বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিনের অপসারণ দাবিতে এক দফা আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। রবিবার (৪ মে) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট শিক্ষকদের পুনর্বাসন, শিক্ষার্থীদের ২২টি দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে তার অপসারণ দাবি করেন।
অবিলম্বে উপাচার্যকে অপসারণ না করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়সহ গোটা দক্ষিণাঞ্চল শাটডাউন করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চলমান আন্দোলন ও সার্বিক বিষয়ে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন উপাচার্য। তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে জানান। শিক্ষার্থীরা তার সঙ্গে বৈঠকে বসার আহ্বানে সাড়া না দিয়ে এক দফার ঘোষণা দেয়।
এ ছাড়াও ক্যান্সার আক্রান্ত ববি শিক্ষার্থী জেবুন্নেছা হক জিমি উপাচার্যের কাছে সহায়তা চেয়েও না পেয়ে বিনাচিকিৎসায় মৃত্যুর ঘটনা তুলে তীব্র প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা। এক দফার আন্দোলনে ববির সকল সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন সংহতি প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: অপসারণ দাবিতে ববির রেজিস্ট্রারের কক্ষে তালা, কুশপুতুল দাহ
শিক্ষার্থী সুজয় শুভ বলেন, ‘এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সমস্যা নিয়ে উপাচার্যের কাছে ২২ দফা দাবি দিয়েছিলাম। কিন্তু ৬ মাস কেটে গেলেও তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। জুলাই আন্দোলনে হামলাকারী শিক্ষার্থীদের অন্যতম শাহরিয়ার শানকে ছাত্রলীগ দরজা ভেঙে নিয়ে গেলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। অথচ যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নামে আওয়ামী কায়দায় একের পর এক মামলা দিচ্ছে ববি প্রশাসন। এসব কারণে উপাচার্য তার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন।’
শিক্ষার্থী সুজয় শুভ আরও বলেন, ‘বর্তমান উপাচার্য দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে ফ্যাসিস্ট শিক্ষকদের পুনর্বাসন করে চলেছেন। পাশাপাশি যারা দীর্ঘদিন ধরে যৌক্তিক আন্দোলনে করে আসছেন তাদের কারও কথায় কর্ণপাত করেননি তিনি। সাম্প্রতিক সময়ে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ক্যান্সার আক্রান্ত এক শিক্ষার্থীর সাহায্যের আবেদন চেয়ে দরখাস্ত করেন। কিন্তু পাঁচ মাসে উপাচার্যের সই মেলেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গণতান্ত্রিক পরিষদে ওনার মতো স্বৈরাচারী লোক থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। যদি অবিলম্বে এ স্বৈরাচার উপাচার্যকে অপসারণ না করা হয় তবে বিশ্ববিদ্যালয়সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গ শাটডাউন করে দেওয়া হবে। এখানে শিক্ষার্থীবান্ধব কোনো ব্যক্তিকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।’
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় চলমান এ বিষয় নিয়ে উপাচার্য তার বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বসার কথা বলেন।