মাইক্রোক্রেডিটের (ক্ষুদ্রঋণ) নামে সারাদেশে সুদের ব্যবসা পরিচালনাকারী অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রণয়ন করার জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
রুলে বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি লাইসেন্স না থাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সমবায় সমিতি ও মাইক্রোফাইন্যান্স ইনস্টিটিউশনের কার্যক্রম তদারকি ও তত্ত্বাবধানে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
অর্থসচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথোরিটিসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। পরবর্তী আদেশের জন্য আদালত আগামী ৩০ নভেম্বর দিন রেখেছেন।
পড়ুন: সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতি কেন অবৈধ নয় : হাইকোর্ট
আদেশে বলা হয়েছে, অনুমোদনহীন ক্ষুদ্র ঋণের কারবার নিয়ে তদন্ত করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করতে হবে। আদেশের অনুলিপি পাওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে এ কিমিটিকে আদালতে প্রতিবেদন দিতে হবে। তদন্তের সময় যদি অননুমোদিত বা লাইসেন্স ছাড়া ক্ষুদ্র ঋণ কারবারী সমবায়, বা কোনো অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়, তাহলে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সেসব প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় বন্ধের পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে আদালত ৪৫ দিনের মধ্যে স্থানীয় ঋণ বিতরণকারীদের একটি তালিকা আদালতে দাখিল করতে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথোরিটিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
সারা দেশে চড়া সুদে ঋণদাতা মহাজনদের চিহ্নিত করার নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক ৭ সেপ্টেম্বর রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে সৈয়দ সায়েদুল হক নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর উস সাদিক। ২০ সেপ্টেম্বর শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ২৭ সেপ্টেম্বর (আজ) আদেশের জন্য দিন রাখেন। সে অনুযায়ী আজ আদেশ হয়।
আদেশের পর ব্যারিস্টার সুমন বলেন, সারাদেশের অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে চড়াহারে সুদ নেয়া হয়। এদের কোন অনুমোদন নেই। তারা কোন ক্ষুদ্রঋণ কর্তৃপক্ষের অধীন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান অধীন বা ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের নামে নিবন্ধিত নয়। এসব অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের চড়া সুদ দিতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়া, কিডনি বিক্রি করাসহ নানা অমানবিক ঘটনা আমরা দেখি। পত্র-পত্রিকায় এসব বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট করেছিলাম। আদালত রুল ও আদেশ দিয়েছেন।
পড়ুন: মুনিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যা: শর্তসাপেক্ষে রিপনের হাইকোর্টে আগাম জামিন