বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য আরও সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচলের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিউনিন রশিদ নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে দুজনের আলোচনায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা।
সাক্ষাৎকালে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, মালদ্বীপের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। তাই মালদ্বীপ বাংলাদেশ থেকে পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটজাত পণ্য আমদানি করতে পারে। এছাড়া মালদ্বীপের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি জাহাজ চলাচল চালু হলে উভয় দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য আরও সম্প্রসারিত হবে আমি আশা করি।
তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় উভয় দেশই ভূ-রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং মেরিটাইম সেক্টরে সমৃদ্ধ। বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপ টেক্সটাইল, ফল-মূল, শাকস-বজিসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী আমদানি করে থাকে। একইভাবে মালদ্বীপেও বাংলাদেশের ১ লাখের বেশি অভিবাসী সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। প্রবাসী বাংলাদেশিরা মালদ্বীপের নির্মাণ, পর্যটন, বিপণন, যোগাযোগ ও স্বাস্থ্য খাতসহ প্রায় সব ক্ষেত্রেই কাজ করছেন। এর মাধ্যমে বন্ধুপ্রতিম দুই দেশেরই অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পুলিশ-জনগণের সম্পর্ক পুনঃস্থাপন জরুরি: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
এ সময় মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিউনিন রশীদ বলেন, বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে শিগগিরই সরাসরি জাহাজ চলাচলের উদ্যোগ নেওয়া হবে। মালদ্বীপের ব্যবসায়ীরাও এ বিষয়ে অত্যন্ত ইতিবাচক।
তিনি বলেন, উভয় দেশের মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ আরও বাড়াতে সরাসরি জাহাজ চলাচল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কনটেইনার, সাধারণ যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের পাশাপাশি সমুদ্রপথে উভয় দেশের মধ্যে ক্রুজ সার্ভিস চালু করা যেতে পারে। এর মধ্য দিয়ে উভয় দেশের পর্যটন বিকশিত হবে।
এ সময় বাংলাদেশের মেরিন অ্যাকাডেমিগুলোতে প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য মালদ্বীপ থেকে ক্যাডেট পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের মেরিন অ্যাকাডেমিগুলোতে মেরিনবিষয়ক আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। মালদ্বীপের নিয়মিত ক্যাডেটরা এখান থেকে উন্নতমানের প্রশিক্ষণ নিতে পারে।
শিউনিন রশীদ নৌপরিবহন উপদেষ্টার এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, মালদ্বীপ সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিনিময় কর্মসূচিতে একযোগে কাজ করতে আগ্রহী। মালদ্বীপের ব্যবসায়ীরা পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ট্রান্সশিপমেন্ট নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে আসছেন।
এছাড়া দুই দেশের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন হাইকমিশনার।
সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক বিদোষ চন্দ্র বর্মণ।
আরও পড়ুন: ২ বছরের মধ্যে মোংলা বন্দরে কর্মচাঞ্চল্য বাড়বে: নৌপরিবহন উপদেষ্টা