ঢাকার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের দাতা সদস্য খন্দকার মোশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের এক ছাত্রীকে প্রলুব্ধ করে তার পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে বিয়ে করার অভিযোগে করা মামলায় বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট।
তবে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে বোর্ড গঠনের মাধ্যমে ওই ছাত্রীর বয়স নির্ধারণ করতে বলেছেন আদালত। বয়স নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রীকে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সেফ কাস্টডিতে (নিরাপদ হেফাজত) রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ওই মামলায় আগাম জামিন চেয়ে মুশতাকের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেওয়া হয়।
এর আগে ওই মামলায় আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন মুশতাক, গতকাল হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ আবেদনটি ফেরত দেন। এই অবস্থায় মুশতাকের জামিন আবেদন ওই বেঞ্চে জমা দেন তার আইনজীবী। আজ বিকালে আবেদনের উপর শুনানি হয়।
জামিন আবেদনের শুনানি থাকায় আদালতে হাজির হন তিনি।
আদালত ছাত্রীরও বক্তব্য শোনেন। তিনি প্রাপ্তবয়স্ক ও স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন বলে আদালতে বলেন।
আরও পড়ুন: দুর্নীতির অভিযোগে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষকে দুদকের তলব
আদালত বলেছেন, আইডিয়ালের ছাত্রীর বয়স নিয়ে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। তাই তার বয়স নির্ধারণ করা জরুরি। বয়স নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত ওই ছাত্রী নারী ও সমাজ সেবা অধিদপ্তরের অধীনে সেইফ হোমে (নিরাপদ হেফাজতে) থাকবে।
এসময় বিচারক আইডিয়ালের সেই ছাত্রীকে জিজ্ঞেস করেন, আপনাকে কোনো ধরনের ভয়ভীতি কেউ দেখিয়েছে কি না, কোনো ভয় পেলে আমরা আপনাকে খাস কামরায় নিয়ে জিজ্ঞেস করি।
এসময় আইডিয়ালের সেই ছাত্রী বলেন, আমি সজ্ঞানে স্বেচ্ছায় তাকে (খন্দকার মুশতাক আহমেদকে) বিয়ে করেছি। আমাকে কেউ কোনোপ্রকার ভয়-ভীতি দেখায়নি।
এর আগে ১ আগস্ট কলেজছাত্রীকে প্রলোভন ও জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে খন্দকার মুশতাক আহমেদকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক বেগম মাফরোজা পারভীনের আদালতে এ মামলা করেন কলেজছাত্রীর বাবা।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তার মেয়ে (ভুক্তভোগী) মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। আসামি মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসতেন এবং ভুক্তভোগীকে ক্লাস থেকে অধ্যক্ষের কক্ষে ডেকে আনতেন। খোঁজ-খবর নেওয়ার নামে আসামি ভুক্তভোগীকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতেন। কিছুদিন পর আসামি মুশতাক ভুক্তভোগীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ভুক্তভোগীকে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে এবং তাকে ও তার পরিবারকে ঢাকা ছাড়া করবে বলে হুমকি দেন।
আরও পড়ুন: মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ওড়না পরা নিষিদ্ধ নয়: প্রধানমন্ত্রী
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইকবালের বহিষ্কারাদেশ স্থগিত হাইকোর্টের