উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন নিয়ে হাজারো তরুণ-তরুণীর ভিড় করেছিল বন্দর নগরীর চট্টগ্রামের পাঁচ তারকা হোটেল র্যাডিসন ব্লু বে ভিউর মেজবান হলে।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে এখানে শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ শিক্ষায় আগ্রহী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ইউনিভার্সিটি ফেয়ার’। চলে রাত ৮টা পর্যন্ত।
যুক্তরাষ্ট্রের এডুকেশন প্রোগ্রামের অংশীদারিত্বে শিক্ষা মেলাটির আয়োজনে ছিল ‘এডুকেশন ইউএস প্ল্যাটফর্ম’।
এই মেলায় আগ্রহ নিয়ে শিক্ষার্থীরা এসেছিলেন চট্টগ্রাম ছাড়াও কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান খাগড়াছড়ির শিক্ষার্থীরা। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যাবতীয় তথ্য সাজিয়ে মেলার আয়োজন করেছে বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।
এতে যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের অনন্য সুযোগ তৈরি হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়ার জন্য আগ্রহী শিক্ষার্থীরা একাডেমিক প্রোগ্রাম, ক্যাম্পাস জীবন, আর্থিক সহায়তার সুযোগ, আবেদন পদ্ধতি এবং আবেদন ফি মওকুফ সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য জানতে পারেন।
শিক্ষা মেলায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কাউন্সেলর স্টিভেন ইবেলি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার স্বপ্ন চট্টগ্রামের অনেক শিক্ষার্থীর। এ কারণে চট্টগ্রাম ছাড়াও এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে এসেছেন। এই মেলায় যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিমের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অংশ নিয়েছে।
তিনি বলেন, গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা তিন গুণের বেশি বেড়েছে। ২০১১-২০১২ শিক্ষাবর্ষে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ছিলেন ৩ হাজার ৩১৪ জন। সেখান থেকে বেড়ে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৫৯৭ জনে।
যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বিগত শিক্ষাবর্ষে ১৪তম ছিল। এখন এক ধাপ এগিয়ে ১৩তম হয়েছে। আমরা চাই বাংলাদেশ থেকে আরও ছাত্রছাত্রী যুক্তরাস্ট্রে উচ্চ শিক্ষা লাভ করে তাদের ক্যারিয়ার গড়ে তুলুক।
চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের জন্য এ ধরনের আয়োজনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাসের কমতি ছিল না। চট্টগ্রামের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন।
তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টলগুলোতে গিয়ে ভর্তির নানা তথ্য সংগ্রহ করেন। কীভাবে আবেদন করতে হবে, আবেদনের যোগ্যতা কী, স্নাতকে ফলাফল কী লাগবে, গবেষণা প্রবন্ধ লাগবে কি না, এসব প্রশ্নের উত্তর দেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিনিধিরা।
মেলায় আসা শিক্ষার্থী নাফিস আকবর বলেন, ইন্টারনেটে অনেক তথ্যই গোছানোভাবে পাওয়া যায় না। কিন্তু মেলায় নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির সুযোগ সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন সেসব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেছে।
শিক্ষার্থী আয়শা বিনতে রাজ্জাক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদন করার জন্য তিনি প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জিআরই পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করছেন। সুযোগ পেলে তিনি সেখানে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করতে চান।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী রিদোয়ান আইন নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিতে চান।
তিনি বলেন, ‘অ্যারিজোনা ইউনিভার্সিটি বিশ্বের ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি। সেখানে আইন নিয়ে পড়তে চাই। ইন্টারনেটে ঘেঁটে নানা তথ্য জোগাড় করেছি। তবে মেলায় এসে অনেকগুলো প্রশ্নের উত্তর সহজে পাওয়া গেছে। কীভাবে, কখন আবেদন করতে হবে, আবেদনের শর্ত কী কী, কত টাকা খরচ হবে-এসব তথ্য জানতে পেরেছি।’
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার বনানীস্থ শেরাটনে অনুষ্ঠিত হবে মেলাটি। তবে ঢাকায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে আলাদাভাবে মেলাটি অনুষ্ঠিত হবে বলে মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ইরাব সদস্যদের সৌজন্য সাক্ষাৎ