মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, অপরাধীদের একটি ডেটাবেস হয়েছে। সেগুলো দেখে ঘৃণ্য অপরাধে জড়িতদের গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হবে।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে তিনি এ তথ্য জানান। এ সভায় তিনি সভাপতিত্ব করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের সুযোগ্য নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে।
হিন্দুধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পুজা শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে। এর আগে ঈদুল আজহাও আল্লাহর রহমতে সফলভাবে শেষ হয়েছে। অতীতের মতো এবারও তেমন যানজট ছিল না।
তবে রোহিঙ্গাদের নিয়ে উৎকণ্ঠ রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী বলেন, কারণ সীমান্ত এলাকায় তাদের অপতৎপরতা নিয়ে সরকার সচেতন আছে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে কিছুসংখ্যক উচ্ছৃঙ্খল লোক আছে। যারা মাদক কারবারে জড়িত। মাদক আনা, পাচার করা বা সরবরাহ করছে তারা। সেগুলোর ওপর আরও বেশি কঠোর নজরদারি রাখতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: তামাক নিয়ন্ত্রণে আইন শক্তিশালী করতে পদক্ষেপ নেবে সরকার: মোজাম্মেল হক
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে রাত্রিকালীন টহল আরও বাড়াতে ও মাদকের বিরুদ্ধে শূন্য সহনীয় হতে বলা হয়েছে। সীমান্ত দিয়ে মাদক আসা বন্ধে কঠোর হতে হবে। যাতে মাদক দেশের ভিতরে আসতে না-পারে, সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। কঠোর নজরদারি রাখতে হবে।
হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়াদের নিয়ে তিনি বলেন, আপনারা জানেন, কিছু লোক এরমধ্যে হঠাৎ উধাও হয়ে গেছে। ধর্মের নামে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মতৎপরতা ও উন্মাদনা সৃষ্টিতে জড়িত সংগঠনের সঙ্গে তারা জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে যাদের ধরা হচ্ছে, তারাও স্বীকার করে নিয়েছে। সেগুলোর উৎস খুঁজে বের করতে চেষ্টা চলছে। এরমধ্যে অনেকটা শনাক্ত হয়েছে।
যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
মোজাম্মেল হক বলেন, ভেজাল ওষুধপত্র কিংবা খাদ্যদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত বাড়ানো হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিশেষ করে সাইবার অপরাধীরা বিদেশে বসে অপপ্রচার করছে। মিথ্যাচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এসব অপরাধী দেশের বাইরে থাকে বলে তাদের সবসময় নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তাদের বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নেয়া যায়, কীভাবে তাদের শনাক্ত করা যায়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়টা আমরা গভীরভাবে দেখবো।
বিএনপি মাঠে নামছে, সামনের দিনগুলোতে তাদের কীভাবে মোকাবিলা করা হবে; জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এখানে রাজনৈতিক দলগুলো কর্মসূচি দিবেই। তারা মিটিং, মিছিল ও জনসভা করবে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। গুরুত্ব দেয়ারও কিছু নেই। কিন্তু আমাদের সেক্রেটারি বলেছেন, আপনারা মিছিল মিটিংয়ে জাতীয় পতাকা নিয়ে আসেন, তা ভালো কথা। জাতীয় পতাকার যদি নিয়ম মতো কোনো লাঠির মাথায় বেঁধে আনা হয়, তা ঠিক আছে। কিন্তু তা যদি গজারি কিংবা মোটা বাঁশের মাথায় বেঁধে নিয়ে আসেন, তখন তা মানানসই মনে হবে না, মনে হবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
পার্বত্য অঞ্চলে সেনাবাহিনী ও র্যাব অভিযান চালাচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে; তা নিয়ে আপনাদের কিছু জানানো হয়েছে কিনা; প্রশ্নে তিনি বলেন, বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন। তারা কারা-কোত্থেকে এসেছে, তা তদন্ত করে জানা যাবে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে কিছু বলা যাবে না। আনুমানিক কোনো কথা বলার সুযোগ নেই।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া কখনো মুক্তিযোদ্ধা হতে পারেন না:মোজাম্মেল হক
অর্থনৈতিক মুক্তি ছাড়া স্বাধীনতা পরিপূর্ণ হয় না: মোজাম্মেল হক