এলোমেলো ফুটবলে গতবারের ফাইনালিস্ট ব্রাজিলকে যেন চেনাই গেল না! ম্যাচজুড়ে উরুগুয়েকে গোল করতে না দিলেও টাইব্রেকারে গিয়ে হারল তারা। এর ফলে সেলেসাউদের কাঁদিয়ে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে উঠে গেল মার্সেলো বিয়েলসার শিষ্যরা।
যুক্তরাষ্ট্রের আলেজায়ান্ট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকালে ব্রাজিলের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের শেষ ম্যাচটি টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে জিতেছে উরুগুয়ে।
নির্ধারিত সময়ের শেষের প্রায় ২০ মিনিট ১০ জন নিয়ে খেলেও ব্রাজিলকে আটকে রাখে উরুগুয়ে। তবে নিজেরাও গোল করতে না পারায় গোলশূন্য সমতায় শেষ হয় নির্ধারিত ৯০ মিনিট। এরপর কোপার নিয়ম অনুযায়ী সরাসরি টাইব্রেকারে চলে যায় ম্যাচ।
টাইব্রেকারে ব্রাজিলের প্রথম শটটিই ঠেকিয়ে দেন উরুগুয়ের গোলরক্ষক সের্হিও রচেত। এরপর দগলাস লুইসের তৃতীয় শটটি পোস্টে লেগে ফিরে আসে। অপরদিকে, উরুগুয়ের হোসে মারিয়া হিমেনেসের চতুর্থ শটটি ব্রাজিল গোলরক্ষক আলিসন বেকার ঠেকিয়ে দিলেও ফেদেরিকো ভালভার্দে, রদ্রিগো বেন্তাঙ্কুর, জর্জিয়ান দে আরাসকায়েতা ও মানুয়েল উগার্তে পান জালের দেখা। ফলে ৪-২ ব্যবধানে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেন আরাউহো-ভালভার্দেরা।
এদিন বল দখলের লড়াইয়ে আধিপত্য (৬০ শতাংশ) বিস্তার করলেও গোলের সুযোগ তৈরিতে বেশ পিছিয়ে ছিল দরিভাল জুনিয়রের শিষ্যরা। উরুগুয়ের ১১টি শটের বিপরীতে তাদের শট ছিল ৭টি। এরমধ্যে অবশ্য ব্রাজিলের তিনটি শট লক্ষ্যে থাকলেও উরুগুয়ের ছিল মাত্র একটি।
তবে লাতিন আমেরিকার ফুটবলের বৈশিষ্ট্য বজায় ম্যাচে মোট ৪১টি ফাউল করেছে দুইদল, যার মধ্যে উরুগুয়ের ২৬টি।
আরও পড়ুন: মেসির পেনাল্টি মিসের পর দিবুর কীর্তিতে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা
এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই নিজেদের ছায়া হয়ে ছিল নান্দনিক ফুটবলের দেশ ব্রাজিল। অন্যদিকে, শুরু থেকেই সেলেসাউদের রক্ষণ ভাঙার চেষ্টা শুরু করে উরুগুয়ে। তবে বেশ কয়েকবারের চেষ্টায় তারা সফল না হলে পরে নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে আক্রমণে উঠতে শুরু করে ব্রাজিল।
ম্যাচের ত্রয়োদশ মিনিটে বাঁ পাশে ফ্রি কিক থেকে রাফিনিয়ার নেওয়া শট রক্ষণ দেওয়ালে লেগে বাইরে চলে যায়। এর পাঁচ মিনিট পরই কর্নার থেকে পাওয়া বলে দূরপাল্লার জোরালো শট নেন ফাকুন্দো পেলিস্ত্রি। তবে মার্কিনিয়োসের মাথায় লেগে তা গোলপোস্টের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়।
খেলার আধঘণ্টা হওয়ার কিছুক্ষণ আগে গোলের ভালো সুযোগ তৈরি করে ব্রাজিল। তবে ডি বক্সের মধ্যে বল পেয়েও শট না নিয়ে রাফিনিয়ার উদ্দেশ্যে বল বাড়ান এন্দ্রিক। আর সঙ্গে সঙ্গে ছুটে গিয়ে দলকে বিপদমুক্ত করেন উরুগুয়ের এক ডিফেন্ডার।
ম্যাচের ৩৩তম মিনিটে দুঃসংবাদ পায় উরুগুয়ে। চোট পেয়ে চোখের জলে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন উরুগুয়ের বার্সেলোনা ডিফেন্ডার রোনালদ আরাউহো। চিকিৎসা নিয়ে মাঠে ফিরলেও খেলা আর চালিয়ে যেতে পারেননি তিনি। এরপর তার বদলি হিসেবে দলটির রক্ষণ সামলাতে নামেন আতলেতিকো মাদ্রিদের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার হোসে মারিয়া হিমেনেস।
খেলা ফের শুরু হওয়ার পরপরই গোলের সুযোগ তৈরি করে উরুগুয়ে। তবে বক্সের ভেতরে পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে সতীর্থের পাওয়া ক্রসটি গোলের বাইয়ে দিয়ে হেড দেন দারউইন নুনিয়েস।
পরের মিনিটে মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ে প্রতিপক্ষে বক্সে ঢুকে পড়েন রাফিনিয়া। এরপর তার ডান পায়ের জোরালো শট বাঁ দিয়ে ঝাঁপিয়ে কোনোমতে ঠেকিয়ে দেন উরুগুয়ের গোলরক্ষক রচেত।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে রাফিনিয়ার আরও একটি শট থামান রচেত। দুই দল মিলিয়ে এই দুটি শটই প্রথমার্ধে লক্ষ্যে ছিল।