চট্টগ্রাম মহানগরীর জেএম সেন হল পূজামণ্ডপে হামলার প্রতিবাদে প্রতিমা বিসর্জন বন্ধ রাখার চার ঘণ্টা পর আবারও প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়েছে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আশীষ ভট্টাচার্য্য জানান, কোরআন অবমাননার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লায় আয়োজিত মিছিল থেকে জেএম সেন হলের পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় আমাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা প্রতিমা বিসর্জনে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করায় মহানগরের অধীনে থানা পূজা কমিটিকে প্রতিমা বিসর্জন শুরু করার জন্য বলে দেয়া হয়েছে। জেএম সেন হলের প্রতিমা বিসর্জন করা হবে নেভাল-২ এলাকায়।

আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক থাকার আহ্বান স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর

এর আগে শুক্রবার দুপুরে আন্দরকিল্লার কাছে পুলিশের উপস্থিতিতে জেএমসেন হলের বাইরে পূজা উপলক্ষে টানানো ব্যানার, পেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে ইটপাটকেল ছুঁড়ে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে মণ্ডপের ভেতরে কোনো ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রতক্ষ্যদর্শীরা।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর একদল মানুষ আন্দারকিল্লা মন্দিরের দিক দিয়ে মিছিল নিয়ে যায় এবং ভাঙচুর করে বলে দাবি করেন আশীষ ভট্টাচার্য্য।

এ ঘটনার পর পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয় যেখানে পুলিশসহ বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

আরও পড়ুন: কুমিল্লার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি ডা. জাফরুল্লাহর

পরে এ ঘটনার প্রতিবাদে বেলা আড়াইটা থেকে মহানগরের পূজা মণ্ডপগুলোর প্রতিমা বিসর্জনের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। এছাড়া এ হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রামে হরতালের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

হামলার পর বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্তের নেতৃত্বে শত শত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন জেএমসেন হল রোড় ও আন্দরকিল্লায় জড়ো হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। সে সমাবেশ থেকে হামলার প্রতিবাদে এবং নিরাপদে মূর্তি বিসর্জন দেয়ার দাবিতে শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রতিমা বিসর্জন বন্ধ রাখারও ঘোষণা দেয়া হয়। 

পরে স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিকরা প্রতিমা বিসর্জনে নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে আশ্বস্ত করলে প্রতিমা বিসর্জন আবার শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা।

এদিকে এ হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমপির কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নেজাম উদ্দীন পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। এছাড়া ঘটনাস্থলে দায়িত্বে থাকা সিএমপি উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) বিজয় বসাকও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

আরও পড়ুন: কুমিল্লায় কুরআন অবমাননা: ২২ জেলায় বিজিবি মোতায়েন