পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বনভূমিতে গারোদের অধিকার সংরক্ষণে কাজ করছে সরকার।
তিনি বলেন, বনবাসীদের সঙ্গে বন বিভাগের দ্বন্দ্ব নিরসনে কাজ করা হবে। এলক্ষ্যে সামাজিক বনায়ন বিধিমালার প্রয়োজনীয় সংশোধনের কাজ চলছে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজে গারো সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ফসল কাটার উৎসব ‘ওয়ানগালা’ উদযাপন উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র ও পরিবেশ সুরক্ষায় নিরপেক্ষ-নির্ভীক সাংবাদিকতা অপরিহার্য: রিজওয়ানা হাসান
তিনি বলেন, বন নির্ভর জনগোষ্ঠীর ভূমির অধিকার, পানির অধিকার, যাতায়াতের অধিকার, গোচারণের অধিকার এবং বনজ দ্রব্য আহরণের অধিকার আইনগতভাবে নির্ধারণ করা হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, গারোদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আদিবাসী পরিষদ কাজ শুরু করেছে। মধুপুর বনের বিরোধপূর্ণ সীমানা চিহ্নিত করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় উন্নয়ন কার্যক্রমে বনবাসীদের বাইরে রেখে কিছু করা হবে না। বালু দস্যু ও পাথর খেকোদের বিরুদ্ধে ভূমি ও পানি মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করবে। সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বন রক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, ওয়ানগালা গারো সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বিশেষ প্রতীক। এটি আমাদের সমাজে সম্প্রীতির শক্তি বাড়ায়। ওয়ানগালা প্রকৃতি ও মানবসমাজের সম্পর্কের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ফসল কাটার এই সময় প্রকৃতির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মুহূর্ত। আমাদের সকলের উচিত পরিবেশ সুরক্ষায় গারোদের মত প্রাকৃতিক সম্পদের যত্ন নেওয়া।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা গারো সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য ও সংগীত উপভোগ করেন এবং প্রকাশিত বিশেষ ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন করেন।
সীমান্ত চিসিম, নকমা, ঢাকা ওয়ানগালা ২০২৪-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনবিআর সদস্য ফজলুল হক, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য) নাফরিজা শায়মা, লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ, কবি ও গবেষক পরাগ রিচিল, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার মো. শাকির হোসেন, কারিতাস ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক থিওফিল নকরেক, উন্নয়ন গবেষক ড. বাপন মানখিন, বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ ড. মশিউর রহমান, দ্য ক্রিশ্চিয়ান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের সভাপতি হেমন্টো করায়া প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং শিক্ষার্থীসহ গারো জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নদী-খাল দখলদারদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের এখনই সময়: পরিবেশ উপদেষ্টা