পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম বলেছেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে স্মরণকালের সেরা উৎসব।
তিনি বলেন, একটি গোষ্ঠী পদ্মা সেতু না হওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সততা ও সাহসিকতায় পারেনি। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায়। সেতুর উদ্বোধন যেন ঠিকভাবে করা না যায় সেজন্যও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। কিন্তু কোনো লাভ হবে না। দেশের ইতিহাসে স্মরণকালের সেরা ও ঐতিহাসিক উৎসব হবে পদ্মার পাড়ে। ৭১ পরাজিত শক্তি ও স্বাধীনতা বিরোধীরা এবং ডা. ইউনুসসহ অনেকেই পদ্মা সেতু বন্ধ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমাদের কেউ দাবায়া রাখতে পারবা না সেই শপথ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে ঘোষণা দিয়েছিলেন নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করবেন সেটা করে দেখিয়েছেন।
শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে শরীয়তপুর সাংবাদিক সমিতি,ঢাকার নতুন নেতৃত্বের অভিষেক ও ‘স্বপ্নের পদ্মা সেতু: সমৃদ্ধির পথে শরীয়তপুরসহ দক্ষিণাঞ্চল শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এনামুল হক শামীম বলেন, ২০০১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেছিলেন। বিএনপি ক্ষমতায় এসে তা বন্ধ হয়ে যায়। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পদ্মা সেতুর অগ্রাধিকার তালিকায় রাখেন। সে সময় বিশ্বব্যাংক একটি মিথ্যা অজুহাত দিয়ে অপবাদ দেয়ার চেষ্টা করেছিল।
এরপর প্রধানমন্ত্রী চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, নূন্যতম দুর্নীতি হয়নি। কানাডার আদালতে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ হয়নি। প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর ঘোষণা করেন। সেসময় কিছু ব্যক্তি ও পত্রিকা বিদ্রুপ করেছিল। সবার আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন করেছিলেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বিশ্বের একজন সৎ দক্ষ বিচক্ষণ প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশকে বিশ্বে মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা শেখ রেহানা,জয়,টিউলিপ সিদ্দিক, ববি ও বঙ্গবন্ধু রক্ত ও পরিবারের সদস্যগণ সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু উদ্বোধন বানচালের ষড়যন্ত্র রুখতে সতর্ক থাকার আহবান তথ্যমন্ত্রীর
আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া’ পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করেছিলেন। ডাহা মিথ্যা কথা। বিএনপির জন্মই মিথ্যার উপর। মিথ্যা বলাটাই তাদের স্বভাবে পরিণত হয়েছে।
আগামী নির্বাচনেও দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবে। কারণ উন্নয়নের কারণে ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে ভোট দিবে। বিএনপিকে কী কারণে ভোট দেবে? তারা কি জনগণের জন্য রাজনীতি করে? মানুষের পাশে দাঁড়ায়।
শরীয়তপুরের বিভিন্ন উন্নয়ন তুলে ধরেন উপমন্ত্রী বলেন,পদ্মার ভাঙ্গন থেকে শরীয়তপুরবাসীকে রক্ষার জন্য কাজ করছি। বর্তমান সরকার আমলে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে। জুলাই মাসে ক্যাবিনেটে শেখ হাসিনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থাপন হবে। ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে উদ্বোধন করাবো।
উপমন্ত্রী শামীম মেঘনা সেতুর কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে বলেন, শরীয়তপুর-চাঁদপুর মেঘনা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। সয়েল টেস্ট সাতটা শেষ, দুটি বাকী রয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি শেষ করে আগামী জানুয়ারি মাসে মুল সেতু নকশাতে যাবে। মেঘনা সেতু হওয়ার পর দুরত্ব ৬০ কিলোমিটার কমে যাবে চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা।
শরীয়তপুর সাংবাদিক সমিতি সভাপতি বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ইয়াং বাংলার আহবায়ক শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো.আখতার হোসেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. হেলাল উদ্দিন, প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুস সালাম, শরীয়তপুর সাংবাদিক সমিতির উপদেশ পরিষদের সদস্য রফিকুল ইসলাম আজাদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিবসহ শরীয়তপুর সাংবাদিক সমিতির সদস্যবৃন্দ।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাণিজ্য বাড়াবে পদ্মা সেতু
পদ্মা সেতু মর্যাদার প্রতীক, এর ওপর অনেকটাই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে: জয়