ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) বাংলাদেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় বিস্ময়কর ভূমিকা রাখছে। এছাড়া আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ব্যাংক সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততার শিকল ভাঙ্গতে পারেনি, কিন্ত এমএফএস তা পেরেছে।
তিনি বলেন, এমএফএস সেবা দেশের জনগণ ব্যবহার করার সক্ষমতা অর্জন করেছে এবং জনগণের কাছে তা গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে।
এমএফএস যাতে জনগণ সঞ্চয় করতে পারে সে ব্যবস্থা রাখার প্রয়োনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে মন্ত্রী বলেন, এতে জনগণের অংশগ্রহণ অনেক বেশি সমৃদ্ধ হবে।
আরও পড়ুন: প্রতিটি থানায় সাইবার ইউনিট গঠন করা প্রয়োজন: টেলিযোগাযোগমন্ত্রী
বুধবার ঢাকায় আইডিয়া ফাউন্ডেশন আয়োজিত বাংলাদেশের আর্থিক অন্তর্ভূক্তি শক্তিশালী করণে এমএফএসের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারাবাহিকতায় কাগজের নোটের দিন শেষ হয়ে আসছে উল্লেখ করে বলেন, প্রচলিত পদ্ধতিতে আর্থিক ব্যবস্থাপনার দিন ফুরিয়ে আসছে। সামনের পাঁচ বছরে বিশ্ব আর্থিক ব্যবস্থাপনা কোথায় যাবে আমরা কেউ জানি না। দেশের মুদ্রা ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্ব। তবে এই মুদ্রা কাগজের নোট ছাড়া অন্যকোন ভাবে লেনদেন হবে এটা গভীর বিবেচনায় নিতে হবে।
ডিজিটাল প্রযুক্তির ভবিষ্যত গতিবিধি আয়ত্ত্ব করে আমাদের সামনে এগুতে হবে বলে উল্লেখ করেন ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত।
মন্ত্রী ডিজিটাল প্রযুক্তির ভিত্তির ওপর স্মার্ট প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের ওপর দাঁড়িয়ে ২০৪১ সালে স্মাট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ফলে আমরা অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লবে অংশগ্রহণে ব্যর্থ হওয়ায় শতশত বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদৃষ্টি সম্পন্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল প্রযুক্তিতে পৃথিবীর সমান্তরালে এসেছি।
এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে পৃথিবীর একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশে কম্পিউটার ও মোবাইল ফোনের বিকাশের বিপ্লবের সূচনা হয়েছে ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০১ সাল থেকেই।
কম্পিউটারে বাংলা ভাষার উদ্ভাবক ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে তার দীর্ঘ ৩৫ বছরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, দেশে টেলিকম সভ্যতার মহাসড়ক আমরা তৈরি করেছি। এই মহাসড়ক দিয়েই ডিজিটাল সভ্যতা এগিয়ে যাবে।
তিনি ডিজিটাল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস ও মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের পার্থক্য তুলে ধরে বলেন, আমরা ৫জি প্রযুক্তি যুগে প্রবেশ করেছি। আজ মোবাইলে যে ফিনান্সিয়াল সার্ভিস হচ্ছে পরবর্তীতে আইওটি ডিভাইস মোবাইলের স্থান দখল করতে পারে।
মন্ত্রী প্রযুক্তির উন্নয়নের পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি ভবিষ্যতের প্রযুক্তির গতিবিধি আয়ত্ত্ব করতে না পারলে গবেষণার ফলাফল কাজে আসবে না বলে উল্লেখ করেন।
সাবেক মূখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় আইডিয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন কাজী এম আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইডিয়া ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান মনসুর, বিকাশের সিইও কামাল কাদির, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মেজবাহুল হক, সাবেক নির্বাহী পরিচালক লীলা রশিদ প্রমুখ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইডিয়া ফাউন্ডেশনের লিড রিসার্চার হোসাইন এ সামাদ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা ডিজিটার প্রযুক্তির প্রয়োগ ও ভবিষ্যত প্রযুক্তির ওপর লাগসই গবেষণার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আরও পড়ুন: ফেসবুককে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে: টেলিযোগাযোগমন্ত্রী
ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য আইপিভি-৬ ভার্সন অপরিহার্য: টেলিযোগাযোগমন্ত্রী