স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে অবকাঠামো নির্মাণে সকল আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করার বিকল্প নেই। সেজন্য একটি এলাকায় পর্যাপ্ত রাস্তাঘাট, জলাধার ও উন্মুক্ত স্থান থাকতে হবে।
তিনি বলেন, বসবাসযোগ্য ঢাকা নির্মাণে এই শহরের জনসংখ্যা এবং তাদের জন্য সুযোগ সুবিধা নির্ধারণ করতে হবে। অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপ এবং অপর্যাপ্ত নাগরিক সুবিধার কারণে ঢাকা শহর দিন দিন বসবাসের যোগ্যতার মাপকাঠিতে নিম্নগামী।
মন্ত্রী বলেন, সরকারি সংস্থাসমূহের সঠিক সমন্বয়ের সঙ্গে অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে জনগণের সচেতনতাও জরুরী।
আরও পড়ুন: স্মার্ট সিটি গড়তে প্রয়োজন স্মার্ট নাগরিক: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
এ সময় তিনি বলেন, সবাই স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করলে আমরা অগ্নিদুর্ঘটনা রোধ করতে পারব।
তিনি বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত ‘বারবার অগ্নিদুর্ঘটনার কারণ: প্রতিরোধে করণীয়’- শীর্ষক নগর সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, আলোচক হিসেবে ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, ঢাকা ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী কামরুল হাসান, ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক লে. কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ।
এতে সভাপতিত্ব করেন নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি অমিতোষ পাল এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ প্লানার্সের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান।
মন্ত্রী বলেন, একটি বিল্ডিং বা মার্কেট নির্মাণের সময় বিশেষজ্ঞ হিসেবে আর্কিটেক্ট থেকে শুরু করে ইঞ্জিনিয়ার সবাই পরিকল্পনা করে অবকাঠামো নির্মাণ করেন। নির্মাণের সময় যদি সঠিক নিয়ম মেনে অবকাঠামো নির্মাণ করা না হয় তাহলে সেখানে অগ্নি ঝুঁকি অবশ্যম্ভাবী।
তিনি বলেন, যে কোন ধরনের অবকাঠামো নির্মাণে আইনের ব্যতয় হলে যিনি আইন ভঙ্গ করেছেন তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।সেক্ষেত্রে ইঞ্জিনিয়ার, আর্কিটেক্ট বা ভবনের মালিক যার অবহেলায় অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটবে তাকেই শাস্তির আওতায় আনতে হবে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
এ সময় অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে নিয়মিত মহড়া ও প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেন তিনি।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, অবকাঠামো নির্মাণে ইলেকট্রিক তার থেকে শুরু করে যে ধরনের সামগ্রী ব্যবহার করা হয় তার গুণগত মান নিশ্চিত কল্পে বিএসটিআই সহ অন্যান্য সংস্থাগুলোকে নজরদারি বাড়াতে হবে এবং যথাযথ গুণগতমান অক্ষুন্ন রেখে তা বাজারজাত করতে হবে।
এ সময় তিনি সিগারেটের আগুন থেকে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। আগুনে পুড়ে জানমাল সবকিছু বিনষ্ট হওয়ার পরে আফসোস করা থেকে অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রথম থেকেই সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান ঢাকার সকল ভবনের বিস্তারিত জরিপ এবং ডিজিটাল তথ্যব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, অগ্নিদুর্ঘটনার প্রতিরোধে ইমারত নির্মাণ,জলাধার এবং ভূমির যথাযথ পরিকল্পনা ও ব্যবহার বাস্তবায়ন জরুরি।
আরও পড়ুন: অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ের সঙ্গে নাগরিক সচেতনতা জরুরি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যক্রম চলবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী