মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, দেশে কোরবানির পশুর কোনো সংকট নেই বরং উদ্বৃত্ত রয়েছে।
তিনি বলেন, চলতি বছর কোরবানিযোগ্য মোট গবাদিপশুর সংখ্যা ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩৩। যা গত বছরের চেয়ে ৪ লাখ ১১ হাজার ৯৪৪টি বেশি।
এ বছর কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর মধ্যে ৪৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭৫২টি গরু-মহিষ, ৭৬ লাখ ৯০ হাজার ছাগল-ভেড়া এবং ২ হাজার ৫৮১টি অন্যান্য প্রজাতির গবাদিপশু।
এ বছর কোরবানির পশুর সম্ভাব্য চাহিদা ১ কোটি ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৩৯টি। সে হিসাবে এ বছর ২১ লাখ ৪১ হাজার ৫৯৪টি পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে।
আরও পড়ুন: জাটকা নিধন বন্ধ হলে দেশের মানুষ বড় ইলিশ খাওয়ার সুযোগ পাবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
বুধবার (১৪ জুন) সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর চাহিদা নিরূপণ, সরবরাহ এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোরবানির পশুর অবাধ চলাচল ও পরিবহন নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৮ লাখ ৯৫ হাজার ৪৫৪টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২০ লাখ ৫৩ হাজার ১২৮টি, রাজশাহী বিভাগে ৪৫ লাখ ১১ হাজার ৬১৪টি, খুলনা বিভাগে ১৫ লাখ ১১ হাজার ৭০৮টি, বরিশাল বিভাগে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ২০৬টি, সিলেট বিভাগে ৪ লাখ ১০ হাজার ২২৫টি, রংপুর বিভাগে ১৯ লাখ ৬২ হাজার ৯৫১টি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৪৭টি কোরবানিযোগ্য গবাদিপশু রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, এবারও দেশে উৎপাদিত গবাদিপশু দিয়েই কোরবানির চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। বিদেশ থেকে পশু আমদানির কোনও প্রয়োজন নেই। দেশে প্রাণিসম্পদের উৎপাদন এত বৃদ্ধি পেয়েছে যে কোনভাবেই আমরা বাইরের প্রাণির ওপর নির্ভরশীল হবো না।
অবৈধভাবে দেশে পশু আসলে আমাদের অর্থ দেশের বাইরে অবৈধভাবে চলে যায়।
তিনি বলেন, কোরবানির হাটে এ বছর কোনোভাবেই রোগাক্রান্ত বা অসুস্থ পশু বিক্রি করতে দেওয়া হবে না। এ লক্ষ্যে গত বছরের ন্যায় এবারও সারাদেশে পশুর হাটে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করবে।
তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের মতো এবারও রেলে কোরবানির গবাদিপশু পরিবহন করা হবে। যে অঞ্চলে গবাদিপশুর উৎপাদন বেশি সে অঞ্চল থেকে যে অঞ্চলে উৎপাদন কম সে অঞ্চলে রেলের মাধ্যমে পশু পরিবহন করা যায়।
এক্ষেত্রে রেল বিশেষ সুযোগ দেবে। কম খরচে পশু পরিবহনের সুযোগ করে দিবে। দেশের সর্বত্র যাতে কোরবানির পশু পর্যাপ্ত থাকে সে অনুযায়ী পশু পরিবহনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
খামারিরা যাতে পছন্দ অনুযায়ী হাটে কোরবানির পশু বিক্রি করতে পারে এবং জোর করে কেউ পথে পশু নামাতে না পারে সেজন্য খামারিরা চাইলে ৯৯৯ এ যোগাযোগ করতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে।
মন্ত্রী বলেন, কেউ খামারে পশু বিক্রি করলে তার কাছ থেকে হাসিল আদায় করা যাবে না। কোন খামারি নিজ বাড়ি থেকে পশু বিক্রি করলেও তাকে হাসিল দিতে হবে না। হাটে আনার পথে কেউ পশু বিক্রি করলে তার কাছ থেকে ইজারা গ্রাহক জোর করে চাঁদা বা হাসিল আদায় করতে পারে না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ সময় মন্ত্রী বলেন, হাটে যাতে কৃত্রিম সংকট না হয়, সে জন্য হাটে আনার পথে, বাড়িতে ও পশু বিক্রি করা যাবে। তবে রাস্তায় হাট বসানো যাবে না।
এ ছাড়া ডিজিটাল হাটের মাধ্যমেও পশু বিক্রি করা যাবে।
আরও পড়ুন: অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতায় যেতে চাওয়া রাষ্ট্রদ্রোহিতা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
সমুদ্র সম্পদ নিয়ে গবেষণা ও বিনিয়োগের আহ্বান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর