আশুলিয়ায় গুজব ছড়িয়ে সহিংসতা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
উপদেষ্টা বলেন, আশুলিয়ায় পোশাক কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে কাজ করে যাচ্ছিল।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভায় সাংবাদিকদের তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, প্রথম থেকেই দেখছি, সুনির্দিষ্ট কিছু মানুষ উসকানি দিয়ে আসছে। রবিবারও যে ঘটনা ঘটেছে, সেটার মূল ঘটনা সবার জানা দরকার। একজন শ্রমিক সেখানে নিহত হয়েছেন, আমরা দুঃখিত। আমাদের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে ১৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একটি গুজবের ভিত্তিতে রবিবার ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল। গুজব ছড়ানো হয়েছিল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একজনকে ধর্ষণ (রেপ) করেছে এবং দুইজনকে খুন করে লাশ ফেলে রেখেছে। এভাবে কারখানাগুলো থেকে শ্রমিকদের নামিয়ে আনা হয়েছিল’।
আরও পড়ুন: শ্রম-সংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন: শ্রম উপদেষ্টা
উপদেষ্টা আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি ভাঙচুরসহ তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে শ্রমিকরা। কিন্তু তখনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু শ্রমিকদের মধ্য থেকে অনুপ্রবেশকারী গুলি ছুড়েছিল প্রথম। প্রথম গুলিটি শ্রমিকদের ভেতর থেকে দুস্কৃতকারীরা ছুড়েছিল। সেখান থেকে গোলাগুলির সূত্রপাত হয়। দুঃখজনকভাবে সেখানে আমাদের একজন শ্রমিক নিহত হন। আরও সাতজন আহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও ১৩ সদস্য আহত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, আমরা এই পরিস্থিতি কখনোই চাই না, শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করাতে চাই না। আশুলিয়ায় এতদিন ধরে আন্দোলন চলছে, সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রেখে এসেছে। মালিকদের সঙ্গে কথা বলে কীভাবে বেতন আদায় করা যায়, তারা সেই চেষ্টা করছে। সেনাবাহিনীও একই কাজ করেছে।
তিনি আরও বলেন, ২৪ সেপ্টেম্বর শ্রমিক-মালিকের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, যদি শ্রমিকদের বেতন না দেওয়া হয়, আমরা মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এ বিষয়ে সোমবার আলোচনা হয়েছে। যেসব কোম্পানির মালিক দীর্ঘদিন বেতন দিচ্ছেন না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আশুলিয়ার সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুই-তিনটি কারখানায় বেতন না হওয়ার কারণে সোমবার শ্রমিকরা বাইপাইলে সড়ক অবরাধ করেছেন। কারখানার মালিকদের খুঁজছি, কিন্তু তারা পলাতক। ব্যাংকেও তারা প্রচুর ঋণগ্রস্ত। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
সেই আগের মতোই গুলি করে মানুষ হত্যার মতো ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গুলিটা এসেছিল শ্রমিকদের ভেতরে অনুপ্রবেশ করা কারও পক্ষ থেকে। এরইমধ্যে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে।
এছাড়া তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
আরও পড়ুন: কাজে যোগদান না করা পুলিশ সদস্যদের আইনের আওতায় আনা হবে: উপদেষ্টা
জুলাই-আগস্টে ঋণ গ্রহণের চেয়ে বেশি পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ: ইআরডি