শনিবারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা বিষয়ক নিয়মিত বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত-মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এ গুরুত্বরোপের কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামাররি কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং অর্থনৈতিক অনিরাপত্তা আমাদের সকলের মনের ওপরেই অতিরিক্ত চাপ তৈরি করেছে। এর ফলে অনেকেরই নিয়মিত ঘুম ব্যাহত হচ্ছে।’
মহামারির সময়টিতে পর্যাপ্ত ঘুম খুব গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। এটা আমাদের মন ও শরীর দুটোই ভাল রাখবে।’
দীর্ঘদিন সংস্পর্শ এড়িয়ে চলার বিষয়টি মানুষের মধ্যে মানসিক দূরত্ব তৈরি করতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শিশুর সম্মিলিত মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ হতে পারে, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতে পারে এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপ তৈরি করতে পারে। এই সময় বাড়ির শিশু এবং বয়ষ্কদের বিশেষভাবে যত্ন নিন।’
নারীদের প্রতি যত্নবান হওয়া পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘বেশিরভাগ সংসারে নারীই প্রাথমিক এবং একমাত্র সেবাদানকারী। যে কোন সংকটে তার কাজের চাপ এবং মানসিক চাপ বহুগুণ বেড়ে যায়। নারীর প্রতি সকল ধরনের সহিংসতা পরিহার করুন।’
করোনা মহামারিকালে সকলকে মানসিকভাবে উজ্জীবিত থাকার আহ্বান জানিয়ে ডা. নাসিমা বলেন, ‘নিজে কিভাবে ভাল থাকবেন সে পথ খুঁজে নিতে পারেন নানারকম সৃষ্টিশীল ও ভালো কাজের মধ্যে।’
এদিকে, দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে আরও ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১ হাজার ৯৯৭ জনে।
এদিকে, করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৬৭৯ জন। তাদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ২৮৮ জন।
শনিবার কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে জানানো হয়, দেশের ৭১টি ল্যাবের মধ্যে ৬৪টি ল্যাবের যে তথ্য দিয়েছেন তাতে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৮৭১টি। পরীক্ষা করা হয়েছে আগের নমুনাসহ ১৪ হাজার ৭২৭টি। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৮ লাখ ৩২ হাজার ৭৪টি।
পরীক্ষা বিবেচনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২২.৩৩ শতাংশ। আর মোট পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯.১৯ শতাংশ।
নতুন মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ২১ এবং নারী আটজন। মোট শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১.২৫ শতাংশ। আর মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ৭৯.৪৭ শতাংশ এবং নারী ২০.৫৩ শতাংশ।
করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ২ হাজার ৬৭৩ জন। যার ফলে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০ হাজার ৭২১ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থতার মোট হার ৪৪. ২৯ শতাংশ।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে নতুন করে এ ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।