ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানকে গত ১৩ বছরে কত টাকা বেতন বোনাস ও অন্যান্য সুবিধা দেয়া হয়েছে, তার বিস্তারিত হিসাব আগামী ৬০ দিনের মধ্যে দাখিলের জন্য ওয়াসার বোর্ডের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
একই সঙ্গে ঢাকা ওয়াসার এই এমডিকে অপসারণে নিস্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তাকে অপসারণের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, বিগত ১৩ বছরে অতিরিক্ত বেতন-ভাতা হিসেবে ওয়াসার এমডি যে টাকা নিয়েছে তা ফেরত দেয়ার কেন নির্দেশ দেয়া হবে এবং ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন-স্কেল ও ২০১৬ সালে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা সার্কুলার অনুযায়ী বেতন-ভাতা নির্ধারণের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
তাকসিম এ খানকে এমডি পদ থেকে অপসারণে ওয়াসার পরিচালনা বোর্ডের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর পক্ষে স্থপতি মোবাশ্বের হাসান গত ৩১ জুলাই রিট আবেদনটি দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা ওয়াসার কর্মীদের উৎসাহ বোনাসে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা
রিট আবেদনে বলা হয়, ওয়াসার এমডি হিসেবে তাকসিম এ খানকে ২০০৯ সালে তিন বছরের চুক্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়। এরপর তার পারফরম্যান্স ভালো না হওয়া সত্ত্বেও তিনবার তার চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। রিটে বিধি বহির্ভূতভাবে ওয়াসার এমডি অতিরিক্ত বেতন-ভাতা নিচ্ছেন বলেও উল্লেখ করা হয়। সর্বশেষ বোর্ড সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওয়াসার এমডি’র বেতন ছয় লাখ ২৫ হাজার টাকা।
বুধবার আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়। আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ঢাকা ওয়াসা আইন ১৯৯৬ এর ২৮ (৪) ধারায় বলা আছে, ওয়াসার এমডির বেতন-ভাতা এর বোর্ড নির্ধারণ করবে। কিন্তু কত টাকা কিভাবে নির্ধারণ করা হবে সে ব্যাপারে আইনে বিস্তারিত কিছুই বলা হয়নি। তবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে ক্ষেত্রে বেতন-ভাতা নির্ধারণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় একটি সার্কুলার জারি করেছে ২০১৬ সালে। ওয়াসা সরকারের একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা। এই সংস্থার ক্ষেত্রে সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা সার্কুলার প্রযোজ্য হবে। ওয়াসা কোম্পানির মতো করে বেতন-ভাতা নির্ধারণ করে নিতে পারে না। তাছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি সরকারের ভর্তুকিতে চলে। পাশপাশি ওয়াসার এমডি হিসেবে তার পারফরম্যান্স অনেক খারাপ। ঢাকা শহরের ৭০ শতাংশ এলাকা এখনও পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধার বাইরে। চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে হলে তার পারফরম্যান্স ভালো হতে হবে। কিন্তু পারফরম্যান্স খারাপ হওয়া সত্ত্বেও তার মেয়াদ বার বার বাড়ানো হচ্ছে। তাকে অপসারণের ক্ষেত্রে বোর্ড নিষ্ক্রিয়তা দেখাচ্ছে। আদালত আমাদের বক্তব্য শুনে নির্দেশনার পাশাপাশি রুল দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: পানির দাম ৪০ শতাংশ বাড়াতে চায় ঢাকা ওয়াসা