প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ও জাপান সফলভাবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে বিদ্যমান ‘বৃহৎ অংশীদারিত্ব’ থেকে ‘কৌশলগত অংশীদারিত্বে’ উন্নীত করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আনন্দিত যে বাংলাদেশ ও জাপান সফলভাবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে বিদ্যমান ' বৃহৎ অংশীদারিত্ব' থেকে 'কৌশলগত অংশীদারিত্বে' উন্নীত করেছে।’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি হামিদের সঙ্গে শেষবারের মতো বঙ্গভবনে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী
বুধবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে তার কার্যালয়ে শীর্ষ বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতি প্রদানকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন যে কিশিদা ও তিনি বৈঠকে তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘উভয়পক্ষ আটটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেছে যা কৃষি, শুল্কবিষয়ক, প্রতিরক্ষা, আইসিটি ও সাইবার-নিরাপত্তা, শিল্প উন্নয়ন, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি, জাহাজ পুনর্ব্যবহার এবং মেট্রোরেলের ক্ষেত্রে আমাদের ভবিষ্যত সহযোগিতাকে প্রাতিষ্ঠানিক করে তুলবে।’
শেখ হাসিনা বলেন যে তারা রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা করেছেন কারণ রোহিঙ্গাদের অতিরিক্ত উপস্থিতি বাংলাদেশের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জাপানকে অনুরোধ করেছি মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে সঙ্কটের একটি টেকসই সমাধান খুঁজতে।’
চলতি বছরের মধ্যেই ঢাকা-নারিতা সরাসরি ফ্লাইট চালুর ঘোষণা দেন তিনি।
তিনি উল্লেখ করেন যে তারা বঙ্গোপসাগর ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলকে সংযুক্ত করার জন্য মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন উদ্যোগ (এমআইডিআই) এবং দক্ষিণ বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য বিআইজি-বি উদ্যোগ সম্পর্কেও আলোচনা করেছেন।
আরও পড়ুন: তিন বছর পর গণভবনে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী
বিআইজি-বি উদ্যোগের লক্ষ্য হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বেল্ট এলাকা এবং এর বাইরে অর্থনৈতিক অবকাঠামো উন্নয়ন, বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়ন এবং যোগাযোগ জোরদারসহ শিল্পাঞ্চলকে ত্বরান্বিত করা। জাপানের উন্নত প্রযুক্তি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অভিজ্ঞতার সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে এই উদ্যোগ উভয় দেশের পারস্পরিক সুবিধা ও সমৃদ্ধি বয়ে আনবে বলে আশা প্রকাশ করেন দুই প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ উন্নয়ন অংশীদার হওয়ার জন্য জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা সামনের দিনগুলোতে একটি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) সম্পাদনের অপেক্ষায় রয়েছি।’
দু'দেশের জনগণ ও সরকারের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার বোঝাপড়া, বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা আগামী বছরগুলোতে আরও জোরদার হবে বলে তিনি আস্থা প্রকাশ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে জাপান একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে।
শেখ হাসিনা স্মরণ করেন যে ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি যে কয়েকটি দেশ বাংলাদেশকে প্রাথমিক স্বীকৃতি দিয়েছিল তাদের মধ্যে জাপান অন্যতম।
তিনি বলেন, ‘১৯৭৩ সালের অক্টোবরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক জাপান সফর আমাদের দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের ভিত্তি স্থাপন করে।’
এর আগে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এখানে পৌঁছালে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রবেশপথে ফুমিও কিশিদা তাকে স্বাগত জানান।
তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রী যৌথ বিবৃতিতে সই করেন। তারা দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) বিনিময়ও প্রত্যক্ষ করেন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি হামিদকে বিদায় জানাতে প্রস্তুত হচ্ছে বঙ্গভবন