ভারতের কাছ থেকে উপহার হিসেবে আসা টিকা গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘এটি এক ঐতিহাসিক দিন। তারা (হাসিনা ও মোদি) দৃঢ় সম্পর্ক অর্জন করেছেন! এটি সেই বন্ধনের নিদর্শন।’
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী কোভিড-১৯ টিকা হস্তান্তর করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলাম উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম দিন থেকেই কোভিড-১৯ মোকাবিলায় অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছেন।
ভারত থেকে আজকের উপহার অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার নিদর্শন উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, ‘সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্ব বিশ্বের প্রতিটি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: ঢাকায় ভারতের উপহারের ভ্যাকসিন সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিশ্রুতির অংশ: রাষ্ট্রদূত
ভারতে দ্বিতীয় ধাপে ভ্যাকসিন নেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি
ভারতে করোনার টিকা নেয়ার পর ৪৪৭ জন অসুস্থ
তিনি বলেন, অনেক উন্নত দেশ এখনো টিকা নিতে পারেনি এবং বিশ্বে প্রথম টিকা নেয়া দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
প্রতিবেশী প্রথম নীতির আওতায় ভারতের বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার কথা পুনর্ব্যক্ত করে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে এক ভার্চ্যুয়াল শীর্ষ বৈঠকে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে ভারতে টিকা উৎপাদন করার সাথে সাথে বাংলাদেশকে দেয়া হবে।
এ ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের মধ্যে চলমান দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন উভয় নেতা।
টিকা কীভাবে প্রয়োগ করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যেহেতু জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছেন তাই প্রথমে তাদের জীবন বাঁচাতে অগ্রাধিকার দেবেন।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যদিও কোভিড-১৯ পরিস্থিতি এবং মৃত্যুর হার নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চলছে। আমরা সংযুক্ত রয়েছি এবং একসাথে কাজ করছি।’
উপহার হিসেবে টিকা পাঠানোর জন্য তিনি ভারতের জনগণ এবং সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: দেশে এলো ভারতের উপহারের ২০ লাখ ডোজ করোনার ভ্যাকসিন
ভ্যাকসিন কূটনীতির লড়াইয়ে নেমেছে যেসব দেশ
করোনায় দেশে আরও ১৬ মৃত্যু, শনাক্ত ৪ শতাংশের নিচে
কোভিড: সাড়ে ৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন দৈনিক মৃত্যু দেখল দেশ
ব্লুমবার্গ মিডিয়ার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন ও প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলাম বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় কোভিড-১৯ মোকবিলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এক নম্বরে রয়েছে।
এদিকে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সর্বাধিক অগ্রাধিকারের কথা ভ্যাকসিন মৈত্রীর মাধ্যমে পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
একই অনুষ্ঠানে ভারতের রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি সর্বোচ্চ পর্যায়ে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির- দেয়া প্রতিশ্রুতির এবং ভারতের প্রতিবেশী প্রথম নীতির অংশ।
পারস্পরিক বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ এবং ভারত একসাথে কোভিড-১৯-এর মতো প্রাণঘাতী ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়বে বলেও উল্লেখ করে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত।
চলতি মাসে ভারত থেকে টিকার আরও ৫০ লাখ ডোজ আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চুক্তি অনুসারে আগামী ছয় মাসের মধ্যে প্রায় তিন কোটি ডোজ টিকা আসার কথা রয়েছে।