মঙ্গলবার সচিবালয়ে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা সংক্রান্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন গত ১০ বছরে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণে উন্নীত হয়েছে। শিক্ষাকে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ায় সরকারের উদ্যোগ এবং সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টা এ সফলতার প্রধান কারণ।
‘এ পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের মধ্যে গভীর আগ্রহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে এবং সকল শিক্ষার্থীরই বৃত্তি পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে,’ যোগ করেন মন্ত্রী।
‘তাছাড়া সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নিবিড় পর্যবেক্ষণের আওতায় নিয়ে আসার ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। শিক্ষার প্রতি শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বৃদ্ধি পায় এবং শিক্ষার্থীরা অধিকতর আত্মবিশ্বাসী ও আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠে,’ বলেন তিনি।
এদিকে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করাসহ বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
এগুলো হলো- পরীক্ষার্থীদের ৭টি বিষয়ে ৬৫০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হবে। ইংরেজি ছাড়া সকল বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে হবে। শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা, চারু ও কারুকলা, কৃষি শিক্ষা, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, আরবি, সংস্কৃত, পালি বিষয়সমূহ এনসিটিবির নির্দেশনা অনুসারে ধারাবাহিক মূল্যায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট পূর্বে পরীক্ষার্থীদেরকে অবশ্যই পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশ করতে হবে। তবে অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থীকে এ সময়ের পরে হলে প্রবেশ করতে দিলে তার বা তাদের নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, দেরি হওয়ার কারণ ইত্যাদি একটি রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করে ওইদিনই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে।
শ্রবণ প্রতিবন্ধীসহ অন্যান্য প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় দেয়া হয়েছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পলসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই তাদের জন্য শ্রুতি লেখকের সুযোগ রাখা হয়েছে।
প্রতিবন্ধী (অটিস্টিক, ডাউন সিনড্রোম, সেলিপলসি) পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বৃদ্ধিসহ শিক্ষক / অভিভাবক/সাহায্যকারীর বিশেষ সহায়তায় পরীক্ষা প্রদানের সুযাগ দেয়া হয়েছে।
পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মচারীদের মোবাইল, মোবাইল ফোনের সুবিধাসহ ঘড়ি, কলম এবং পরীক্ষা কেন্দ্রে ব্যবহারের অনুমতিবিহীন যে কোনো ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে।
পরীক্ষা চলাকালীন এবং এর আগে ও পরে পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ব্যতীত অন্যদের পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। এ সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশকারী অননুমোদিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আসন্ন জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা সুষ্ঠু, সুন্দর ও নকলমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ২৫ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত সকল কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
প্রশ্নপত্র ফাস এবং ফাঁসের গুজবমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কোনো প্রতারক যাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ভুয়া বা মিথ্যা প্রশ্নপত্র তৈরি করে প্রতারণা কিংবা গুজব সৃষ্টি করতে না পারে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা ছাত্র, শিক্ষক-অভিভাবকসহ সকলের কাছে আনন্দদায়ক ও উৎসবমুখর হবে। সম্পূর্ণ নকলমুক্ত ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা সফলভাবে অনুষ্ঠানে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।