চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে শনিবার বিকালে ঢাকায় আসার কথা রয়েছে।
শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানান, দুই দিনের সফরে শনিবার বিকাল ৫টায় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বিমানবন্দরে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস তার কর্মসূচির সময়সূচি বিস্তারিত জানায়নি।
মন্ত্রী ওয়াং রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করবেন এবং একই দিনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে রবিবার সকাল সাড়ে ৭টায় রাজধানীর একটি হোটেলে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই বৈঠকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরেকজন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ‘এটি অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় সফর থেকে আলাদা হতে চলেছে। আমি এই মুহূর্তে আপনাকে বিস্তারিত বলতে পারব না, কারণ এখনও শেষ মুহূর্তের আলোচনার ওপর অনেকগুলো বিষয় নির্ভর করছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শনিবার সন্ধ্যায় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করবেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
আরও পড়ুন: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর: ঢাকা ও বেইজিংয়ের মধ্যে একাধিক সহযোগিতা চুক্তির সম্ভাবনা
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামের বৈঠকে (৫-৬ আগস্ট) যোগদান শেষে কম্বোডিয়া থেকে শনিবার রাতে দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ওয়াংয়ের সফরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে একাধিক সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তালিকাটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি, তবে পাঁচ-সাতটি হতে পারে।
তিনি আশ্বস্ত করেন, পরিকল্পিত সমঝোতা স্মারক ও চুক্তিগুলো বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে, যদিও তালিকাটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক ‘গভীর ও বিস্তৃত’ এবং দুই দেশ ভবিষ্যতের সহযোগিতার ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ চীন সরকারের কাছে আরও জোরালো ভূমিকা চাইবে।
বাংলাদেশ ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে স্থান দিয়েছে। সংকট আলোচনা ও সমাধানের জন্য বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীন-এই ত্রিপক্ষীয় আলোচনা চলছে।
এর আগে বুধবার পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বাংলাদেশ আবার চীন থেকে ঋণ নিতে যাচ্ছে কি না এক সাংবাদিকের করা এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘এবার নতুন করে ঋণ নেয়ার বিষয়টি নেই।’
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সঙ্কটের মধ্যে এই সফর কী বার্তা দেবে- জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এই সফরটি এই অঞ্চলে চীনা পক্ষের নিয়মিত সফরের অংশ এবং এটি দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক পর্যালোচনা করার একটি সুযোগ।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ওয়াং ই ঢাকায় এক ঘন্টার যাত্রাবিরতি করেছিলেন। ‘এবার, তিনি আরও দীর্ঘ সময়ের জন্য আসবেন।’
ওয়াং ১৯তম সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, স্টেট কাউন্সিলর ও স্টেট কাউন্সিলের লিডিং সিপিসি মেম্বারস গ্রুপের সদস্য।
আরও পড়ুন: ঢাকার এক চীন নীতিকে স্বাগত জানাল বেইজিং