ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (ইইউবি) ট্রাস্টি বোর্ড ও প্রশাসন নিয়ে সম্প্রতি বিভ্রান্তিকর তথ্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার ছড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে শিক্ষার পরিবেশ ও প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে দাবি তাদের।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ ফরহাদ খান জানান, তার পিতা মকবুল আহমেদ পূর্ববর্তী ট্রাস্টি বোর্ড থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। এরপর তারা নতুন ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করে তা যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরে (আরজিএসসি) দাখিল করেন। আরজেএসসি থেকে রেকর্ডকৃত অনুলিপি পাওয়ার পর জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসআই) ছাড়পত্রও সংগ্রহ করা হয়।
পরে সংশ্লিষ্ট সব কাগজপত্র বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) জমা দেওয়া হয়। ফলে বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ড ও চেয়ারম্যান সম্পূর্ণভাবে বৈধ ও আইনানুগ বলে দাবি করেন তিনি।
আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে আহমেদ ফরহাদ খান জানান, সাবেক চেয়ারম্যান তাদের বোর্ডের বিরুদ্ধে একাধিক নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন। প্রথমে যুগ্ম জেলা জজ আদালতে আবেদন খারিজ হয়। পরে জেলা জজ আদালতে আপিল করলেও তা-ও খারিজ হয়।
এরপর হাইকোর্টে দেওয়ানি পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হলে আদালত শুধু রুল জারি করে এবং স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। সেই আদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে চ্যালেঞ্জ করলে, আপিল বিভাগ তা স্থগিত করেন। অর্থাৎ, প্রতিটি আদালতের আদেশই এখন পর্যন্ত তাদের অনুকূলে এসেছে। মামলাটি বর্তমানে হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। ট্রাস্টি বোর্ড ও চেয়ারম্যান নিয়োগ এখন বিচারাধীন বিষয়ে পরিণত হয়েছে এবং এতে কোনো হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই বলে জানান তিনি।
বিভিন্ন অভিযোগ প্রসঙ্গে আহমেদ ফরহাদ খান বলেন, ‘গত ৮ মাস ধরে আমরা আইনানুগভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। অথচ আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা ১৫ বছর আগের, যখন আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় কোনোভাবেই যুক্ত ছিলাম না।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি পক্ষ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে অনৈতিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা তাদের বিরুদ্ধে একাধিক প্রমাণ সংগ্রহ করেছি এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলীম দাদ বলেন, ‘মো. মকবুল আহমেদের নিযুক্ত কিছু বহিরাগত ব্যক্তি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে, যার একমাত্র উদ্দেশ্য হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আহ্বান জানিয়ে আহমেদ ফরহাদ খান বলেন, বিভ্রান্তিকর তথ্য ও অপপ্রচারে না জড়িয়ে, যাচাই-বাছাই করে সঠিক তথ্য প্রচার করা উচিত।