ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালামের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও ব্যাংকিং বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দায়ের করেন এম শাহবুব আলম নামে একজন চাকরিপ্রার্থী এবং ওই বিভাগের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক নীলকমল পাল ও উপসহকারী পরিচালক সৈয়দ মাইদুল ইসলাম নামে দুই সদস্যের একটি দল ইবি উপাচার্যের বাসায় গিয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও অবৈধ লেনদেনের অভিযোগের তদন্ত শুরু করে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদকের কুষ্টিয়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নীলকমল পাল বুধবার ইউএনবিকে বলেন, তারা ইবির ভিসির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন: ইবিতে আবারও ছাত্রলীগ কর্মীর হাতে শিক্ষার্থী লাঞ্ছিত
উপাচার্যের ফাঁস হওয়া অডিও কথোপকথন, মেগা প্রজেক্ট ও তার আর্থিক অনিয়মসহ বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখছেন বলে জানান। তবে তদন্তের স্বার্থে তিনি এ বিষয়ে আর বেশি কিছু বলেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক নিয়োগের জন্য ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া ক্যাম্পাসে নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা বসেন।
চূড়ান্ত প্রার্থী বাছাইকে কেন্দ্র করে বোর্ড সদস্যদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হওয়ায় বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম বখতিয়ার হাসান নির্বাচন বোর্ড থেকে সরে দাঁড়ান।
পরে বিভাগের চেয়ারম্যানের সই ছাড়াই বোর্ড দুই প্রার্থীকে বিভাগের প্রভাষক হিসেবে নির্বাচন করে।
সিলেকশন বোর্ড সংক্রান্ত অডিও কথোপকথন ফাঁসসহ বিভিন্ন অভিযোগে অধিদপ্তরের চাকরিপ্রার্থী শাহবুব আলম ২৭ ফেব্রুয়ারি দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অভিযোগ করেন।
অভিযোগে বলা হয়, উপাচার্য ঘুষ ও অবৈধ লেনদেনের বিনিময়ে বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দেন।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত শিক্ষক জোট শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এম মাহবুবর রহমান বলেন, বাছাই বোর্ডের চূড়ান্ত ট্যাবুলেশন শিটে বিভাগীয় চেয়ারম্যানের সই ছাড়া কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যাবে না। ইবি ভিসি অর্থ ও ব্যাংকিং বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ করেছেন অবৈধভাবে।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে যৌন হয়রানির অভিযোগে ইবির ২ শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
শাহবুব আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ইবি ভিসি বেআইনি ও অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে ওই বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া বিভাগের নিয়োগ বোর্ড সংক্রান্ত ভিসি ও একজন ব্যক্তির মধ্যে কথোপকথন সম্বলিত অডিও ক্লিপ এটি প্রমাণ করেছে।’
তিনি নতুন নিয়োগ বোর্ডের দাবিও জানান।
এ বিষয়ে ইবি ভিসির মন্তব্যের জন্য মোবাইল ফোনে বারবার চেষ্টা করেও মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এর আগে, ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ জুন পর্যন্ত উপাচার্য ও বিভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে কথোপকথন সম্বলিত মোট ১৩টি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ইবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান।
আরও পড়ুন: ইবিতে শিক্ষার্থী নির্যাতন: ছাত্রলীগ নেত্রীসহ ৫ জন বহিষ্কার