নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসে বুধবার আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির বয়স ছিল ৭০ বছরের উপরে এবং তিনি ডায়বেটিস ও উচ্চ রক্তচাপসহ আরও বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন।’
তিনি বিদেশ থেকে আসা ভাইরাসে আক্রান্ত একজনের সংস্পর্শে এসেছিলেন বলে জানান ডা. ফ্লোরা।
এছাড়া, দেশে নতুন করে আরও চারজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ জনে।
আরও পড়ুন
করোনাভাইরাস আতঙ্কে ঢাকার রাস্তা অনেকটাই ফাঁকা
করোনাভাইরাস: মাস্ক পরে কি সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব?
করোনাভাইরাস: অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া যেসব স্বাস্থ্য পরামর্শ ‘ভুয়া’
করোনাভাইরাস: শাবি শিক্ষার্থীরা তৈরি করল ‘হ্যান্ড স্যানিটাইজার’
আইইডিসিআর পরিচালক জানান, নতুন আক্রান্ত চারজনের মধ্যে একজন নারী এবং বাকিরা পুরুষ। আর চারজনের মধ্যে তিনজন সদ্য বিদেশ (দুজন ইতালি ও একজন কুয়েত) থেকে এসেছেন এবং অপরজন আগের এক রোগীর পরিবারের সদস্য।
আইইডিসিআরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১৬ জন আইসোলেশন এবং ৪২ জন প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কোয়ারেন্টাইনে আছেন।
আরও পড়ুন: প্রয়োজনে কিছু জায়গায় শাটডাউন করা হবে: কাদের
করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৯ ব্যক্তিকে পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে মোট সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪১ জন।
‘আইইডিসিআর গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ৮৫৭টি ফোন কল পেয়েছে এবং তার মধ্যে ৪ হাজার ৬৪২টি ছিল করোনাভাইরাস নিয়ে। আর ২৫ ব্যক্তি সরাসরি আইইডিসিআরে এসেছেন,’ বলেন ডা. ফ্লোরা।
আইইডিসিআরকে ফোনে না পাওয়া গেলে তিনটি বিকল্প ব্যবস্থার উল্লেখ করে পরিচালক বলেন, ‘আপনারা ইমেইল ও আমাদের ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করতে পারেন। সেই সাথে আইইডিসিআরের সাথে যোগাযোগে আমরা একটি অ্যাপ তৈরি করছি। পারলে আপনারা ফোন করার বদলে এ তিনটি পদ্ধতি ব্যবহার করবেন।’
আইইডিসিআর পরিচালক পুনরায় আশ্বস্ত করেন যে করোনাভাইরাসের মতো লক্ষণ দেখে চিকিৎসক ও স্টাফদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়া এবং রোগীদের চিকিৎসা না করার বিষয়টি সমাধানে তারা হাসপাতালগুলোর সাথে কথা বলছেন।
তিনি পুনরায় বলেন যে যারা হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নিয়ম মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে সরকার আইনি ব্যবস্থা নেবে।
গত মঙ্গলবার দেশে আরও দুজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় এবং আক্রান্তদের মধ্যে দুজনই পুরুষ।
১৬ মার্চ দেশে তিনজনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানায় আইইডিসিআর। যাদের মধ্যে দুজন শিশু এবং একজন নারী।
এর আগে ১৪ মার্চ দেশে আরও দুজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানানো হয়েছিল, যাদের মধ্যে একজন ইতালি থেকে এবং অন্যজন জার্মানি থেকে সম্প্রতি দেশে আসেন।
গত ৮ মার্চ প্রথমবারের মতো দেশে তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর। তিনজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন নারী ছিলেন। তবে প্রথম আক্রান্ত হওয়া তিনজনই সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে জানিয়েছে আইইডিসিআর।
এদিকে, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বুধবার পর্যন্ত ৭ হাজার ৯৮৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এটি এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১ লাখ ৯৮ হাজার ৪২৬ ব্যক্তিকে আক্রান্ত করেছে। তাদের মধ্যে ১ লাখ ৭ হাজার ৬৭৬ জন বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং এদের মধ্যে ৬ হাজার ৪১৫ জনের অবস্থা গুরুত্বর। বাকি ৯০ হাজার ৭৫০ জনের মধ্যে ৮২ হাজার ৭৬৩ জন বা ৯১ শতাংশ সুস্থ হয়ে গেছেন এবং ৯ শতাংশ মারা গেছেন।
কোভিড-১৯ এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৬২ দেশ ও অঞ্চলকে আক্রান্ত করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে।