বিশ্ব
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ১৪ বছরের কারাদণ্ড
দুর্নীতির দায়ে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর মাত্র একদিন আগে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ফাঁসের অভিযোগে খানকে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল আদালত।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরার এই সাজা ঘোষণা করেন দেশটির একটি বিশেষ আদালত।
২০২২ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর খানের সর্বশেষ দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং এটি তৃতীয় সাজা।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকাকালে রাষ্ট্রীয় উপহার রাখা ও বিক্রি করার সবচেয়ে সাম্প্রতিক মামলায় খান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল।
৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের পার্লামেন্ট নির্বাচনকে ঠিক আগ মুহূর্তে আদালত ইমরান খানকে কয়েক বছরের জন্য কোনো সরকারি পদে অযোগ্য ঘোষণা করে।
ইমরান খানের আইনজীবী বাবর আওয়ান বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং এত তাড়াহুড়ো করে সাজা দেওয়া হয়েছে যে বিচারক তার আইনি দলের পৌঁছানোর জন্যও অপেক্ষা করেননি।
খানের মৌলিক মানবিক ও মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে এবং সর্বশেষ দোষী সাব্যস্ত হওয়া ও সাজা উচ্চ আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হবে বলেও জানান এই আইনজীবী।
তিনি বলেন, 'মনে হচ্ছে বিচারক রায় ঘোষণার জন্য তাড়াহুড়ো করছিলেন।’
আরও পড়ুন: ইমরান খানের দুর্নীতির মামলায় ৩ বছরের কারাদণ্ড স্থগিত
ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির (পিটিআই) প্রধান মুখপাত্র জুলফিকার বুখারিও দোষী সাব্যস্ত হওয়া ও সাজার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সৌদি আরব সরকারের কাছ থেকে গহনা ও ঘড়িসহ রাষ্ট্রীয় উপহার রাখার অভিযোগে ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত করার তিন সপ্তাহ পর সর্বশেষ দণ্ড দেওয়া হলো।
সর্বশেষ আদালতের আদেশটি খানের জন্য আরেকটি আঘাত। চলতি মাসের শুরুর দিকে রাওয়ালপিন্ডির কারাগারের আদালতে অভিযোগ পড়ে শোনানোর সময় তিনি ও বিবি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
বিচারক রায় ঘোষণার সময় খান স্বল্প সময় আদালতের শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।
২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং সাজা সত্ত্বেও, তিনি জনপ্রিয় রয়েছেন এবং বর্তমানে দুর্নীতির দোষী সাব্যস্ত হয়ে সময় কাটাচ্ছেন এবং তার বিরুদ্ধে আরও একাধিক মামলা চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন: ইমরান খানের পরিবর্তে পিটিআইয়ের নতুন প্রধান নির্বাচিত
আফ্রিকার বিরোধপূর্ণ তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল আবেইতে সংঘর্ষে নিহত ৫২
সুদান ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যে বিরোধপূর্ণ তেলসমৃদ্ধ আবেই অঞ্চলের গ্রামবাসীদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় জাতিসংঘের এক শান্তিরক্ষীসহ ৫২ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত আরও ৬৪ জন।
রবিবার (২৮ জানুয়ারি) জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের আঞ্চলিক কার্যালয় ও আবেইর একজন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেওয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে আবেই তথ্যমন্ত্রী বুলিস কোচ বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় চালানো হামলার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে এটি ভূমির নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে ঘটেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদান থেকে জেদ্দায় পৌঁছেছেন আরও ১৭৬ বাংলাদেশি
এই অঞ্চলে মারাত্মক জাতিগত সহিংসতা সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে প্রতিবেশী ওয়ারাপ রাজ্যের টুইক ডিঙ্কা উপজাতি সদস্যরা সীমান্তের অঞ্চল নিয়ে আবেইয়ের এনগোক ডিঙ্কার সঙ্গে ভূমি বিরোধে লিপ্ত।
কোচ বলেন, শনিবারের সহিংসতায় হামলাকারী নুয়ের উপজাতির সশস্ত্র যুবকরা গত বছর বন্যার কারণে ওয়াররাপ রাজ্যে চলে এসেছিল।
এক বিবৃতিতে আবেইতে মোতায়েন জাতিসংঘের অন্তর্বর্তীকালীন শান্তিরক্ষা বাহিনী (ইউএনআইএসএফএ) সংহিংসতায় এক শান্তিরক্ষী নিহতের ঘটনা সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে।
নিইনকুয়াক, মাজবং এবং খাদিয়ান অঞ্চলে আন্তঃসাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইউএনআইএফএসএ। সংঘর্ষের ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটেছিল এবং বেসামরিক লোকজনকে ইউএনআইএসএফএ ঘাঁটিতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলেও জানায় জাতিসংঘের এই শান্তিরক্ষী মিশন।
বিবৃতিতে বলা হয়,‘আগোকের ইউএনআইএসএফএ ঘাঁটিতে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামলা চালিয়েছে। মিশন হামলাটি প্রতিহত করলেও দুঃখজনকভাবে ঘানার এক শান্তিরক্ষী নিহত হয়।’
আরও পড়ুন: দক্ষিণ সুদানে অপহৃত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী উদ্ধার
২০০৫ সালে সুদানের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে কয়েক দশক ধরে চলা গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটানোর পর থেকে আবেই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সুদান ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। সুদান এবং দক্ষিণ সুদান উভয়ই আবের মালিকানা দাবি করে আসছে। এমনকি ২০১১ সালে সুদান থেকে দক্ষিণ সুদান স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এই অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি অমীমাংসিত রয়েছে।
এই অঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ঠ এনগোক ডিঙ্কা জনগণ দক্ষিণ সুদানের পক্ষে। অন্যদিকে নিজেদের গবাদি পশুর জন্য চারণভূমি খুঁজতে আবেইতে আসা মিসেরিয়া যাযাবররা সুদানের পক্ষে। তবে অঞ্চলটি বর্তমানে দক্ষিণ সুদানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আফ্রিকান ইউনিয়নের একটি প্যানেল আবেইয়ের জন্য একটি গণভোটের প্রস্তাব করেছিল তবে কে ভোট দিতে পারে তা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।
গত মার্চে দক্ষিণ সুদান আবেইতে সেনা মোতায়েনের পর থেকে আন্তঃসাম্প্রদায়িক ও আন্তঃসীমান্ত সংঘর্ষ বেড়েছে।
আরও পড়ুন: সুদানের খার্তুমের বাজারে ড্রোন হামলায় ৪০ জন নিহত
চীনে ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১, এখনও নিখোঁজ অনেক
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ইউনানের প্রত্যন্ত ও পার্বত্য এলাকায় ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে এবং এখনও অনেক নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিনহুয়া।
সোমবার(২২ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর ৬টার কিছু আগে ইউনানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লিয়াংশুই গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এর আগে মঙ্গলবার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, মোট ৪৪ জনের মতো নিখোঁজ এবং নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু লাশ উদ্ধার করেছেন তারা।
আরেকটি ভূমিধসের সতর্কতার কারণে দিনের শুরুতে উদ্ধার অভিযান স্থগিত থাকার পর পুনরায় তা শুরু হয়েছে।
জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, খননকারী, ড্রোন ও উদ্ধারকারী কুকুরের সহায়তায় ১ হাজারেরও বেশি উদ্ধারকর্মী হিমশীতল ঠান্ডার মধ্যে কাজ করছেন। সোমবার দু'জনকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দেওয়া হয়।
স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের প্রাথমিক তদন্তের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, প্রায় ১০০ মিটার (৩৩০ ফুট) প্রশস্ত, ৬০ মিটার (২০০ ফুট) উচ্চতা এবং গড়ে ৬ মিটার (২০ ফুট) পুরুত্বের একটি খাড়া পাহাড় ধসে পড়লে ভূমিধসের সূত্রপাত হয়। তবে কী কারণে প্রথম ধসের ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি তারা।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে ভূমিধসে নিহত ৭, নিখোঁজ ১০
সিনহুয়ার পোস্ট করা উপর থেকে তোলা ছবিতে দেখা গেছে, একটি উঁচু পাহাড়ের অংশ পাশের গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ির ওপর ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তার কারণে ৯০০ জনেরও বেশি গ্রামবাসীকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ঝেনশিয়ং কাউন্টি বেইজিং থেকে প্রায় ২ হাজার ২৫০ কিলোমিটার (১,৪০০ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। ২ হাজার ৪০০ মিটার (৭,৯০০ ফুট) পর্যন্ত এর উচ্চতা রয়েছে।
উদ্ধারকারীরা তুষারপাত, বরফে ঢাকা রাস্তা এবং হিমশীতল তাপমাত্রার সঙ্গে লড়াই করছে। এমন আবহাওয়া কমপক্ষে আরও তিন দিন অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: চীনের পশ্চিমাঞ্চলে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প
চীনের অনেক অংশে ভারী তুষারপাত হচ্ছে, যা পরিবহন ব্যবস্থায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে এবং জীবনকে বিপন্ন করছে।
উদ্ধারকারীরা গত সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিম চীনের একটি প্রত্যন্ত স্কিইং এলাকা থেকে পর্যটকদের সরিয়ে নিয়েছিল। কারণ ভারী তুষারপাতের কারণে এক সপ্তাহ ধরে এক হাজারেরও বেশি লোক আটকা পড়েছিল। সীমান্তের কাছে জিনজিয়াং অঞ্চলের আলতাই প্রদেশের একটি গ্রামে তুষারধসের কারণে মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া ও কাজাখস্তানের সঙ্গে চীনের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
বৃষ্টি বা অনিরাপদ নির্মাণ কাজের কারণে ভূমিধসের ঘটনা চীনে অস্বাভাবিক কিছু নয়। গত বছর ভূমিধসে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছিল। এর মধ্যে ইনার মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে একটি উন্মুক্ত খনিতে ৫০ জনেরও বেশি লোক নিহত হন। এছাড়া ২০২১ সালে নির্মাণাধীন একটি টানেল প্লাবিত হওয়ায় ১৪ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল।
গানসু ও কিংহাই প্রদেশের মধ্যবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চলে চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার মাত্র এক মাস পর ইউনানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটল। গত ১৮ ডিসেম্বর আঘাত হানা ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ১৪৯ জন নিহত হয়, এতে ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় এবং ভারী ভূমিধসে কিংহাই প্রদেশের দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়।
গত ৯ বছরের মধ্যে চীনে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রায় এক হাজার মানুষ আহত এবং ১৪ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
আরও পড়ুন: চীনের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসে ৪৭ জনের মৃত্যু
চীনের পশ্চিমাঞ্চলে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প
চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং অঞ্চলের জনবিরল অংশে মঙ্গলবার ভোরে ৭ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। হিমশীতল আবহাওয়ার আবহাওয়ার মধ্যে এ ঘটনায় ৬ জন আহত হয়েছেন এবং ১২০টিরও বেশি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা ধসে পড়েছে।
চায়না আর্থকোয়েক নেটওয়ার্ক সেন্টার জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রাত ২টার কিছু পরে আকসু প্রিফেকচারের উচতুরপান কাউন্টিতে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। প্রায় ২০০ উদ্ধারকর্মীকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
জিনজিয়াং উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সরকার তাদের অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ওয়েইবোতে উল্লেখ করেছে, আহত ৬ জনের মধ্যে দুজনের আঘাত গুরুতর ও ৪ জনের সামান্য। এছাড়া ৪৭টি বাড়ি ধসে পড়েছে, ৭৮টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কিছু কৃষি কাঠামো ধসে পড়েছে।
আরও পড়ুন: জাপানের পশ্চিম উপকূলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ৪৮ জন নিহত
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি ৭ মাত্রার এবং ভূমিকম্প সক্রিয় তিয়ান শান পর্বতমালায় আঘাত হানে।
সংস্থাটি আরও বলেছে, গত শতাব্দীর মধ্যে ওই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটি ছিল ৭ দশমিক ১ মাত্রার এবং ১৯৭৮ সালে মঙ্গলবার ভোরের দিকে আঘাত হানা স্থান থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার (১২৪ মাইল) উত্তরে হয়েছিল।
আরও পড়ুন: জাপানের পশ্চিমাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর সুনামি সতর্কতা
চীনের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসে ৪৭ জনের মৃত্যু
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় পার্বত্য ইউনান প্রদেশে ভূমিধসে ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঠান্ডা তাপমাত্রা ও তুষারপাতের কারণে আরও ২০০ জনকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর ৬টার কিছু আগে ইউনান প্রদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় লিয়াংশুই গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঝেনশিয়ং কাউন্টির প্রচার বিভাগ জানিয়েছে, ১৮টি আলাদা বাড়িতে চাপা পড়া হতাহতদের উদ্ধার তৎপরতা চলছে।
তবে এসব ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ভূমিধসের কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা না গেলেও ছবিতে দেখা গেছে যে তুষারপাত অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় বন্যা ও ভূমিধসে ২১ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত
ভূমিধসের সময় ৩৫ বছর বয়সী লুও ডংমেই ঘুমিয়ে ছিলেন, কিন্তু তিনি বেঁচে যান এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তাকে একটি স্কুলে সরিয়ে নিয়েছে।
লুও ডংমেই বলেন, ‘আমি ঘুমিয়ে ছিলাম, কিন্তু আমার ভাই দরজায় কড়া নাড়ল এবং আমাকে জাগিয়ে তুলল। তারা বলেছিল যে সেখানে একটি ভূমিধস ছিল এবং বিছানাটি কাঁপছিল, তাই তারা দ্রুত উপরে উঠে আমাদের জাগিয়ে তোলে।’
তিনি বলেন, লুও, তার স্বামী এবং তাদের তিন সন্তানসহ আরও অনেক বাসিন্দাকে স্কুলে খাবার সরবরাহ করা হয়েছে তবে তারা এখনও ঠান্ডা আবহাওয়া মোকাবিলায় কম্বল এবং অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রীর জন্য অপেক্ষা করছেন।
লুও বলেন, ভূমিধসের স্থানের কাছাকাছি থাকা তার বোন ও খালার সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করতে পারছেন না। ‘আমি এখন শুধু অপেক্ষা করতে পারি।’
আরও পড়ুন: চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভূমিধসে খনি শ্রমিক আবাসনে নিহত ১৯
উদ্ধারকারীরা গত সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিম চীনের একটি প্রত্যন্ত স্কিইং এলাকা থেকে পর্যটকদের সরিয়ে নিয়েছিল। কারণ ভারী তুষারপাতের কারণে এক সপ্তাহ ধরে এক হাজারেরও বেশি লোক আটকা পড়েছিল। সীমান্তের কাছে জিনজিয়াং অঞ্চলের আলতাই প্রদেশের একটি গ্রামে তুষারধসের কারণে মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া ও কাজাখস্তানের সঙ্গে চীনের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
বৃষ্টি বা অনিরাপদ নির্মাণ কাজের কারণে ভূমিধসের ঘটনা চীনে অস্বাভাবিক কিছু নয়। গত বছর ভূমিধসে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছিল। এর মধ্যে ইনার মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে একটি উন্মুক্ত খনিতে ৫০ জনেরও বেশি লোক নিহত হন। এছাড়া ২০২১ সালে নির্মাণাধীন একটি টানেল প্লাবিত হওয়ায় ১৪ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল।
গানসু ও কিংহাই প্রদেশের মধ্যবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চলে চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার মাত্র এক মাস পর ইউনানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটল। গত ১৮ ডিসেম্বর আঘাত হানা ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ১৪৯ জন নিহত হয়, এতে ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় এবং ভারী ভূমিধসে কিংহাই প্রদেশের দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়।
গত ৯ বছরের মধ্যে চীনে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রায় এক হাজার মানুষ আহত এবং ১৪ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে ভূমিধসে নিহত ৭, নিখোঁজ ১০
রুশ অধিকৃত ইউক্রেনের বাজারে গোলাবর্ষণে নিহত ১৩
রুশ অধিকৃত ইউক্রেনের দোনেৎস্ক শহরের উপকণ্ঠে একটি বাজারে গোলাবর্ষণে অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন।
রবিবার (২১ জানুয়ারি) এ হামলা চালানো হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে।
এদিকে তেকস্তিলশিকের শহরতলিতে হামলায় আরও ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দোনেৎস্কের রুশ নিয়ন্ত্রিত কর্তৃপক্ষের প্রধান ডেনিস পুশিলিন। তিনি বলেন, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী এই গোলা নিক্ষেপ করেছে।
আরও পড়ুন: ইতালির ভেনিসের কাছে বাস দুর্ঘটনায় ইউক্রেনীয় পর্যটকসহ নিহত ২১
কিয়েভ এই ঘটনা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি। রুশ কর্তৃপক্ষের দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।
জরুরি বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পুশিলিন।
আঞ্চলিক কর্মকর্তারা জানান, রবিবার রাশিয়ার উস্ত-লুগা বন্দরের একটি রাসায়নিক পরিবহন টার্মিনালে দুটি বিস্ফোরণের পর অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বন্দরটিতে হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনের ড্রোন, এ ঘটনায় একটি গ্যাস ট্যাংক বিস্ফোরিত হয়েছে।
সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নোভাটেক পরিচালিত একটি স্থানে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
আরও পড়ুন: রাতে রুশ হামলায় হতাহত হয়েছেন বেশ কিছু বেসামরিক নাগরিক: ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা
রাশিয়ার কিংগিসেপ অঞ্চলের বন্দরের প্রধান ইউরি জাপালাতস্কি এক বিবৃতিতে জানান, এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি, তবে জেলায় উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
সংবাদ মাধ্যম ফন্টানকা জানিয়েছে, রবিবার সকালে দুটি ড্রোন সেন্ট পিটার্সবার্গের দিকে উড়তে দেখা গেছে, কিন্তু সেগুলো কিংগিসেপ অঞ্চলের দিকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস স্বাধীনভাবে এই প্রতিবেদনগুলো যাচাই করতে পারেনি।
তবে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিদিনের ব্রিফিংয়ে কিংগিসেপ এলাকায় কোনো ড্রোন তৎপরতার কথা বলা হয়নি। ব্রিফিংয়ে বলা হয়, রাশিয়ার স্মোলেনস্ক অঞ্চলে চারটি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে এবং ওরিওল ও তুলা অঞ্চলে আরও দুটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে।
এর আগে রুশ কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছিলেন যে, বৃহস্পতিবার সেন্ট পিটার্সবার্গের উপকণ্ঠে একটি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে ক্যাফেতে রুশ হামলায় ৫১ জন নিহত
ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে ভূমিধসে নিহত ৭, নিখোঁজ ১০
ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট ভূমিধসে শিশুসহ অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। এসময় দুইজন গুরুতর আহত হওয়াসহ অন্তত ১০জন নিখোঁজ রয়েছেন।
দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন হতাহতরা সবাই খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী এবং একটি বাড়িতে প্রার্থনারত অবস্থায় তারা চাপা পড়েছিল।
বৃহস্পতিবার(১৮ জানুয়ারি) রাতে সরকারের বেসামরিক প্রতিরক্ষা কার্যালয়ের আঞ্চলিক প্রধান এডনার দায়ানঘিরাং জানিয়েছেন, দাভাও দে ওরো প্রদেশের সোনার খনি নামে পরিচিত শহর মনকায়োর থেকে দূরবর্তী একটি পাহাড়ি গ্রামে ভূমিধসের ঘটনায় ৫ থেকে ১০ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
তিনি বলেন, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আরও ভূমিধসের আশঙ্কায় উদ্ধারকারীরা বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে আরও হতাহতের সন্ধানে তাদের অনুসন্ধান বন্ধ করে দেয়। শুক্রবার থেকে ফের তল্লাশি ও উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে।
দয়ানঘিরাং টেলিফোনে বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, 'ভূমিধসের সময় তারা ওই বাড়িতে প্রার্থনা করছিলেন। এটা দুঃখজনক হলেও বাস্তবতা।’
তিনি বলেন, ভূমিধস ছাড়াও কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে নিচু গ্রামগুলোও প্লাবিত হয়েছে এবং আরও দুটি প্রদেশের ছয় হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনে বন্যা-ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৭
স্থানীয় আবহাওয়ার পূর্বাভাসদাতারা এটিকে শিয়ার লাইন বলে অভিহিত করেছেন- অর্থাৎ এটি সেই কেন্দ্র যেখানে উষ্ণ এবং ঠান্ডা বাতাস মিলিত হয়। ফিলিপাইনের দ্বীপপুঞ্জে প্রতি বছর বিশেষ করে জুন মাসে শুরু হওয়া বর্ষা মৌসুমে অন্তত ২০টি ঝড় ও টাইফুন আঘাত হানে।
২০১৩ সালে ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন হাইয়ানের আঘাতে ৭ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত বা নিখোঁজ হয়। এতে পুরো গ্রামে ধস নামে, জাহাজ ভেসে যায় এবং মধ্য ফিলিপাইনে ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনে বন্যায় ৫১ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ১৯
বলিভিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৭
বলিভিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৭ জন নিহত ও ৩ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) পশ্চিমাঞ্চলীয় অরুরো বিভাগের চাল্লাপাতা শহরের কাছে দু’টি গণপরিবহন (বাস ও ভ্যান) মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বলেছে, নিহতদের মধ্যে ৬ জন ভ্যানে ছিলেন, অন্যজন বাসের যাত্রী। ভ্যানটি সড়কের বিপরীত পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তারিজা থেকে লা পাজগামী বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্থানীয় টেলিভিশনে প্রচার করা ছবিতে দেখা যায়, ধাক্কায় যাত্রীবাহী ভ্যানটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং বাসের সামনের অংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দুর্ঘটনার কারণ জানার জন্য তদন্ত চালাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন।
আরও পড়ুন: খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় যুবক নিহত
নাটোরে সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রী-স্বামী নিহত
কলম্বিয়ায় ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪
কলম্বিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে ভূমিধসে শনিবার নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
শুক্রবার কুইবদো ও মেডেলিন শহরের সংযোগকারী পার্বত্য এলাকার একটি ব্যস্ত পৌর সড়কে ভূমিধসের ঘটনা ঘটে।
ন্যাশনাল ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইউনিট প্রাথমিকভাবে বিবৃতিতে জানিয়েছে, অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, অন্তত আহত ৩৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চোকো গভর্নরের কার্যালয় থেকে নতুন মৃত্যুর সংখ্যা জানানো হয়েছে, যেখানে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান সমন্বয়ের জন্য একটি সমন্বিত কমান্ড পোস্ট তৈরি করা হয়েছে। বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, ১৭টি লাশ শনাক্ত করা হয়েছে এবং কর্মকর্তারা আরও ১৭ জনকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন।
প্রসিকিউটর অফিস নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুন: ভারতের শিমলায় ভূমিধসে ২১ জনের মৃত্যু: মুখ্যমন্ত্রী সুখু
এর আগে কলম্বিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সিয়া মার্কেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেন, ভূমিধসে আটকা পড়াদের খোঁজে তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে।
হতাহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু রয়েছে বলে তিনি জানান। তবে তিনি কোনো সংখ্যা উল্লেখ করেননি।
কী কারণে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে তা নির্দিষ্ট করে জানায়নি রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইউনিট। তবে শুক্রবার রাতে প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, ওই এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে উদ্ধার কাজ পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়েছে।
প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো শুক্রবার এক্সে বলেন, তার সরকার এই 'ভয়াবহ ট্র্যাজেডিতে' প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দেবে।
আরও পড়ুন: ভারতের উত্তরাখণ্ডে ভূমিধসে ৫ তীর্থযাত্রী নিহত
ভারতে ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭
পাপুয়া নিউ গিনির দুই বড় শহরে দাঙ্গা, নিহত ১৫
পাপুয়া নিউ গিনির দুই বৃহত্তম শহরে দাঙ্গা ও লুটপাটের ঘটনায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবারও (১১ জানুয়ারি) এই দাঙ্গা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ করেছে দেশটির প্রশাসন।
এর আগে বুধবার(১০ জানুয়ারি) দেশটির রাজধানী পোর্ট মোরেসবিতে শত শত পুলিশ কর্মকর্তা, সৈন্য, কারাকর্মী ও সরকারি কর্মচারীরা বেতন বিরোধের প্রতিবাদে তাদের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পর এই দাঙ্গা শুরু হয়।
পাপুয়া নিউ গিনি সরকার বেতন কমানোর জন্য প্রশাসনিক ত্রুটিকে দায়ী করেছে।
একই ধরনের দাঙ্গায় দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লায়েও দাঙ্গায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন জানিয়েছে, পোর্ট মোরেসবি ও লে-তে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার আরও ১৮০ জন প্রতিরক্ষাকর্মী পোর্ট মোরেসবি থেকে পালিয়ে যান। উচ্চ বেকারত্ব ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে দেশটিতে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
পাপুয়া নিউ গিনির প্রধানমন্ত্রী জেমস মারাপে বলেছেন, পোর্ট মোরেসবি 'চাপ ও অস্থিরতার মধ্যে' ছিল, তবে সহিংসতা হ্রাস পেয়েছে।
আরও পড়ুন: ইকুয়েডরে কারাগারে ভয়াবহ দাঙ্গায় নিহত ৬৮
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মারাপে বলেন, ‘গতকাল শহরে পুলিশ কাজ না করায় মানুষ অরাজকতা শুরু করে। তবে সবাই নয়, আমাদের শহরের কিছু অংশের লোকজন। আজ সকাল পর্যন্ত যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, শহরে উত্তেজনা কমেছে।’
ব্যবসায়ীরা ধ্বংসপ্রাপ্ত অংশ মেরামত করার কারণে বৃহস্পতিবার অনেক দোকানপাট ও ব্যাংকিং সেবা বন্ধ ছিল।
পাপুয়া নিউ গিনি একটি বৈচিত্র্যময়, উন্নয়নশীল দেশ। এখানে বেশিরভাগ জীবিকা নির্বাহকারী কৃষক। দেশটিতে প্রায় ৮০০টি ভাষায় কথা বলা হয়। এটি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশে অবস্থিত। ১ কোটি মানুষ নিয়ে এটি অস্ট্রেলিয়ার পরে সবচেয়ে জনবহুল দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ। অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যা ২ কোটি ৬০ লাখ।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তার সরকার তার নিকটতম প্রতিবেশীর কাছ থেকে সাহায্যের জন্য কোনো অনুরোধ পায়নি।
আরও পড়ুন: গুজরাট দাঙ্গা: ১১ দণ্ডপ্রাপ্ত ধর্ষকের মুক্তির বিরুদ্ধে ভারতে বিক্ষোভ
গত মাসে পাপুয়া নিউ গিনি ও অস্ট্রেলিয়া একটি দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা চুক্তি সই করেছে।
আলবানিজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘পোর্ট মোরেসবিতে কী ঘটছে সেখানকার আমাদের হাইকমিশন তার উপর খুব নিবিড় নজর রাখছে এবং অস্ট্রেলিয়ানরা পর্যবেক্ষণে আছে।’
পাপুয়া নিউ গিনি প্রত্যন্ত অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান উপজাতীয় সহিংসতা এবং নাগরিক অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে লড়াই করছে এবং এর পুলিশের সংখ্যা ৬ হাজার কর্মকর্তা থেকে বাড়িয়ে ২৬ হাজার করার দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য রয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলে কারাগারে দাঙ্গায় নিহত ৫