বগুড়ায় বিচারকের সই জাল করে মাদক মামলার আসামিদের অব্যাহতি দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে বগুড়া মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজিএম) আদালতের কর্মচারীসহ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৭ অক্টোবর) বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- সিজিএম আদালতের বেঞ্চ সহকারী কামরুজ্জামান, জারীকারক এম এ মাসুদ, তার শ্যালক হারুন অর রশিদ (সাজন), সদ্য অবসরপ্রাপ্ত পেশকার আব্দুল মান্নান ও মোক্তার হোসেন।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে ২ শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩
গ্রেপ্তার বাদে অন্য চার আসামি হলেন- অবসরপ্রাপ্ত পেশকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আবু সাহেদ, নিশিন্দারা এলাকার ওহেদুজ্জামান মাসুদ, নওগাঁর আয়েশা আক্তার শিমু ও মরিয়ম আক্তার নিপু।
জানা যায়, মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মাকসুদুর রহমান বাদি হয়ে ৯জনকে আসামি করে মামলাটি করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, পেশকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আবু সাহেদসহ পাঁচজন ২০২০ সালের একটি মাদক মামলার আসামি। চলতি বছরের ১৪ মে এই মামলার আসামিদের সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ছিল। মামলার আরেক আসামি আয়েশা আক্তার শিমু জামিন নিয়ে পলাতক ছিলেন। তবে সেদিন আবু সাহেদ, মোক্তার হোসেন, ওয়াহেদুজ্জামান হাজিরা দেন। আর মরিয়ম আক্তার নিপুর পক্ষে তাদের আইনজীবী আদালতে সময় প্রার্থনা করেন। সাক্ষী না থাকায় বিচারক জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মির্জা শায়লা আসামিদের সময় প্রার্থনা মঞ্জুর করে আরেকটি দিন ধার্য করেন।
কিন্তু এই দিন ধার্যের আদেশের নথি আদালত থেকে গায়েব হয়ে যায়। পরবর্তীতে পাঁচ মাস পর ১৪ অক্টোবর বিকালে বেঞ্চ সহকারী আব্দুর রশিদ একটি নথি পান।
এতে দেখা যায়, সাবেক পেশকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আবু সাহেদের পক্ষে ফৌজদারি কার্যবিধি ২৪৯ ধারার বিধান মতে ওই মামলার কার্যক্রম স্থগিতের নথিতে আসামিদের অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া আছে।
বিষয়টি খোঁজখবর করে আদালত কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারে সিজিএম আদালতের বেঞ্চ সহকারী কামরুজ্জামান, জারীকারক এম এ মাসুদ, তার শ্যালক হারুন অর রশিদের (সাজন) যোগসাজশে বিচারকের সই জালিয়াতি করেছেন।
জালিয়াতি মামলার বাদি মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, আব্দুল মান্নান আদালতের পেশকার ছিলেন। তার ছেলে আবু সাহেদ ২৬০ পিস ইয়াবা নিয়ে গ্রেপ্তার হন। সেই মামলার শুনানি ছিল। পেশকার হওয়ার সুবাদে তিনি আদালদের অন্য কর্মচারীদের হাত করে নথি জালিয়াতি করেন।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ওলি উল্লাহ বলেন, সিজিএম আদালত থেকে বিচারকের সই ও নথি জালিয়াতির ঘটনা পুলিশকে জানানো হয়। পরে সোমবার আদালত থেকে তিন কর্মচারীকের গ্রেপ্তার করা হয়। আর শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে অভিযান পরিচালনা করে আব্দুল মান্নান ও মোক্তার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন: ভোলায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরায় ৩৪ জেলে গ্রেপ্তার