বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, সমগ্র বিশ্ব কোভিড-১৯ মহামারির কারণে একটি নতুন বৈশ্বিক বাস্তবতার মুখোমুখি। প্রতিটি ক্ষেত্র বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে বহুমুখী চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে এই মহামারি। লকডাউন পরিস্থিতি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা, ব্যবসা-বাণিজ্যের স্থবিরতা, নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন, নারীস্বাস্থ্য ও নারীর মানসিক স্বাস্থ্যকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে। কোভিড-১৯ পরবর্তী নেতিবাচক প্রভাব ও নারী সহিংসতা মোকাবিলায় সামাজিক ও বৈশ্বিক সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন।
স্পিকার বুধবার রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে 'থার্ড ইউরেশিয়ান উইমেন্স ফোরাম' অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী দিনে 'উইমেন: এ গ্লোবাল মিশন ইন এ নিউ রিয়েলিটি' শীর্ষক আলোচনা সভায় প্যানেলিস্ট হিসেবে যোগদান করে এসব কথা বলেন। সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রাশিয়ান ফেডারেশনের স্পিকার ভেলেন্টিনা মাতভিয়েনকো অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ থেকে প্রতিনিধিদলের অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান করায় এসময় আয়োজকরা ধন্যবাদ জানান স্পিকার।
তিনি বলেন, ঘরে বসে ভার্চুয়ালি কাজ করার পাশাপাশি সংসার ও সন্তানের পরিচর্যা করতে গিয়ে নারীদের দ্বিমুখী সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। নারীর সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে আরও সমতা ও সাম্যের ভিত্তিতে ভবিষ্যত বিনির্মাণে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ায় তাদের সম্পৃক্ত করতে হবে। তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক ও কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি সম্ভব। কর্মক্ষেত্রে তাদের সমান বেতন নিশ্চিতকরণে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবসম্পদ ও নারীদের উন্নয়নে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। নারীদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জনে গৃহীত পদক্ষেগুলোর যথাযথ বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণ ব্যবস্থা, দরিদ্র নারীদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বলয় কর্মসূচিসহ আরও কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
রাশিয়ান ফেডারেশনের স্পিকার ভেলেন্টিনা মাতভিয়েনকো ও ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার আব্রামসেনকো ভিক্টোরিয়া অনুষ্ঠানে কী-প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে ভাইস রেক্টর মারিয়া আফোনিনা, মোজাম্বিক এসেম্বলির প্রেসিডেন্ট এসপেরানকা লরিন্ডা ফ্রান্সিসকো বায়াস, আজারবাইজানের স্পিকার সাহিবা গাফারোভা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম ঘেব্রিসাস, রাশিয়ান ফেডারেশনের শ্রম ও সামাজিক নিরাপত্তামন্ত্রী এন্টন কোটিয়াকভ, গেবনিজ রিপাবলিকের সিনেট প্রেসিডেন্ট লুসি মাইলবো অবসন প্রমুখ প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, আবিদা আনজুম মিতা এমপি ও খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন এমপি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পরিবেশ ও জলবায়ু সহনশীল পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরি : স্পিকার
রোমের উদ্দেশে স্পিকারের ঢাকা ত্যাগ
প্রধানমন্ত্রীর সংগ্রামী জীবনের ইতিহাস নবীনদের মাঝে ছড়াতে হবে: স্পিকার