ফোনালাপে আড়িপাতা প্রতিরোধের নিশ্চয়তা ও ফাঁস হওয়া ঘটনাগুলোর তদন্ত করার নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদন সরাসরি খারিজ (সামারালি রিজেক্ট) করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. শিশির মনির ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এবং বিটিআরসির পক্ষে আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
আরও পড়ুন: অনিবন্ধিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রণয়নের নির্দেশ হাইকোর্টের
গত ১০ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির এ রিট দায়ের করেন। শিশির মনির রিট খারিজের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আবেদনে বিবাদী করা হয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভগের সচিব এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান।
রিটের পর শিশির মনির জানিয়েছেন, ২০১৩ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সংঘটিত ১৬ আড়িপাতার ঘটনা রিটে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার সংলাপ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ফোনালাপ, প্রয়াত সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও রাজশাহী মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার নাজমুল হাসানের ফোনালাপ উল্লেখযোগ্য। এসব আড়িপাতার ঘটনা বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বহুল প্রচারিত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এসব ঘটনা ফাঁসের পেছনে জড়িতদের বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতি কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
রিটে বলা হয়, সংবিধানের ৪৩ অনুচ্ছেদে চিঠিপত্র ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনীয়তা সংরক্ষণ নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এছাড়াও ২০১১ সালের ১৬ এপ্রিল বাংলাদেশষ টেলিকিমিউনিকেশন রেগুলেটরি অ্যাক্ট ২০০১ প্রণয়ন করা হয়। আইনের ৩০ (চ) ধারা অনুযায়ী টেলিযোগাযোগের একান্ততা রক্ষা নিশ্চিত করা এই কমিশনের দায়িত্ব। কিন্তু এই ধরনের ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা অহরহ ঘটছে। অথচ, বাংলাদেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী কমিশনের দায়িত্ব হলো ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংরক্ষণ নিশ্চিত করা।
রিটকারী ১০ আইনজীবী হলেন—অ্যাডভোকেট রেজওয়ানা ফেরদৌস, উত্তম কুমার বনিক, শাহনা বিলাকাশফী, ফরহাদ আহমেদ সিদ্দীকী, মোহাম্মদ নওয়াব আলী, মোহাম্মদ ইবরাহিম খলিল, মুস্তাফিজুর রহমান, জিএম মুজাহিদুর রহমান (মুন্না), ইমরুল কায়েস ও একরামুল কবির।