রাজশাহী নগরীতে ‘প্রেমিকা’র সামনে কীটনাশক পানের পর বুকে ছুরি চালিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন এক যুবক। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় ‘মাস্টার শেফ’ নামের একটি রেস্তোরাঁর সামনে এ ঘটনায় বুলবুলের ‘প্রেমিকা’ ও তাঁর এক বান্ধবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
নিহত যুবকের নাম বুলবুল আহমেদ (২৬)। জেলার পুঠিয়া উপজেলার বিড়ালদহ নয়াপাড়া গ্রামের আমরুল ইসলামের ছেলে তিনি। বুলবুল একজন ফার্নিচার ব্যবসায়ী ছিলেন।
পুলিশ জানায়, বুলবুল অবিবাহিত ছিলেন। তবে তাঁর ‘প্রেমিকা’ বিবাহিত। তাঁর সন্তানও আছে।
পুলিশের ধারণা, ওই নারীর সাথে বুলবুলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পুলিশের হেফাজতে নেয়ার আগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কোন কথা বলতে চাননি।
তবে তাঁর বান্ধবী জেমি জানিয়েছেন, রেস্তোরাঁয় প্রথমে বুলবুল কীটনাশক পান করেন। এরপর নিজের বুকে নিজেই ছুরি বসান। এরপর তারা তাকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক বুলবুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর পুলিশ ওই রেস্তোরাঁয় গিয়ে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখেছে। ওই তিনজন রেস্তোরাঁয় বসে আছেন এমন ফুটেজ দেখা গেছে। তবে সিসি ক্যামেরার কিছু অংশের ফুটেজ পাওয়া যায়নি। তাই ঘটনার সময়ের ফুটেজ পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ সিসিটিভি'র ডিভিআর জব্দ করেছে।
রেস্তোরাঁটির মালিক এসএম শিহাব উদ্দিন বলেন, ঘটনার সময় তিনি রেস্তোরাঁয় ছিলেন না। তবে কর্মীরা জানিয়েছেন, রেস্তেরাঁর মধ্যে ওই ধরনের কোন ঘটনা তাঁরা দেখেননি। বরং ওই তিনজন খাবার পার্সেল নিয়েছেন এবং বুলবুল বিল পরিশোধ করেছেন। রেস্তোরাঁয় এ ধরনের ঘটনা ঘটলে বিল পরিশোধ হতো না।
নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, দুই তরুণীর বর্ণানামতে ঘটনাস্থল মাস্টার শেফ রেস্তোরাঁ। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।
আরও পড়ুন:আশুলিয়ায় স্ত্রী, সন্তানকে হত্যার পর রিকশাওয়ালার ‘আত্মহত্যা’
ওসি জানান, রেস্তোরাঁয় বুলবুল শাড়ি, থ্রি-পিস, লকেটসহ আরও কিছু উপহার নিয়ে গিয়েছিলেন। একটা ডায়েরি পাওয়া গেছে। ব্যাগে একটা চিরকুটও পাওয়া গেছে। চিরকুটে ওই নারীর নাম উল্লেখ করে লেখা হয়েছে, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যেমন অক্সিজেন দরকার, তেমনি বুলবুলেরও বাঁচার জন্য ……কে দরকার।
ওসি বলেন, এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। অভিমানে এটা হতে পারে। কেন ঘটেছে সেটিও বুলবুলের প্রেমিকা ও তাঁর বান্ধবীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বলা যাবে। সে কারণে হাসপাতাল থেকে তাঁদের দুজনকেই পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান ওসি।