এসব পরীক্ষা থেকে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে ৫ হাজার ৭৭৬ জন রোগীকে কোভিড-১৯ পজিটিভ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সংক্রমণের হার দাঁড়িয়েছে ১৮.২২ শতাংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনা শনাক্তকরণ ল্যাবের সবশেষ তথ্য থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
চলতি বছরের ১৮ মে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শাবির এই ল্যাব উদ্বোধন করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উদ্বোধনের পর এই ল্যাবের কার্যক্রমে কোনো ধরনের স্থবিরতা তৈরি হয়নি। সেবা এবং স্বচ্ছতার জায়গা থেকে ইতোমধ্যে এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের কাছে আস্থার জায়গা তৈরি করেছে শাবির করোনা শনাক্তকরণ ল্যাব।
মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সংক্রমণ নির্ণয়ের জন্য চলতি বছরের ৯ এপ্রিল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের জন্য পিসিআর ল্যাব চালুর অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।
পরবর্তীতে শাবির নিজস্ব অর্থায়নে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে শিক্ষাভবন ‘ই’এর জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের ২২৫ নম্বর কক্ষে এই ল্যাব চালু করা হয়। এই ল্যাবের তত্ত্বাবধান করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগ।
বর্তমানে এই বিভাগের ২৫ জনের একটি দল প্রতিদিন কাজ করছে এবং এই দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. শামসুল হক প্রধান।
ল্যাবে যারা কাজ করছেন তাদের থাকা, খাওয়া, পরিবহনসহ স্বাস্থ্যগত সকল নিরাপত্তার বিষয়গুলো দেখভাল করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জানা গেছে, ল্যাব চালু হওয়ার প্রথম দিকে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা থেকে প্রতিদিন ২০০ এর মতো নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হতো শাবির এই ল্যাবে। পরবর্তীতে সিলেট বিভাগের চার জেলা থেকে গড়ে ৪০০ এর মতো নমুনা জমা পড়তো। শাবির এই করোনা শনাক্তকরণ ল্যাবে একদিনে সর্বোচ্চ ৪৯৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
মধ্যবর্তী সময়ে সংগৃহীত নমুনার সংখ্যা কম হওয়ার ল্যাবে পরীক্ষার সংখ্যাও কমে গিয়েছিল। তবে শীতের শুরুতেই ফের বেড়েছে নমুনা পরীক্ষা। ল্যাবসূত্র জানায়, বর্তমানে সিলেট বিভাগের চার জেলা এবং সিলেট শহরের সকল বেসরকারি হাসপাতাল ও সবকয়টি উপজেলা থেকে সংগৃহীত নমুনা শাবিপ্রবির ল্যাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
সার্বিক বিষয়ে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. শামসুল হক প্রধান ইউএনবিকে বলেন, ‘আমাদের দৃঢ় প্রত্যয় বৈশ্বিক এদূর্যোগ মোকাবেলায় দেশ সেবায় আমাদের এই কাজ চালিয়ে যাবো। সরকার যতোদিন আমাদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহ করবে আশা রাখছি ল্যাবের কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার সুযোগ নেই।’
শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বৈশ্বিক দূর্যোগের শুরু থেকেই এই ল্যাবটি সিলেটের মানুষের সেবা দিচ্ছে। আশা রাখছি সামনের দিনগুলোতেও সিলেট তথা দেশের মানুষের সেবায় ল্যাবটির গুরুত্ব থাকবে।’