মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় করোনার ভ্যাকসিন প্রকল্প ছাড়াও আরও ৫টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
শেরেবাংলা নগরে এনইসি’র সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা হলেও একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হন।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, ‘আজকের বৈঠকে ছয় মন্ত্রণালয়ের সাত প্রকল্প উত্থাপন করা হয়েছিল। তবে একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য বিবেচিত হয়নি।আর অনুমোদিত ছয়টি প্রকল্পের মোট আনুমানিক ব্যয় ৯ হাজার ৫৬৯.২৩ কোটি টাকা (তিনটি সংশোধিত প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় এখানে গণনা করা হয়েছে)।
আরও পড়ুন: আরও পড়ুন: ভারত থেকে যথাসময়েই ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি আরও জানান, প্রকল্পগুলোর মোট প্রাক্কলিত ব্যয়ের মধ্যে তিন হাজার ৮৬৭.৫৮ কোটি সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন এবং পাঁচ হাজার ৭০১.৬৫ কোটি টাকা বিদেশি অনুদান।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, কুষ্টিয়ায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়নি। ২০১২ সালে প্রকল্পটির কাজ শুরু হলেও এখনো কেন বাস্তবায়িত হয়নি, সে ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
করোনাভাইরাস সংক্রান্ত প্রকল্প প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, করোনার ভ্যাকসিন সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিতরণ ছাড়াও অন্যান্য বড় প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে দেশের ২৭টি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পিসিআর মেশিনের পাশাপাশি আধুনিক মাইক্রোবায়োলজি ল্যাব স্থাপন।
আরও পড়ুন: আরও পড়ুন: উদ্বিগ্ন হবার কারণ নেই, ভ্যাকসিন সময় মতোই পাওয়া যাবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
পাশাপাশি, আরটি-পিসিআর কিট, অ্যান্টিজেন কিট এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা সংক্রান্ত কিট, আইইডিসিআর এবং বাংলাদেশ ট্রপিকাল অ্যান্ড ইনফেকটিজ ডিজিজ ইনস্টিটিউট ইনস্টিটিউট (বিআইটিআইডি) চ্যাটগ্রামে বায়োসফটি লেভেল -৩ ল্যাব স্থাপন প্রকল্পের আওতায় নেওয়া হবে।
এছাড়াও প্রকল্পের আওতায় ৪৩ জেলা সদর হাসপাতালে ১০ শয্যাবিশিষ্ট নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) এবং ২০ শয্যা বিশিষ্ট বিচ্ছিন্ন ইউনিট স্থাপন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: আরও পড়ুন: সিলেট অঞ্চলের করোনার জিন বিন্যাস উন্মোচন করল শাবি
প্রকল্পের অন্যান্য বড় কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- দশটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ১০ শয্যা বিশিষ্ট আইসিইউ ইউনিট স্থাপন এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামের সংক্রামক রোগ হাসপাতালে ৫ শয্যা বিশিষ্ট আইসিইউ ইউনিট স্থাপন, পাঁচটি বন্দরের প্রবেশ পথে মেডিকেল স্ক্রিনিং ইউনিট স্থাপন, ২৭টি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সংক্রামক রোগ ইউনিট স্থাপন, ৬২টি জেলা হাসপাতালে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ইউনিট স্থাপন, ১০টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ১০টি জেলা হাসপাতালে মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র স্থাপন, ৩০টি সরকারি হাসপাতালে কেন্দ্রীয়ভাবে তরল মেডিকেল অক্সিজেন সিস্টেম স্থাপন করা।
আরও পড়ুন: আরও পড়ুন: নতুন ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ইংল্যান্ডে লকডাউন ঘোষণা
একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো- তথ্য মন্ত্রণালয়ের ‘জেলা পর্যায়ে আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ (প্রথম পর্যায়)’ প্রকল্প, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ‘সুন্দরবন সুরক্ষা’ প্রকল্প, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ‘ভূমিকম্প ও অন্যান্য দুর্যোগকালে অনুসন্ধান, উদ্ধার অভিযান পরিচালনা এবং জরুরি যোগাযোগের জন্য যন্ত্রপাতি সংগ্রহ (তৃতীয় পর্যায়)’ প্রকল্প, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘জেলা মহাসড়কগুলোর যথাযথ মান ও প্রশস্ততা উন্নীতকরণ-সিলেট জোন (প্রথমম সংশোধিত)’ প্রকল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ‘চিটাগাং সিটি আউটার রিং রোড (তৃতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্প।
এসবের মধ্যে- জেলা পর্যায়ে আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১০৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, সুন্দরবন সুরক্ষা প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, ভূমিকম্প ও অন্যান্য দুর্যোগকালে অনুসন্ধান, উদ্ধার অভিযান পরিচালনা এবং জরুরি যোগাযোগের জন্য যন্ত্রপাতি সংগ্রহ প্রকল্পে ২ হাজার ২৭৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা, জেলা মহাসড়কসমূহ যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পে ১২২ কোটি ৮২ লাখ টাকা এবং চট্টগ্রাম শহর আউটার রিং রোড প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা।