প্রচণ্ড গরমে তাপমাত্রার পারদ বাড়তে থাকায় গ্যাস ও কয়লা সংকটের কারণে সারাদেশের বিভিন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুর ১২টায় দেশে আড়াই হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং হয়েছে। যদিও এটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় গ্রাহকদের কাছ থেকে তুলনামূলকভাবে কম চাহিদা রয়েছে।
এছাড়া বিপিডিবি’র প্রকাশিত অফিসিয়াল পরিসংখ্যান দেখা যায়, দিনে ১৪ হাজার মেগাওয়াট চাহিদা পূরণের জন্য দেশে ২ হাজার ৩৫৩ মেগাওয়াট ঘাটতি ছিল কারণ বিপিডিবি সারা দেশে সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৬৪৭ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছিল।
বিপিডিবি’র একজন শীর্ষ কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেছেন, ‘সন্ধ্যায় সর্বোচ্চ ঘাটতি বাড়তে পারে যখন চাহিদা আরও ১৫ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটে উঠবে এবং এই গরমে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট অতিক্রম করতে পারে।’
তিনি এই সংকটের জন্য গ্যাস ও কয়লা সরবরাহের ঘাটতি এবং জেনারেশন ইউনিটে পানির স্তর কমে যাওয়াকে দায়ী করে বলেন, এসব কারণে প্রায় ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া রক্ষণাবেক্ষণ ও অন্যান্য কারণে আরও ২ হাজার ২৩৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন জেনারেশন ইউনিট চালুর বাইরে রয়েছে।
ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই অথরিটির (ডেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাউসার আমীর আলী বলেন, তার এলাকায় ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটের চাহিদা পূরণের জন্য দিনের সর্বোচ্চ সময়ে ২০০ থেকে ৩০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়।
আরও পড়ুন: নতুন রেকর্ড গড়ে বিদ্যুত উৎপাদন ১৫,৩০৪ মেগাওয়াটে
ডেসকো এলাকার ভোক্তাদের অভিযোগ, দিনভর তারা অতিরিক্ত বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।
রামপুরা এলাকায় বসবাসকারী এক ডেসকো গ্রাহক বলেন, ‘আমাদের ভোর থেকে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের সম্মুখীন হতে হয়েছে।
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান জানান, তার এলাকায় দিনে প্রায় ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত ঘাটতি রয়েছে।
তিনি ইউএনবিকে বলেছেন, ‘ডিপিডিসি এলাকায় ১ হাজার ৭০০ মেগাওয়াটের চাহিদা পূরণের জন্য আমাদের ৪০০ মেগাওয়াটের লোডশেডিং অবলম্বন করতে হয়েছিল।’
রাজধানীর বাইরের ভোক্তাদের অভিযোগ, তাদের চরম লোডশেডিংয়ের শিকার হতে হচ্ছে।
মাসুদুল হক, যিনি সম্প্রতি ময়মনসিংহে তার গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন, গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারী লোকেরা দিনে ৩ থেকে ৫ ঘন্টা বিদ্যুত পেতে পারে।
অন্যান্য গ্রামীণ এলাকা থেকেও একই ধরনের অভিযোগ আসছে।
আরও পড়ুন: সরকার আন্তর্জাতিক বাজার অনুযায়ী বিদ্যুত ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ করবে: নসরুল