ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সাবদারপুর গ্রামে ‘যার জমি আছে ঘর নেই, তাঁর নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ’ প্রকল্পের বাড়ি ভেঙ্গে ফ্লাট তৈরি করার অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পটির আওতায় ঘর ভাঙ্গার কোনো নিয়ম নেই।
একই পরিবারের তিন সদস্য পেয়েছেন এই প্রকল্পের বাড়ি। তৎকালীন কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অনেকটা সেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে এই ঘর বরাদ্দ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, ৫-৬ বছর আগে কোটচাঁদপুরের সাবদারপুর গ্রামের শ্রী নারায়ণ হালদার, তার ছোট ছেলে বাসুদেব হালদার ও বড় ছেলে প্রহল্লাদ হালদারের স্ত্রী সুমি হালদারের নামে প্রকল্পের বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়। নারায়ণ হালদারের বড় ছেলে প্রহল্লাদ হালদার কোটচাঁদপুর ডিজিটাল সেন্টারে কর্মরত থাকায় প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে নিজের পরিবারের তিন সদস্যের নামে তিনটি ঘর নিজেদের নামে নিতে সক্ষম হন বলে এলাকাবাসী মনে করেন।
বর্তমানে অনুমতি ব্যতিত সেই বাড়ি ভেঙ্গে নিজের ইচ্ছামতো ফ্লাট তৈরি করছেন।
আরও পড়ুন: আগা খান স্থাপত্য পুরস্কার জিতেছে বাংলাদেশের ২ প্রকল্প
জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, একই পরিবারে এই প্রকল্পের ঘর দেয়ার বিধান নেই। যদি কেউ বরাদ্দ দিয়ে থাকেন তবে অনিয়মের মাধ্যমে করেছেন।
কোটচাঁদপুর ডিজিটাল সেন্টারে কর্মরত প্রহল্লাদ হালদার জানান, আমার পরিবারের তিন সদস্য ঘর পেয়েছে এটা সত্য। তবে ঘরগুলো ছিল কাঠের, তাই ঘুণ পোকা লেগে নষ্ট হয়েছিল। আমার স্ত্রীর নামে বরাদ্দ ঘরটি ভেঙ্গে তাই ছাদ দিচ্ছি।
বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপ-সহকারি প্রকৌশলী ওয়ালীউল্লাহ জানান, এই প্রকল্পের সঙ্গে আমার অফিসের সংশ্লিষ্টতা নেই। কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনারের (ভুমি) দপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে, তারাই ভালো বলতে পারবেন।
আরও পড়ুন: মেগাপ্রকল্প বিএনপির ‘মেগা-যন্ত্রণার’ কারণ: ওবায়দুল কাদের
সাবদারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর মান্নান বলেন, আমার আগের চেয়ারম্যানের সময় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে আইন মোতাবেক প্রকল্পের বাড়ি একই পরিবারের তিন সদস্য পেতে পারে না।
কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মাসুম বিল্লাহ গনমাধ্যমকর্মীদের জানান, আমি নতুন যোগদান করেছি। আগের কর্মকর্তা কি করেছেন আমার জানা নেই। তবে একই পরিবারের তিন সদস্যকে ঘর দেয়ার বিধান আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রকল্পের ফাইল তলব করা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়ক চার লেনসহ একনেকে ৬ প্রকল্প অনুমোদন