সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে দ্রুত রিপোর্ট দিতে র্যাবকে নির্দেশনা দেয়ার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রীর কক্ষে সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার দ্রুত বিচার দাবিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেয় ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি (ডিআরইউ)।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে ডিআরইউ আমাকে স্মারকলিপি দিয়েছে। বিচার তো আমরা করতে পারব না, আমরা তদন্ত রিপোর্ট দিতে পারব। আমরা চেষ্টা করছি, অনেক বছর হয়ে গেছে। আমরাও চাই এ রহস্য উন্মোচিত হোক। উদীয়মান এই দুই সাংবাদিক, যাদের অনেক প্রতিভা ছিলো তারা দেশকে অনেক কিছু দিতে পারত। তারা আমাদের মধ্য থেকে চলে গেছেন। আমরাও চাই কেন এই হত্যকাণ্ড হয়েছে, সেটি উদঘাটনের।
মন্ত্রী বলেন, ডিআরইউ’র স্মারকলিপি আমি র্যাবের ডিজিকে এখনই পাঠিয়ে দিচ্ছি। তাড়াতাড়ি একটা কিছু জানায় সেই নির্দেশনা তাদেরকে দেবো। আমরা চেষ্টা করছি রহস্য উদঘাটনের। সাংবাদিক নেতাদেরও বলেছি আপনাদের কাছেও যদি কোন তথ্য থাকে সেগুলো আমাদের জানালে আমরা সেটিও দেখব।
আরও পড়ুন: আন্দোলনের নামে ঢাকার রাজপথ দখলের চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ডিআরইউ’র স্মারকলিপিতে বলা হয়, ক্ষোভ ও দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, ডিআরইউ সদস্য মাছরাঙা টেলিভিশনের সাবেক বার্তা সম্পাদক সাগর সারওয়ার ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের এক দশক পেরিয়ে গেলেও হত্যাকারীদের এখনও শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়নি। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ভোরে রাজধানীর পশ্চিম রাজা বাজারে নিজ বাসায় তাদের শিশুপুত্রের সামনে নির্মমভাবে খুন হন এই সাংবাদিক দম্পতি।
তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আজ ১১ বছর পেরিয়ে গেছে; তদন্তের কোন ধরনের অগ্রগতি নেই। এমনকি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদালত থেকে ৯৫ বার সময় নেয়া হয়েছে।
বিচার না পেয়ে সাগর-রুনীর পরিবারে ও গোটা সাংবাদিক সমাজে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা। কিছুদিন আগে পরলোকগমন করেছেন মেহেরুন রুনির মা নুরুন্নাহার মির্জা। এখনো বিচারের আশা ছাড়েননি সাগর সারওয়ারের বয়োবৃদ্ধ মা সালেহা মুনির ও সাগর-রুনীর একমাত্র পুত্র মাহীর সারওয়ার মেঘ।
যে কোন হত্যার বিচার পাওয়া নাগরিকের অধিকার। আর রাষ্ট্রের দায়িত্ব নাগরিকের সেই অধিকার নিশ্চিত করা। আমরা দেখেছি, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বড় বড় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে; অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। সাগর-রুনি হত্যার কোন কুলকিনারা তারা করতে পারবে না এটা আমরা বিশ্বাস করি না। তাই আর কালক্ষেপণ না করে দ্রুততম সময়ে সাগর-রুনি হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রকৃত খুনিদের মুখোশ উন্মোচনের জন্য ডিআরইউ’র পক্ষ থেকে জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় আমরা আবারও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। এই হত্যার বিচার না পাওয়া পর্যন্ত ডিআরইউ এ দাবি থেকে সরে যাবে না।
এসময় ডিআরইউ'র সভাপতি মুরসালিন নোমানী, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, দপ্তর সম্পাদক কাওসার আজম ও কার্যনির্বাহী সদস্য ইসমাইল হোসাইন রাসেল উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে ডিসিদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
র্যাবের ওপরের মার্কিন নিষেধাজ্ঞা খুব শিগগিরই উঠে যেতে পারে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী