সিলেটে ভয়াবহ বন্যায় ৪০ হাজারের বেশি কাঁচা বাড়িঘর আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার আহসানুল আলম জানান, সিলেট সিটি করপোরেশন ব্যতীত জেলার ১৩টি উপজেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ৪০ হাজার ৯১টি কাঁচা ঘরবাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ তালিকা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়ছে এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ঘরবাড়ি নির্মাণ বা মেরামতের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ বা অনুদান প্রদানের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বুধবার পর্যন্ত জেলার ৬১৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৫২ হাজার ৭৮৪ জন লোক আশ্রয় গ্রহণ করেন। প্রত্যক্ষভাবে গ্রামীণ জনপদের ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৩৮৩টি পরিবার বিভিন্নভাবে ঘরবাড়ি ভেঙ্গে এবং ফসল নষ্ট হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।
সিলেট জেলায় সাম্প্রতিক বন্যায় নগরীসহ ১৩টি উপজেলা ও পাঁচটি পৌরসভা প্লাবিত হয়। এতে জেলার প্রায় ৩০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন: উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আরেক দফা বন্যার আশঙ্কা
এদিকে আগামী কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আরেক দফা বন্যার পূর্বাভাস দিচ্ছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, আগামী কয়েকদিন সিলেট বিভাগে ভারী থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
বুধবার সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী একেএম নিলয় পাশা জানান, ‘ভারতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে উজান থেকে আসা পানি সিলেট অঞ্চলকে প্লাবিত করতে পারে।’
এছাড়া একই দিন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (বিডব্লিউডিবি) জানিয়েছে, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম ও হিমালয় পাদ্দেশীয় পশ্চিমবঙ্গের (জলপাইগুড়ি, সিকিম) বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় আরও একজনের মৃত্যু, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮৮
সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলাসহ উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের নিচু এলাকার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে বলে সর্বশেষ সতর্কবার্তায় জানিয়েছে সংস্থাটি।
তবে স্বাধীন আবহাওয়া গবেষণা দল বাংলাদেশ ওয়েদার অবসারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) জানিয়েছে, জুলাইয়ের মাঝামাঝি পরে বন্যা পরিস্থিতির আর অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।