জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ওয়াশ (ওয়াটার, স্যানিটেশন অ্যান্ড হাইজিন) সেবার উন্নয়ন এবং বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে পানির ঘাটতি পূরণ ব্যবস্থা প্রচারের লক্ষ্যে এবার কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন ও ওয়াটারএইড বাংলাদেশ যৌথভাবে কাজ করছে।
সাভার ও সুনামগঞ্জে পানি ও স্যানিটেশন নিরাপত্তার উন্নয়নের জন্য ‘প্রোমোটিং ওয়াটার রিপ্লেনিশমেন্ট অ্যান্ড ওয়াশ সার্ভিসেস’- শিরোনামের একটি প্রকল্পে কাজ করবে তারা।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ১৮ মাস পর্যন্ত চলাকালীন প্রকল্পটি চলবে।
আরও পড়ুন: ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধারকাজের উপযোগী অবকাঠামো তৈরি করতে হবে: মন্ত্রী
সোমবার (১৫ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এই প্রকল্পের আওতায় টেকসই পানির নিরাপত্তার জন্য সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অব দ্য প্যারালাইজড (সিআরপি)-র ক্যাম্পাসে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে।
এছাড়া, পান করা ছাড়া অন্য প্রয়োজনের ক্ষেত্রে বৃষ্টির পানি ব্যবহার করার জন্য কার্যকর রিসাইক্লিং পদ্ধতি চালু করা হবে। সাভারের সিআরপি-তে কাজের পাশাপাশি জুলাই ২০২২-এর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সুনামগঞ্জ জেলায়ও সংস্কারের কাজ হাতে নেওয়া হবে।
কার্যকর স্যানিটেশন ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের উদ্দেশ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দুইটি স্কুল ও পাঁচটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বেছে নেওয়া হয়েছে।
এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে ৩০ হাজারের বেশি সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছানো যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট সাদিয়া ম্যাডসবার্গ বলেন, দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশনের কাছে নিরাপদ পানির টেকসই সহজলভ্যতা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
তিনি আরও বলেন, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পানির সহলভ্যতা বাড়াতে ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কাজে সহায়তা করতে পেরে আমরা গর্বিত।
এই প্রকল্পটি সুনামগঞ্জে বসবাসকারী জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সহনশীলতা তৈরি করবে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার পুনর্বাসন সহায়তার পাশাপাশি এর লক্ষ্য থাকবে বিশেষত যেকোনো দুর্যোগের সময় ওয়াশ সংস্থানগুলোর পরিচালনা বিষয়ে প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জনের জন্য স্থানীয় জনগোষ্ঠীর দক্ষতার উন্নয়ন করা।
আরও পড়ুন: ডিএনসিসির মশকনিধন কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে বিএনসিসি ও স্কাউট
প্রকল্পটি ৬০ হাজার এর বেশি প্রত্যক্ষ সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। যাদের ৬০ শতাংশ-এর বেশি কিশোর-কিশোরী এবং/অথবা তরুণী।
ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, পরিবর্তিত জলবায়ুর কারণে বাংলাদেশের মতো দেশকে নানা ধরনের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। এর অন্যতম হলো জনগোষ্ঠী ও পরিবেশের জন্য পানির নিরাপত্তা।
তিনি আরও বলেন, আমরা জানি যে, টেকসই বাংলাদেশ এবং সংরক্ষণ ও সহনশীলতার মডেল গড়ে তোলার জন্য পানি ও স্যানিটেশন নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওয়াটারএইড এবং কোকা-কোলা বাংলাদেশের এই যৌথ প্রকল্পের মাধ্যমে জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য একটি বাস্তব পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব।
একইসঙ্গে পানির নিরাপত্তার জন্য বৃহৎ আকারের অভিযোজন সমাধান প্রদর্শন ও জনগোষ্ঠীর মাঝে ওয়াশ সহজলভ্য করে তোলাও সহজ হবে।
২০১৭ সালে সংস্থা দুইটি মিলিতভাবে একটি ওয়াশ উদ্যোগ নিয়ে কাজ করেছিল। এর লক্ষ্য ছিল স্কুল এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য জলবায়ু-সহনশীল অন্তর্ভুক্তিমূলক স্যানিটেশন সুবিধার বিকাশ করা, জনগোষ্ঠীর মাঝে স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা, ওয়াশ অভিযোজন সম্পর্কে স্থানীয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জ্ঞান বৃদ্ধি করা এবং নির্দিষ্ট কাজের জন্য পানি প্রযুক্তি (ভূগর্ভস্থ পানি রিচার্জ সিস্টেম এবং রিভার্স অসমোসিস প্ল্যান্ট) স্থাপন করে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী পানযোগ্য পানির প্রাপ্যতা বৃদ্ধি করা।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২৭টি বিদ্যালয় ও ৪০০টি পরিবারকে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা প্রদান করা হয়েছে, যার ফলে ১৯ হাজারের বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী পেয়েছে উন্নত স্যানিটেশনের সুবিধা।
সেই সঙ্গে ৭ হাজারের বেশি নারী ও মেয়ের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতেও কাজ করা হয়েছে।
এছাড়া জনগোষ্ঠীর ৫৩ হাজারের বেশি মানুষের জন্য স্যানিটেশন সুবিধা উন্নত করেছে প্রকল্পটি।