বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ৭ মার্চ অনন্য এক দিন। ১৯৭১ সালে এই দিনে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে মুক্তিকামী লাখো জনতার সামনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন আর তার সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বীর বাঙ্গালী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় ছিনিয়ে আনে।
মুক্তিকামী লাখো জনতার সামনে ১৯ মিনিট ধরে দেয়া ভাষণে বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। সেই সাথে তিনি পাকিস্তানের শোষণকারী শাসকগোষ্ঠীর হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেন। বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে ধ্বনিত হয়- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
সকালে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সদস্য এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন যথাক্রমে দূতাবাসের কাউন্সেলর ড. জিয়াউল আবেদিন ও ড. আরিফুল হক।
পরে দূতাবাসের চার্জ দ্যা এফ্যায়েরস ড. শাহিদা আকতার সকলের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদান করেন, এসময় তিনি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
তিনি ১৯৭১ সালে ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে মুক্তিকামী লাখো জনতার সামনে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের যাদুকরী প্রভাব সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করে বলেন, ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর সেই অগ্নিঝরা ভাষণ, পুরো বাঙ্গালী জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধে অনুপ্রাণিত করেছিলো, এই ভাষণ ছিলো স্বাধীনতার অমর কবিতা । তিনি উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং মুজিব বর্ষ উপলক্ষে দূতাবাসের আয়োজনে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদাত্ত আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের পরবরতী অংশে উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জাপান প্রবাসী বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা। জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বজ্রকন্ঠে ৭ই মার্চের ভাষণের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
এসময় দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রথম সচিব আরিফ মোহাম্মদ।