ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনের বিধিমালা করার কাজ চলছে। আগামী দুই-এক সপ্তাহের মধ্যে বিধিমালা শেষ করা হবে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী মো. সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
সোমবার (২০ নভেম্বর) সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে স্মার্ট ভূমি সেবা বিষয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত কর্মশালায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ভূমি মন্ত্রণালয়কে স্মার্ট মন্ত্রণালয় হিসেবে দাঁড় করিয়ে ফেলেছি। এটাকে একটা সাসটেইনেবল জায়গায় নিয়ে এসেছি। আমার পরে যিনি আসবেন তার বেসিক্যালি রুটিন ওয়ার্ক হবে। কিছু কিছু কাজ আছে, যেগুলোকে যদি ক্যারি ফরওয়ার্ড করতে পারে। মোটামুটি আমরা একটা কাঠামোতে নিয়ে এসেছি।’
ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘এটা এই মেয়াদের শেষ সময়। আগামীটা আগামীতে দেখা যাবে, আল্লাহ কী রাখছেন। তবে মনে হচ্ছে, স্যাটিসফেকশন (সন্তুষ্টি) নিয়ে ইনশাআল্লাহ যেতে পারছি। আমার মধ্যে সব সময় একটা ভীতি কাজ করত... একটা কথা আছে- শেষ ভালো যার সব ভালো তার।'
তিনি বলেন, 'জাতিকে কতটুকু পেরেছি সেটা তারা বিবেচনা করবে, কিন্তু আমি আমার জায়গা থেকে ইনশাআল্লাহ সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। স্যাটিসফ্যাকশন নিয়ে আমি যেতে পারছি।’
আরও পড়ুন: পরিবেশ সুরক্ষায় চিংড়ি মহালের ফাঁকা স্থানে সবুজায়নের নির্দেশ ভূমিমন্ত্রীর
সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, 'যারা কাজের প্রতি মনোযোগী, কাজ করতে বেশি আগ্রহী, তাদের মধ্যে সবসময় একটা জিনিস থেকে যায়- আরেকটু সময় পেলে যদি আর একটু কাজ করতে পারতাম এই সময়টা পেলে নিশ্চয়ই আমি কাজ আরও গোছাতে পারতাম। আমার পাঁচ বছরটা আমি চেষ্টা করেছি প্রতিটা মুহূর্ত, প্রতিটা ঘণ্টা, প্রতিটি দিনকে কীভাবে ব্যবহার করা যায়।'
শেষ সময়ে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, 'এমন একটা মার্জিনাল সময়ে পড়েছিলাম, এটা না হওয়ার আশঙ্কা ছিল। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু সাপোর্ট দিয়েছেন, সেজন্য এটা আমি করতে পেরেছি। একটা আইন পাস করা চাট্টিখানি কথা নয়। একেবারে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ওপর পর্যন্ত অধীর আগ্রহে এই আইনের অপেক্ষা করছিল। আমি স্যাটিসফাইড যে এই আইন করে যেতে পেরেছি।'
ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনের বিধিমালা করার কাজ চলছে জানিয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ইনশাআল্লাহ বিধিটা হয়ে যাবে। বিধিটা না হলে হাফ-ডান হয়ে যাবে। হাফ-ডান নিয়ে আবার প্রবলেম হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, 'ভূমি উন্নয়ন কর যেটা ম্যানুয়ালি ছিল, সেটাকে আমরা বন্ধ করে পুরো ক্যাশলেস করে ফেলেছি। প্রতিদিন ভূমি উন্নয়ন কর বাবদ ৫ কোটি টাকা জমা হচ্ছে। বছরে হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।'
ভূমিমন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা হচ্ছে। অনেকের একসঙ্গে খতিয়ান থাকে, ভাগ হয় না, ল্যান্ডট্যাক্স দিতে পারে না। কিছু কিছু বিষয়ে কমপ্লেইন আসছে। আমরা সেটা নিয়েও কাজ করছি। মোটামুটি কি পয়েন্টস, যেগুলো গুরুত্বপূর্ণ মিউটেশন, ল্যান্ডট্যাক্স এগুলো মোটামুটি আমরা সেরে ফেলেছি।
সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সঙ্গে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সেবা কার্যক্রমের সমন্বয়ে ধীরগতি রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, রেজিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট বা সাব রেজিস্ট্রি অফিস আবার আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে। ইন্টিগ্রেশনের কাজ চলছে, কিছু কিছু জায়গায় হয়েছে আরও কাজ বাকি আছে।
তিনি বলেন, 'আমরা ল্যান্ড জোনিংয়ের কাজ করছি। ডিজিটাল সার্ভের কাজ সারাদেশে শুরু হবে।'
সাইফুজ্জামান চৌধুরী আরও বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের কাজ একটা ট্র্যাকে আমি দাঁড় করিয়ে দিয়েছি। এখন এটা স্পিড আপ করতে হবে। কিছু কাজ বাকি আছে আমার মনে হয়। এটাই এক মাসের মধ্যে মোটামুটি একটা কাঠামোতে চলে আসবে। শতভাগ সন্তুষ্ট না হলেও মোটামুটি একটা জায়গায় আমরা দাঁড় করিয়েছি।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, 'তবে হ্যাঁ, মাঠ পর্যায়ে এখনও আমাদের সমস্যা আছে। রাতারাতি কোনো কিছু রিপেয়ার করা খুবই কঠিন। সিস্টেমের মাধ্যমে ডেভলপ করে আমি যতটুক পেরেছি করেছি।'
বিএসআরএফের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. মো. জাহিদ হোসেন পনির।
আরও পড়ুন: বর্তমান সরকারের মেয়াদেই ভূমি অপরাধ আইন প্রণয়নের চেষ্টা চলছে: ভূমিমন্ত্রী