তিনি বলেন, ‘আজ যদি ঢাকা শহরের তার পুরোটা কেটে দেই, তাহলে শহর ধসে যাবে। আমাদের বাচ্চাদের পড়াশোনা হবে না। তবে আগামী এক বছরের মধ্যে ডিএনসিসির সম্পূর্ণ এলাকার তারগুলো নামিয়ে ফেলার চেষ্টা করব। এটা আমাদের নামাতেই হবে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশান ২ নম্বর গোলচত্বর থেকে অবৈধ ঝুলন্ত তার অপসারণ কাজের উদ্বোধনের সময় মেয়র এ কথা বলেন।
মেয়র বলেন, ‘তারের জঞ্জাল আজ থেকে ১০ বছর আগে যে অবস্থায় ছিল, এখনও একই অবস্থা। কিন্তু এ শহরকে এভাবে চলতে দেয়া যায় না। মনে হচ্ছে ঝুলন্ত তার মানেই ঢাকা শহর, ঢাকার আসল চিত্র। এই যে দেখুন, এ জায়গাটির একদিকে ফাইভ স্টার হোটেল, আরেকদিকে তারের জঞ্জাল। কিন্তু ঢাকার এ চিত্র আমরা কেউ দেখতে চাই না। তাই আমি গত কোরবানির ঈদের আগে বলেছিলাম, ১ অক্টোবর থেকে আমরা ঝুলন্ত তারগুলো নামিয়ে দেব।’
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) ও ক্যাবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) সাথে সাতবার সভা করেছি, সমস্যাটি সমাধানের জন্য সবাইকে নিয়ে সিরিজ মিটিং করেছি। যখনই মিটিং শুরু করি, মনে হয় একজনের সাথে আরেকজনের শত্রুতা। আইএসপিএবি দোষ দেয় এনটিটিএনকে, এনটিটিএন দোষ দেয় কোয়াবকে।’
‘এ মুহূর্তে আপনারা জানেন দেশে কোভিড চলছে, স্কুলের বাচ্চারা বাসায় বসে অনলাইনে এবং টেলিভিশনে পড়াশোনা করছে। অনেকে বাসায় বসে অনলাইনে কাজ করছেন, জীবিকা নির্বাহ করছেন, সবকিছু মিলিয়ে পরিবেশটা অন্যরকম। আমাকে অনেক অভিভাবক অনুরোধ করেছেন। গুলশান এভিনিউতে টোটাল নয়টি মোড় আছে। এ নয়টি মোড়ের তার, তাদের অনুরোধে আরও সাত দিন সময় দেয়া হলো। সাত দিনের মধ্যে ক্রসিংয়ের তারগুলোও কেটে দেব। আমরা চাচ্ছি এটি টেকসই করার জন্য। স্বল্প মেয়াদি পদ্ধতিতে আমি যেতে চাচ্ছি না। আজকে যে তার কাটা হচ্ছে এটা কিন্তু সেবা প্রদানকারীরাই কাটছেন। এ প্রথম তারা নিজের তার নিজেরা কাটছেন। তাদের আমি এখানে ডাক দিয়েছি, কারণ ঢাকা হচ্ছে আপনাদের সবার,’ বলেন তিনি।
ক্ষোভ প্রকাশ ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘এখানে এনটিটিএন কাজ করছে না, আমি মনে করছি এটি এনটিটিএনের ব্যর্থতা। তারা ১০ বছর যাবৎ লাইসেন্স নিয়েছে, তারা কেন মাটির নিচ দিয়ে লাইন নেয়নি? সুতরাং আমি সাব্যস্ত করেছি, তাদের সাথে মিটিং করে, আমাদের রাস্তার পাশে যে ড্রেনগুলো আছে এগুলোর নিচ দিয়ে আমি পাইপ বসিয়ে দেব। উনারা রাজি হয়েছেন। এ বাবদ ডিএনসিসিকে তারা ভাড়া দেবেন। আমি ইতোমধ্যে প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি, আমাদের যত নতুন রাস্তা হবে, সেই রাস্তাগুলোর নিচ দিয়ে লাইন নেয়ার জন্য ব্যবস্থা রাখা হবে। আমরা চাই একটা স্থায়ী সমাধান।’
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, সচিব মোজাম্মেল হক, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল ইসলাম, কোয়াবের সভাপতি এসএম আনোয়ার কবির, আইএসপিএবির সভাপতি মো. আমিনুল হাকিম এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।