জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মঙ্গলবার ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের জন্য ৩০ হাজার আবাসন নির্মাণের জন্য ৪ হাজার ১২৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্পসহ মোট ছয়টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে।
একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকের সাপ্তাহিক সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এবং একনেকের অন্য সদস্যরা এনইসি ভবন থেকে যুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গ্রামীণ পানি সরবরাহসহ ৫ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প জানুয়ারিতে একনেকে উত্থাপন: মন্ত্রী
সভা শেষে এক ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন, ‘আজ একনেক প্রায় ৫ হাজার ৬১৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ছয়টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে (তিনটি সংশোধিত প্রকল্পের শুধুমাত্র অতিরিক্ত ব্যয় এখানে ধরা হয়েছে)।’
তিনি বলেন, এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৫ হাজার ৫১৮ কোটি ৮৭ লাখ, সংস্থাগুলোর নিজস্ব অর্থায়ন ৪২ কোটি ৭ লাখ এবং বিদেশি ঋণ ৫৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা।
প্রকল্পগুলোর মধ্যে, ‘অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ’ প্রকল্পটি ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে এবং ৪,১২২.৯৮৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে সরকারি তহবিল থেকে।
অনুমোদিত নতুন প্রকল্পগুলোর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ’ প্রকল্প ৪ হাজার ১২২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্পের মূল লক্ষ্য অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা (মহিলা মুক্তিযোদ্ধা), বিধবা ও শহীদ ও প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য ‘বীর নিবাস’ (আবাসন) নির্মাণ করা।
মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই আবাসনগুলো তাদেরকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেয়া হবে।
প্রকল্পের প্রধান কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে ৩০ হাজার বীর নিবাস নির্মাণ, অফিস সরঞ্জাম সংগ্রহ, আউটসোর্সিং পরিষেবা, আসবাবপত্র এবং বিদ্যুত সরঞ্জাম।
আরও পড়ুন: বহুল কাঙ্ক্ষিত তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
আরও দুটি নতুন প্রকল্প হলো ‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ’ যার আনুমানিক ব্যয় ৪৪৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা এবং ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘পিরোজপুর জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’।
এছাড়া সংশোধিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘রাজশাহী কল্পনা সিনেমা হল তেকৈ তালাইমারী মোড় পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্পটি প্রথম সংশোধন অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল ১৬৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা এবং আজকে সংশোধনের পর হলো ১২৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘শরীয়তপুর জেলার জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলায় পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধন অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল ১ হাজার ৯৭ কোটি ২১ লাখ টাকা। এখন খরচ বৃদ্ধি করে করা হয়েছে ১ হাজার ৪১৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা এবং বিদ্যুৎ বিভাগের ‘কন্সট্রাকশন অব নিউ ১৩২/৩৩ কেভি অ্যান্ড ৩৩/১ কেভি সাবস্টেশন আন্ডার ডিপিডিসি’ প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধন অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রথম সংশোধনীতে এর ব্যয় বাড়িয়ে করা হয়েছিল ২ হাজার ৩৮৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। আজকে দ্বিতীয় সংশোধনীতে করা হয়েছে ২ হাজার ৪৭৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।