সঙ্গে সাথে প্রোভিডেন্স, স্যার ভিভ রিচার্ডস, এবং সেন্ট্রাল ব্রোওয়ার্ড পার্কের উদ্বোধনের বর্ষ হিসেবে। আর পরের বছরেই চালু হওয়া গ্র্যান্ড প্রেইরি সবচেয়ে দর্শনীয় জায়গাগুলোর সান্নিধ্যে রয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উত্তর আমেরিকান দেশটির ল্যান্ডমার্কে পরিণত হয়েছে ব্রায়ান লারা ক্রিকেট একাডেমি। অতঃপর আদ্যোপান্ত মডুলার স্টেডিয়াম হিসেবে সর্বপ্রথম ক্রিকেট গ্রাউন্ডের বিশ্ব রেকর্ড অর্জন করল নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালের আইসিসি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজক হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ
৫৭৪ দিন আগে
ডর্টমুন্ডের হারের ৫ কারণ
২০১২-১৩ মৌসুমে উইম্বলি স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল খেলে হেরেছিল মার্কো রয়েসের বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। ১১ বছর পর সেই উইম্বলিতেই ফাইনাল হেরে শৈশবের ক্লাব ডর্টমুন্ড থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে তাকে। তবে ফাইনাল ম্যাচে যথেষ্ট সুযোগ পেয়েও সতীর্থদের তা কাজে লাগাতে না পারার আক্ষেপ তাকে পোড়াবে সারাজীবন। এই আক্ষেপে পুড়বে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকা ডর্টমুন্ডের লাখো সমর্থকও।
এমন একটি ম্যাচ ডর্টমুন্ড খেলেছে যেখানে তারা দোষারোপ করতে পারে শুধুই নিজেদেরই। নিজেদের কারণেই ভাগ্যের এমন নির্মম পরিহাসে পরিণত হয়েছে এদিন তেজরিচের ডর্টমুন্ড।
চলুন দেখে নিই কীভাবে সহজে জেতা ম্যাচটি কঠিন করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা হাতছাড়া করল ডর্টমুন্ড।
ফিনিশিংয়ে ব্যর্থ
রিয়াল মাদ্রিদের মতো দলের দারুণ পেশাদার খেলোয়াড়রা ফাইনাল ম্যাচের প্রথমার্ধেই তিনবার গোলমুখ উন্মুক্ত করে দিলেন। সুযোগ বুঝে লম্বা লম্বা অসাধারণ সব পাসে ফরওয়ার্ডদের কাউন্টারে ওঠার সুযোগও করে দিলেন ডর্টমুন্ডের মিডফিল্ডাররা। তবে গোলরক্ষককে একা পেয়ে, এমনকি উন্মুক্ত গোল পেয়েও বল গন্তব্যে পাঠাতে ব্যর্থ হলেন করিম আদেয়েমি-নিকোলাস ফুলক্রুগরা।
ফাইনাল বা যেকোনো হ্যাভিওয়েট ম্যাচে একটি দলের কৌশলের অংশই থাকে- প্রতিপক্ষ দুয়েকটি ভুল করলেও সেটিই কাজে লাগিয়ে ম্যাচে এগিয়ে থাকা এবং পরবর্তীতে তাদের সামনে রক্ষণের দেওয়াল তোলা।
আরও পড়ুন: ‘অপরাজিত’ থেকে ইউরোপের রাজত্ব পুনরুদ্ধার করল রিয়াল মাদ্রিদ
এই কাজের কাজটি করার সুযোগ ডর্টমুন্ডের খেলোয়াড়রা পেয়েছিলেন তিন তিনবার। প্রথমবার হুতাশে ভুল করে ফেললেও পরের দুইবার তাদের সামনে সুযোগ ছিল তা শোধরানোর। কিন্তু না! সেরকম কোনো লক্ষণই দেখা গেল না হলুদ জার্সিধারীদের। ফলে প্রথমার্ধের ভুলগুলো শুধরে নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে চেনা রূপে হাজির হলো রিয়াল মাদ্রিদ, আর পরাক্রম দেখিয়ে জিত নিল ম্যাচটি।
সুযোগ তৈরিতে অনীহা
এই বিষয়টি রিয়াল মাদ্রিদের ক্ষেত্রেও বলা চলে। শেষের ২০ মিনিট বাদ দিলে একেবারেই ফাইনালোচিত পারফরম্যান্স করেনি দলটি। তবে জয়ে তাদের সেসব ত্রুটি ছাপিয়ে গেছে।
তাই বলে ‘ইউরোপের কিং’ খ্যাত রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ফাইনাল খেলতে গিয়ে গা ছেড়ে খেলা ডর্টমুন্ডের শোভা পায় না। তার খেসারতও তাদের দিতে হয়েছে দিনশেষে।
ম্যাচের প্রথমার্ধে রিয়াল মাদ্রিদ যখন ছন্নছাড়া ছিল, তখনই তাদের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করে একে একে গোল তুলে নিয়ে আসতে পারত জার্মানির দলটি। খুব বেশি চাপ না দেওয়ার পরও রিয়াল তিনবার তাদের সামনে গোলমুখ ফাঁকা করে দিয়েছে।
জর্মান ফুটবল দর্শন কাজে লাগিয়ে ম্যাচটি প্রথমার্ধেই কার্যত একপেশে করে ফেলতে পারত ডর্টমুন্ড। কিন্তু তা করার পরিবর্তে ভিনিসিউস-বেলিংহ্যামদের ঠেকাতে ব্যস্ত ছিল তারা। ফলে বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে বেশ কয়েকবার আর রক্ষণাত্মক খেলতে গিয়ে সুযোগও তৈরি করা হয়ে ওঠেনি।
তেজরিচ জানতেন, বিরতির সময় কার্লো আনচেলত্তি তার শিষ্যদের পুনরুজ্জীবিত করে মাঠে পাঠাবেন। কিন্তু তা বুঝে শিষ্যদের আরও আক্রমণাত্মক হওয়ার নির্দেশনা দিতে দেখা যায়নি তাকে।
গেম ডেভেলপমেন্টে ঘাটতি
স্যানচো-আদেয়েমিকে দ্বৈত ভূমিকায় রেখে মাঝমাঠে পাঁচজন খেলোয়াড় খেলালেও বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ রেখে প্রতিপক্ষের বক্সের সামনে বা ভেতরে বল নড়াচড়া করে গোলের সুযোগ তৈরির মতো কাজ করতে দেখা যায়নি ডর্টমুন্ডকে। প্রতিপক্ষেকে প্রেস করে বল দখলে নিলেও উচ্চাভিলাসী লং পাস আর ভুল পাসে বারবার বল হারিয়েছে তারা। ফলে মাঝমাঠ ছেড়ে রক্ষণে মনোযোগী হতে হয়েছে মিডফিল্ডারদের।
আবার তেজরিচের সতীর্থদের মধ্যে সংযোগেরও অভাব ছিল স্পষ্ট। একে অপরের সঙ্গে বলের আদান-প্রদান, একজনের পায়ে বল গেলে পরবর্তী পাসের জন্য অন্যজন সুবিধামতো পজিশনে যাওয়া- ফুটবলের এই বেসিক বিষয়গুলোতেও ঘাটতি ছিল ডর্টমুন্ডের। তাই রিয়াল ঢিলেঢালা রক্ষণকেও ভাঙতে ব্যর্থ হয়েছেন ব্ল্যাক-ইয়েলোদের ফরওয়ার্ডরা।
কৌশলে ব্যর্থ তেজরিচ
শুরুর একাদশ নির্বাচনে ভুল করেননি ডর্টমুন্ড কোচ এদিন তেজরিচ। রিয়াল মাদ্রিদের শক্তি, সামর্থ্য আর কৌশল বিবেচনায় নিয়েই উপযুক্ত একাদশ সাজান তিনি। কিন্তু ম্যাচ চলাকালে প্রতিপক্ষের কৌশলে পরিবর্তন এলে বা তারা কোনো বিষয়ে দুর্বলতা প্রকাশ করলে সেগুলো থেকে ফায়দা তুলতে নিজের দলের খেলায় অসংখ্যবার পরিবর্তন আনা যেতে পারে। রিয়াল মাদ্রিদ বারবার এমন সুযোগ দিলেও তা কাজে লাগাতে পারেননি ডর্টমুন্ড কোচ। অন্তত মাঠের খেলায় তা-ই দেখা গেছে।
প্রথমার্ধের বিষয়ে তো আলোচনা হলোই, দ্বিতীয়ার্ধেও বেশ কিছু সময়ের জন্য এমন সুযোগ দিয়েছিল রিয়াল। ম্যাচের এক ঘণ্টা পার হলে হঠাৎ করে ঝিমিয়ে যায় লস ব্লাঙ্কোসরা। সেসময় তাদের ওপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করে ফায়দা তুলে নেওয়া যেত, কিন্তু তা করেননি তেজরিচ। অথচ প্রথম গোলের পর ঠিক এই কৌশল কাজে লাগিয়েই দ্বিতীয় গোল পেয়ে যান আনচেলত্তি।
ফুটবলে শক্তির চেয়ে বুদ্ধিদীপ্ত কৌশল অনেক বেশি কার্যকর হলেও একরকম ‘গোঁড়া’ ফুটবল খেলে হেরেছে তেজরিচের ডর্টমুন্ড।
ব্যক্তিগত ভুলের ছড়াছড়ি
পুরো ম্যাচজুড়ে ব্যক্তিগত ভুলের মেলা বসিয়েছিল ডর্টমুন্ড। এ কারণে যেমন গোল করতে ব্যর্থ হয়েছে দলটি, তেমনই গোল খেয়ে ম্যাচ হাতছাড়া করেছে তারা।
রিয়ালের বক্সের সামনে বারবার এ বিষয়টি দেখা গেছে। দলবদ্ধভাবে বল নিয়ে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে যেমন বিপদ তৈরি করতে পারেনি জার্মান দলটি, আবার ব্যক্তিগত দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে নিজেই গোল আদায় করে নিয়ে আসবে, এমন কিছুও করে দেখাতে পারেনি দলটির ফরওয়ার্ডরা। তাছাড়া একজন বল নিয়ে এগিয়ে গেলেও বাকিদের তাকে সাপোর্ট দেওয়ার বেলায় দেখা গেছে অনীহা। ফলে বেশ কয়েকটি আক্রমণ শানালেও তা মূলত অকার্যকর হয়ে গেছে।
আবার রক্ষণে অসাধারণ পারফর্ম করলেও মাঝে মাঝেই ভুল পাস দিয়ে বা বলের দখল হারিয়ে দলকে বেশ কয়েকবার বিপদে ফেলেছেন ডর্টমুন্ডের তরুণ ডিফেন্ডাররা। অভিজ্ঞ হুমেলস ও গোলরক্ষক কোবেলের কল্যাণে বেশ কয়েকবার গোল খাওয়ার হাত থেকে বেঁচে গেলেও শেষ পর্যন্ত নিজেদের ভুলের খেসারত দিতে হয়েছে ডর্টমুন্ডকে।
পুরো ম্যাচে জেডন স্যানচো, ইউলিয়ান ব্রান্ডট, মার্সেল জাবিৎসারকে নিজেদের ছায়া হয়ে থাকতে দেখা গেছে। ফলে জয়ের বন্দর তাদের কাছ থেকে ক্রমে শুধু দূরেই সরে গেছে।
পরিশেষ
প্রথমার্ধে রেফারি রিয়ালের পক্ষে দুয়েকটি সিদ্ধান্ত দিলেও ডর্টমুন্ডের গোল আটকানো বা রিয়ালকে গোলের সুযোগ করে দেওয়ার মতো পক্ষপাতিত্ব এদিন করতে দেখা যায়নি। রিয়ালের যে পারফর্ম্যান্স ছিল ম্যাচজুড়ে, তাতে কিংবদন্তি মার্কো রয়েসকে শিরোপা জয়ের মাধ্যমে দুর্দান্ত এক বিদায় জানাতে পারতেন তার সতীর্থরা। তবে কৌশলের ভুল আর পারফরম্যান্সের ঘাটতিতে চোখের জলে বিদায় নিতে হয়েছে তার।
৫৭৪ দিন আগে
‘অপরাজিত’ থেকে ইউরোপের রাজত্ব পুনরুদ্ধার করল রিয়াল মাদ্রিদ
১৯৯২ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নামকরণের পর ৬ বার ফাইনালে উঠল রিয়াল মাদ্রিদ; জিতল ছয়বারই। এ যেন এলাম, দেখলাম আর জয় করলাম! ডর্টমুন্ডের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে ১৫তম বারের মতো ইউরোপসেরার মুকুট মাথায় পরল ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাজা’ খ্যাত মাদ্রিদের দলটি।
শনিবার রাতে ইংল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী উইম্বলি স্টেডিয়ামে জার্মান ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে ইউরোপের রাজত্ব পুনর্দখল করেছে কার্লো আনচেলত্তির রিয়াল মাদ্রিদ।
মূলত প্রথমার্ধে তিনটি নিশ্চিত গোলের যে সুযোগগুলো নষ্ট করেছে ডর্টমুন্ড, তারই খেসারত দিতে হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। ফলে এই হারে নিজেদের দোষারোপ করা ছাড়া উপায় নেই দলটির।
ফাইনাল ম্যাচ জিতে শিরোপা উঁচিয়ে ধরার জন্য যে চকিতে আসা দুয়েকটি সুযোগ নির্ভুলভাবে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে হয়, জয় নিশ্চিত করতে হয়- তা বোধহয় জানেই না জর্মানির এই ক্লাবটি। অন্তত ম্যাচটি সরাসরি দেখা যে কেউ এই মন্তব্যের সঙ্গে একমত হবেন।
আর ঠিক সেই কাজটিই ঠিকঠাক করে ট্রফিটি নিয়ে উল্লাসে মাতল রয়্যাল হোয়াইট জার্সিধারীরা।
৫৭৫ দিন আগে