প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও সারাদেশে চলছে তীব্র লোডশেডিং। দেশে প্রায় ১৬ হাজার মেগাওয়াটের চাহিদার বিপরীতে ১২-১৩ হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। যার ফলে, তাপমাত্রার পারদ ৩৮-৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে থাকা অসহ্য গরমের মধ্যেও রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার মানুষ তীব্র লোডশেডিংয়ে শিকার হচ্ছেন।
দিনের বেলায় লোডশেডিং ইতোমধ্যেই ২৬০০ মেগাওয়াট অতিক্রম করেছে এবং সন্ধ্যায় তা সর্বোচ্চ ৩৫০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুত সরবরাহের অবস্থা আরও খারাপ বলে অভিযোগ রয়েছে। গ্রামাঞ্চলে দিনে ৩-৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যায়, বাকি সময় বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হয়।
মজার বিষয় হলো, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) অফিসিয়াল তথ্যানুযায়ী জানা যায়, মধ্যরাতে লোডশেডিংয়ের মাত্রা সর্বোচ্চ, যখন মানুষ গভীর ঘুমে থাকে।
আরও জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় দেশে ২৬১০ মেগাওয়াট লোশেডিং হয়েছে, যেখানে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৯০০ মেগাওয়াট এবং উৎপাদন ছিল ১২ হাজার ১৬৬ মেগাওয়াট।
সন্ধ্যায় সর্বোচ্চ বিদ্যুত উৎপাদনের পূর্বাভাসে ১৫ হাজার ৮০০ মেগাওয়াটের সম্ভাব্য চাহিদার বিপরীতে ১৪ হাজার ৯০০ মেগাওয়াট উৎপাদনের অনুমান করা হয়েছিল, যেখানে মাত্র ৯০০ মেগাওয়াট লোডশেডিংয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াত আমলের মতো দিনে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন হলে এখন কি হতো: নসরুল
রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন’। সন্ধ্যার পিক আওয়ারে লোডশেডিংয়ের মাত্রা ২৭০০ মেগাওয়াট থেকে ৩৫০০ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে।
তিনি বলেছেন, সরকারি প্রতিবেদনে সবসময় প্রকৃত চিত্র ফুটে ওঠেনা।
তবে, সারাদেশে বিদ্যুত সঞ্চালনের দায়িত্বে থাকা পিজিসিবি-র অফিসিয়াল তথ্যে দেখা যায় যে সোমবার বিকাল ৪টায় লোডশেডিং ছিল ২৮১৫ মেগাওয়াট; সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় ২৭৩৫ মেগাওয়াট এবং মঙ্গলবার সকাল ১টায় ৩২৬৬ মেগাওয়াট।
এছাড়া, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টায় (মধ্যরাত) ৩২১৫ মেগাওয়াট এবং দিবাগত রাত ২টায় (মধ্যরাত) ৩১৪৩ মেগাওয়াট লোডশেডিং ছিল।
এর মানে মধ্যরাতে সর্বোচ্চ লোডশেডিংয়ের পরিমাণ দেশে একটি নতুন ঘটনা, কারণ মধ্যরাতে দেশের চাহিদা কমে গেলেও বিদ্যুতের উৎপাদনও ১১ হাজার মেগাওয়াটের পর্যায়ে নেমে আসে।
আগের বছরগুলোতে সাধারণত মধ্যরাতে কোনো লোডশেডিং দেখা যায়নি। এ বছর নিয়মিত মধ্যরাতে লোডশেডিং হচ্ছে।
তবে বিপিডিবির কোনো কর্মকর্তা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সংকট নিরসনের চেষ্টা চলছে: নসরুল হামিদ
তাপপ্রবাহের মধ্যে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বেড়েছে মানুষের দুর্ভোগ