হঠাৎ করে গত ১২ দিন ধরে ফরিদপুরে বেড়েই চলেছে ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা। এদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।
এ হাসপাতালে আইভি স্যালাইনের (শিরায় দেওয়া) সংকট দেখা দেওয়ায় রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ১০০ শয্যার ফরিদপুর সদর জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য রয়েছে মাত্র ১০টি শয্যা।
চলতি শীতের আগমনের শুরুতেই শিশু থেকে বৃদ্ধরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসছে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। আর এতে স্বল্প পরিসরের (১০ শয্রার), সীমিত সংখ্যক জনবল দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হচ্ছে ৫০ এর বেশি রোগী।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে পদ্মার তীর সংরক্ষণ বাঁধ হুমকির মুখে
এ ছাড়া গত ১২ দিনে প্রতিষ্ঠানটিতে শুধু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে প্রায় ৬০০ রোগী। বিপুল সংখ্যক এই রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে ওয়ার্ডের মেঝেতে ও ওয়ার্ডের বাইরে।
বৃহস্পতিবার ১০ শয্যার ওই ডায়রিয়া ওয়ার্ডে দেখা যায়, ৫৭ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। অনেক রোগীকে রাখা হয়েছে ওয়ার্ডের মেঝে ও বারান্দার ফ্লোরে। আর শিশুদের রাখা হয়েছে একই বেডে দুইজন বা তিনজন করে।
তার উপর রয়েছে স্যালাইন সংকট। এদিকে বাজারে ওষুধের দোকানে মিলছে না কলেরা প্রতিরোধের স্যালাইন। যা পাওয়া যাচ্ছে তাও ক্রয় ক্ষমতার বেশি দরে কিনতে হচ্ছে। অনেক রোগীর স্বজনেরা বেশি দাম দিয়েও স্যালাইন পাচ্ছে না।
এদিকে সরকারি হাসপাতালে স্যালাইন না পেয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
তারা বলছেন, তারা বাজার থেকে টাকা দিয়েও স্যালাইন পাচ্ছেন না। যেটুকু পাচ্ছে তার দাম নিচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। এতে রোগীদের দুর্ভোগের মাত্রা বেড়েই চলছে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন শহরের শোভারামপুর এলাকার আব্দুল জলিলের পরিবার। প্রথমে জলিলের স্ত্রী কলেরায় আক্রান্ত হন। এরপর জলিলের ছেলের বউ। শয্যা না পেয়ে বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা।
শয্যা ও কলেরা রোগীর স্যালাইন সংকটের কথা স্বীকার করে ফরিদপুর সদর জেনারেল হাপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার গনেশ কুমার আগরওয়ালা বলেন, এই মুহূর্তে আমরা রোগীদের সচেনতার প্রতি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। তবে রোগীর চাপ অনেক বেশি। সেই তুলনায় কলেরার স্যালাইন সংকট প্রচুর।
আরও পড়ুন: তেল বরাদ্দ না থাকায় ৪৫ দিন থেকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ
তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, রোগীর চাপ যদি স্বাভাবিক না হয়, আর সময় মতো স্যালাইন না পাই তাহলে বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হবে।
এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে ৭ হাজার কলেরা স্যালাইনের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়; যার বিপরীতে এ পর্যন্ত পাওয়া গেছে ১ হাজার ২০০।