বন্যায় বিধ্বস্ত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষ এখনো বেঁচে থাকার জন্য হিমশিম খাচ্ছেন। এমন সময়ে আগামী কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে এই অঞ্চলে আরেক দফা বন্যার পূর্বাভাস দিচ্ছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, আগামী কয়েকদিন সিলেট বিভাগে ভারী থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী একেএম নিলয় পাশা বলেন, ‘ভারতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে উজান থেকে আসা পানি সিলেট অঞ্চলকে প্লাবিত করতে পারে।’
এছাড়া বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (বিডব্লিউডিবি) জানিয়েছে, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম ও হিমালয় পাদ্দেশীয় পশ্চিমবঙ্গের (জলপাইগুড়ি, সিকিম) বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলাসহ উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের নিচু এলাকার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে বলে সর্বশেষ সতর্কবার্তায় জানিয়েছে সংস্থাটি।
আরও পড়ুন: বন্যায় আরও একজনের মৃত্যু, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮৮
তবে স্বাধীন আবহাওয়া গবেষণা দল বাংলাদেশ ওয়েদার অবসেরভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) জানিয়েছে, জুলাইয়ের মাঝামাঝি পরে বন্যা পরিস্থিতির আর অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
সুনামগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর ফলে সুরমা, জাদুকাটা, চিলাই, খাসিয়ামারা, চেলাসহ জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বুধবার দুপুরে সুরমা নদীর পানি ছাতক উপজেলায় বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার এবং দিরাই উপজেলায় বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে সুনামগঞ্জ শহরে নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যায় ঘরবন্দী সাড়ে ৪ লাখ শিক্ষার্থী
গত দুই দিনে সুরমা নদীর পানি ২২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও জানায় সংস্থাটি।
এদিকে সিলেট জেলায় মঙ্গলবার সকালে ও রাতে বৃষ্টি হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি আরও দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
প্রায় দুই সপ্তাহ পর সিলেটের অধিকাংশ এলাকায় বন্যার পানি নেমে গেছে। তবে সিলেটের বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর, ফেঞ্চুগঞ্জ, জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট এখনো বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে।
এসব এলাকার বাসিন্দারা এখন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
দুই দফা বন্যায় ইতিমধ্যে বোরো ও আমন ফসলের ক্ষতির পাশাপাশি কৃষি, মৎস্য ও পর্যটনসহ বিভিন্ন খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।