আইসিডিডিআর,বি শুধু গবেষণায় নয়, সম্প্রদায়ের জন্যও অবদান রাখছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলস।

তিনি বলেন, বিশেষ করে দরিদ্র লোক, যাদের চিকিৎসা পরিষেবার কোনো উপায় বা সুযোগ নেই তাদের নিয়ে গবেষণা করছে সংস্থাটি।

মঙ্গলবার একটি অনুষ্ঠানে ড. নিকোলস এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘এটি একটি অবিশ্বাস্য অবদান। আপনি পরবর্তীতে কী করবেন তা দেখার জন্য আমিও খুব আগ্রহী। কানাডা অবশ্যই শুরু থেকেই গর্বিত মূল দাতা হিসেবে আপনাদের সঙ্গে ছিল এবং থাকবে।’

বৈশ্বিক স্বাস্থ্য গবেষণা ও উদ্ভাবনে অগ্রণী ভূমিকা পালনের ৬৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালী ক্যাম্পাসে আইসিডিডিআর,বি'র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া চুক্তি সংস্থা (এসইএটিও) এবং যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের (এনআইএইচ) সহায়তায় কলেরা রিসার্চ ল্যাবরেটরি (সিআরএল) নামে চালু হয়। পরে ১৯৭৮ সালে আইসিডিডিআর,বি নামে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সংসদে পাস হওয়া আইসিডিডিআর,বি আইন ২০২২-এর প্রথম বর্ষপূর্তি উদযাপন করা হয়, যা একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইসিডিডিআরবি'র ভূমিকা পুনর্ব্যক্ত করে।

বিশেষ সেমিনারে তাহমিদ আহমেদের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দিবসটি শুরু হয়। চিকিৎসা গবেষণা ও জনস্বাস্থ্যে আইসিডিডিআরবি'র গুরুত্বপূর্ণ অবদান তুলে ধরেন তিনি।

আইসিডিডিআর,বি'র ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন (ওআরএস) এর যুগান্তকারী উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন ড. আহমেদ। টিটেনাস টক্সয়েড ভ্যাকসিন গবেষণায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিসহ শৈশবকালীন ডায়রিয়াজনিত রোগের মৃত্যুহার হ্রাস এবং মাতৃ ও নবজাতকের স্বাস্থ্যের অগ্রগতিতে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

কার্যকর মুখে খাওয়ার কলেরার টিকা তৈরি, গুরুতর অপুষ্টির চিকিৎসার জন্য গাইডলাইন প্রতিষ্ঠা এবং বৈশ্বিক পোলিও নির্মূল প্রচেষ্টায় অবদান রাখার ক্ষেত্রে আইসিডিডিআরবি'র নেতৃত্বের কথাও উঠে আসে তার বক্তব্যে।

আরও পড়ুন: সন্তান প্রসবে সবচেয়ে বেশি ব্যয় সিজারে: আইসিডিডিআরবি

'বাংলাদেশে দারিদ্র্য প্রবণতা ও গতিশীলতা: সাম্প্রতিক প্রমাণ থেকে অন্তর্দৃষ্টি' শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন।

কোভিড-১৯ মহামারি এবং ইউক্রেন সংঘাতের বিরূপ প্রভাবের কথা স্বীকার করে তিনি গত এক দশকে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের উল্লেখযোগ্য হ্রাসের কথা তুলে ধরেন।

ড. সেন দারিদ্র্যের মূল চালিকাশক্তি তুলে ধরেন এবং স্মার্ট ম্যাক্রোইকোনমিক ম্যানেজমেন্ট, টেকসই প্রবৃদ্ধি, কর-অর্থায়নে মানব উন্নয়ন এবং ভূ-অর্থনৈতিক বিবেচনার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে স্বল্প ও মাঝারি মেয়াদের জন্য বেশ কয়েকটি নীতিগত বিবেচনার প্রস্তাব করেন।

এক ভিডিও বার্তায় আইসিডিডিআরবি'র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ন্যান্সি চেং বলেন, 'আমি মনে করি কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনওে দরকার। এটি এমন একটি জায়গা যেখানে প্রচুর সুযোগ রয়েছে। আমরা যে কাজের বিস্তৃতি করি তা প্রকাশ করার অসাধারণ সম্ভাবনা রয়েছে। আমি সবার মঙ্গল কামনা করি, উপভোগ করি এবং সংগঠনের ওপর আস্থা রাখি।’

স্থানীয় ঐতিহ্য এবং এই অঞ্চলের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে উদযাপন করে একটি পিঠা উৎসবেরও আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে আইসিডিডিআর,বি'র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, উন্নয়ন সহযোগী, গণমাধ্যম প্রতিনিধি এবং আইসিডিডিআর,বি'র বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: ঢাকায় ৭১ শতাংশ মানুষের শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি: আইসিডিডিআরবি