ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমের উদ্দেশে দেয়া এক ভিডিও বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমার কাছে বিভিন্ন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে ফোন আসছে যে আমরা যদি ঢাকার পশুর হাট বন্ধ করে দেই তবে তাদের কী হবে! এটিই কিন্তু এখন বাস্তবতা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী কিন্তু একটি বছর অপেক্ষা করে থাকে এ কোরবানির পশুর হাটের জন্য। তাদের অনেকেই পশু পালন করে বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। একই সাথে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিগণও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য পশু কোরবানিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নেন। আবার এটিও সত্য যে আমাদের শহরে ঘনবসতিপূর্ণ স্থানে যদি পশুর হাট বসে সেটি কিন্তু জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ জন্য কিছু কিছু সিদ্ধান্ত আমি পরিবর্তন করতে বলেছি।’
‘হাট ইজারা দিয়ে হয়তো কোটি টাকা আয় করা যাবে, কিন্তু টাকার চেয়ে মানুষের জীবনের মূল্য অনেক বেশি। তাই আমি ঢাকার বাইরে তুলনামূলক কম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হাট বসানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছি যাতে ব্যাবসায়ীরা পশু বিক্রিও করতে পারেন আবার জনস্বাস্থ্যও বিবেচনায় রাখা যায়,’ যোগ করেন তিনি।
মেয়র বলেন, ‘আমাদের তেজগাঁও, আফতাবনগর, ভাষানটেক এলাকায় বড় হাট বসে প্রতিবার। সেখান থেকে আমাদের অনেক টাকা আয়ও হতো। কিন্তু এ বছর করোনা বিবেচনায় আমরা এলাকাবাসীর স্বাস্থ্যের কথা ভেবে এ স্থানে হাট বসতে দেব না। সেই সাথে উত্তরা ১০, ১১ ও ১২ এ তিনটি সেক্টরে বড় হাট বসত। গত বছর এ হাটে ইজারা মূল্য পাওয়া গিয়েছিল ৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। কিন্তু এ বছর এখানেও আমরা হাট বসতে দেব না।’
আতিকুল ইসলাম জানান, উত্তরাবাসীর জন্য উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরের বৃন্দাবন এলাকায় বড় হাট বসবে। তারা সেখান থেকে পশু কিনতে পারবেন এবং ওই এলাকায় মানুষের বসবাসও কম। এছাড়া মোহাম্মদপুরের বাসিন্দাদের জন্য বসিলায় একটা হাট দেয়া হবে। হাট থাকবে পূর্বাচল ব্রিজ সংলগ্ন মস্তুল ডুমনী ও ১০০ ফুট সড়কের সাইদ নগর এলাকায়, কাউলায়। গাবতলীতে স্থায়ী যে পশুর হাট আছে সেটি থাকবে।
‘তবে ঢাকা উত্তরের সব হাটেই মেনে চলতে হবে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি। আমি অনুরোধ করব যাতে শারীরিকভাবে দুর্বল, অসুস্থ, বয়স্ক এবং শিশুরা পশুর হাটে না আসে এবার। ইজারদারদের বলা থাকবে যাতে পশুর হাটে নূন্যতম ৫ ফুট দূরে দূরে গরু রাখার ব্যবস্থা করে তারা। হাটে পর্যাপ্ত বেসিন এবং হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে, জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে একটু পর পর মাইকিং করতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে সব হাটে ম্যাজিস্ট্রেট টহল থাকবে। ইজারাদারদের সতর্ক থাকতে হবে, আমাদের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। অন্যথায় ইজারা বাতিল করা হবে,’ যোগ করেন মেয়র।
কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ বিষয়ে মেয়র বলেন, বরাবরের মতো এবারও ডিএনসিসি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করতে প্রস্তুত। তিনি নগরবাসীকে অনুরোধ করে বলেন, ‘আপনারা সিটি করপোরেশন কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি দেবেন, কোনো অবস্থাতেই বর্জ্য ড্রেনে ফেলবেন না। ইনশাআল্লাহ আমরা এবারও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা উত্তরের সব বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হব।’