ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জায়গায় দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সংস্থাটির সদস্য রাষ্ট্রের মন্ত্রীদের ২০তম সম্মেলনে সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে পাঁচটি বিষয় উল্লেখ করে এই প্রস্তাব দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য জায়গা দিতে প্রস্তুত আছে। যেখানে সদস্য রাষ্ট্রগুলো বিনিয়োগ করতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘যদি এখনই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়, তাহলে আগামী দশকেই শক্তিশালী ডি-৮ অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে।’
ডি-৮ হলো উন্নয়নশীল আটটি রাষ্ট্রের পারস্পরিক সহযোগিতমূলক একটি সংগঠন। এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো হলো-বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্ক।
১৯৯৭ সালে কয়েকটি লক্ষ্য উন্নয়নের জন্য এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করে সদস্য রাষ্ট্রগুলো। এরমধ্যে বিশ্ব অর্থনীতিতে অবস্থান তৈরি, বহুমুখী বাণিজ্য ও নতুন বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহযোগিতা, এবং মানুষের জীবনমান উন্নতকরণ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২৫ বছরের এই ফোরামের সময় এসেছে বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার ও নজর দেয়ার, বাণিজ্য বৃদ্ধি, আইসিটি, খাদ্য নিরাপত্তায় কৃষিতে বৈচিত্রতা আনা এবং বিকল্প জ্বালানির খোঁজ করার।
তিনি বলেন, সফল ডি-৮ এর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির (পিটিএ) বাস্তবায়ন। যার বিরাট একটি অভ্যন্তরীণ বাজার আছে।
তিনি বলেন, ডি-৮ এর অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যই এর ব্যবসায়িক সম্ভাবনাকে ত্বরান্বিত করবে। ফোরামকে আগামী দশকে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা ১২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা উচিত।
আইসিটির বিশাল সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে সম্মেলনে হাসিনা বলেন, ডি-৮ দেশের তরুণরা হতে পারে শক্তিশালী জনশক্তি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৭০ ভাগ মানুষ ৪০ বছরের কম বয়সী। আমাদের সাড়ে ছয় লাখ নিবন্ধিত আইটি ফ্রিল্যান্সার আছে। এই বিশাল জনশক্তি আইটি নির্ভর শিল্প করতে কাজে লাগানো যেতে পারে। তরুণরা বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত।
চতুর্থ প্রস্তাবনায় তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা ও নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহের জন্য কৃষিতে বৈচিত্য নিয়ে আসা ও খাদ্য উৎপাদনে ডি-৮ এর মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ তার সবচেয়ে ভালো অভিজ্ঞতা ও কর্মসূচী ডি-৮ এর সদস্য রাষ্ট্রসমূহের সাথে বিনিময় করতে প্রস্তুত। আগামী দশকে খাদ্য উৎপাদনে ও খাদ্যে আত্মনির্ভরশীল হতে কৃষি উৎপাদনে ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর মনযোগ দেয়া উচিত।
প্রধানমন্ত্রী ডি-৮ সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে যত্নবান হতে ও বিকল্প বিদ্যুতের উৎসের বিষয়েও পরামর্শ দেন।
বিকল্প জ্বালানির সক্ষমতা অর্জনের বিষয়ে যে দেশগুলো অভিজ্ঞ তাদের সাথে সমন্বয় করতে ডি-৮ কে প্রস্তাব দেন তিনি।
পড়ুন: যুদ্ধে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় বহুপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর